আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃত্যুতে যা বললেন চিকিৎসক

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৫ এএম, ২২ জানুয়ারি ২০১৯
ফাইল ছবি

অনেক দিন ধরেই হার্টের অসুখে ভুগছিলেন কিংবদন্তি সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। অবশেষে হার্ট অ্যাটাকেই জীবনের অবসান ঘটলো তার।

এই শিল্পীর ব্যক্তিগত সহকারী রোজেন বলেন, “স্যার ভোর সোয়া ৪টার দিকে বাসায়ই মারা গেছেন। তিনি নিজেই আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘তাড়াতাড়ি বাসায় আস, আমার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।’ এরপর ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে আমি স্যারের বাসায় যাই। কিন্তু কোনো পালস পাইনি। পরে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা তাকে সাড়ে ৫টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন। স্যারের সাথে কোনো কথাই বলার সুযোগ পাইনি আমি।”

এদিকে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে জানান, হার্ট অ্যাটাক হয়েই আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃত্যু হয়েছে।

এর আগে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি বুলবুলের হার্টে আটটি ব্লক ধরা পড়ে। তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বুলবুলকে দেখতে যায়।

প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেয়ার পর বুলবুলকে ভর্তি করা হয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা বুলবুলের বাইপাস সার্জারি না করে শরীরে রিং পরানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরপর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।

সে সময় রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. অধ্যাপক আফজালুর রহমানের অধীনেই বুলবুলের শরীরে দুটি স্টেন্ট (রিং) স্থাপন করা হয়।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেন। চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায়। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বুলবুল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাইফেল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রণাঙ্গনে। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ স্মৃতি বিস্মৃতি নিয়ে বহু জনপ্রিয় গান লিখেছেন এবং সুর করেছেন।

‘এই দেশ আমার সুন্দরী রাজকন্যা’, ‘আয় রে মা আয় রে’, ‘উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম’, ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘মাঝি নাও ছাইড়া দে’, ‘ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সেই রেল লাইনের ধারে’, ‘মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’- এমন বহু কালজয়ী গানের স্রষ্টা এই শিল্পী।

তিনি প্রেমের জন্য লিখেছেন, আমার সারা দেহ খেও গো মাটি, ভাড়া কইরা আনবি মানুষ, প্রেমের তাজমহলসহ আরও বহু জনপ্রিয় গান।

ব্যক্তিগত জীবনে এক সন্তানের জনক ছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তার ছেলের নাম সামির আহমেদ।

তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শোবিজে। এ শহরের ঘুম ভাঙার আগেই জেগে উঠেছে শোক।

এলএ/এমবিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।