ইত্যাদির সেই গায়ক আকবর অসুস্থ, প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য কামনা

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৬ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

পেশায় ছিলেন রিকশাচালক। রাস্তায় রিকশায় প্যাডেল মারতেন আর গেয়ে বেড়াতেন নানারকম গান। তার গায়কীতে মুগ্ধ হতেন যাত্রী, পথচারীরা। তার সুরেলা কণ্ঠের সুনাম ছড়িয়ে পড়লো চারদিকে। ডাক পেলেন তিনি দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে।

হানিফ সংকেতের হাত ধরে উঠে এলেন তিনি ‘এলাম, গাইলাম, জয় করলাম’ স্টাইলে। নন্দিত সংগীতশিল্পী কিশোর কুমারের গাওয়া ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’ গানটি ইত্যাদির মঞ্চে গেয়ে ১৫ বছর আগে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যাওয়া সেই গায়কের নাম আকবর।

তারপর ‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ গানটি প্রকাশ হয় ইত্যাদিতে। সেটিও তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করলে নিয়মিত শিল্পী বনে যান আকবর। তার জীবন যাপনেও আসে পরিবর্তন। তিনি গাইতে থাকেন দেশে-বিদেশের মঞ্চে।

হঠাৎ করেই কিডনির অসুখে আক্রান্ত হন আকবর। দেখা দেয় ডায়াবেটিসও। ছন্দপতন ঘটে জীবনের। গান গাইতে পারেন না। থেমে যায় সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী মানুষটির অর্থ যোগানের চাকা। করুণ সেই দিনগুলোতে আবারও ত্রাতা হয়ে আকবরের পাশে দাঁড়ান তার আবিষ্কারক হানিফ সংকেত।

চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে নতুন করে শুরু করেছিলেন সবকিছু। কিন্তু হায়, জীবন বেরসিক! এক বছরের ব্যবধানে আবারও পুরনো অসুখের আক্রমণের শিকার গায়ক আকবর। মিরপুর ১৩ নম্বরে ভাড়া বাড়িতে বিছানায় শুয়েই দিন কাটছে আজকাল। গান তো দূরে থাক, ঠিকমতো চলাফেরা করতেও কষ্ট হচ্ছে তার।

আজ সোমবার সকালে জাগো নিউজকে আকবর বলেন, ‘মাঝে কিছুটা সময় ভালো ছিলাম। আবার বিছানায় পড়ে গেলাম। দুই চোখে অন্ধকার দেখছি ভাই। কয়েক বছর ধরে শরীরের পেছনে টাকা ঢালতে ঢালতে সঞ্চয় বলে আর কিছুই নেই হাতে। হানিফ সংকেত স্যার কয়েক দফায় সাহায্য করেছেন। সেগুলো দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। একটা মানুষকে আর কতো বলা যায়। নিজেরই লজ্জা লাগে। উনি নিতান্তই ভালো মানুষ বলে এভাবে আমার পাশে আছেন।’

তিনি বলেন, ‘অসুখের শেষ নাই। কিডনিতে ঝামেলা। ইনফেকশন হয়েছে। রক্তেও ইনফেকশন। ডায়াবেটিস তো আছেই। গেল দুদিন ধরেই শরীর নাড়াতেই পারছি না। ব্যথায় মরে যাচ্ছি। প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে।

তবে সবাই বলছেন কিডনি রিপ্লেস করতেই হবে। দেশের বাইরে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এত টাকা কই পাবো আমি?

পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মানুষ বিছানায় পড়ে আছি। সংসারের করুণ দশা। স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যাকে নিয়ে কোনোমতে দিন পার করছি। আমি রাস্তা থেকে উঠে আসা গায়ক। আমার বড় কোনো আত্মীয় স্বজন নেই, কোনো ব্যাকআপ নেই। কার কাছে যাবো, কাকে বলবো সাহায্যের কথা বুঝি না। এমন গুণী শিল্পীও তো নই যে সরকারের কাছে সাহায্য চাইবো!’

আকবর বলছিলেন, ভালো চিকিৎসা না হলে এতসব অসুখ থেকে মুক্তি পাবেন না তিনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। প্রধামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মমতার গল্প সবখানেই শুনি। শিল্পীদের পাশে দাঁড়ান তিনি। আমার তো এমন কেউ নেই যে তার কাছে নিয়ে যাবে। আমি সুস্থ হতে চাই। আবারও গান করতে চাই।’

এলএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।