ধর্ষণ বনাম ৪০ হাজার টাকা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ধর্ষণের শিকার এক নারী গৃহকর্মীর ইজ্জতের দাম ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই নারীকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সরাইল উপজেলার নোয়াহাটি গ্রামের এক নারী তার বাবার বাড়ির পাশে গৃহকর্মীর কাজ করেন। গত ১৪ আগস্ট শুক্রবার রাতে পরিবারের সদস্যরা বাড়ির বাইরে থাকার সুযোগে গৃহকর্তা প্রবাসী স্বপন মিয়া ওই গৃহকর্মীকে হাত বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
এ সময় লোকজনকে জানিয়ে দেয়ার ভয়ে রাতেই ওই গৃহকর্মীর মুখে বিষ ঢেলে হত্যারও চেষ্টা করা হয়। পরে ওই নারীর আর্ত চিৎকারে তার বাবা ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর চিকিৎসা শেষে গত ১৮ আগস্ট ওই নারী বাড়ি ফিরে এসে পরদিন থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এদিকে, স্থানীয় কিছু দালাল আসামি স্বপন মিয়ার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন। আর এ জন্য বাদীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কয়েকবার শালিস বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি মামলা প্রত্যাহারের জন্য ওই গৃহকর্মীকে হুমকিও দেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকালে ওই গৃহকর্মীর বাড়িতে রানা মিয়া, শাহ আলম ও মোমিন নামের স্থানীয় তিন যুবক গিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। পরে বেলা ১১টায় স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মমিনুল হক ৪০ হাজার টাকা নিয়ে যান গৃহকর্মীর বাড়িতে। টাকা না নিয়ে গৃহকর্মী জানিয়ে দেয়, টাকা নয়, ইজ্জত হননের আইনি বিচার চাই।
ধর্ষণের শিকার ওই গৃহকর্মী জানান, মানুষকে মুখ দেখাতে পারছি না। আমি মামলা প্রত্যাহার করবো না। শুধু আইনি সহায়তা চাই। বিচার না পেলে আত্মহত্যা করবো বলেও হুমকি দেন তিনি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চেয়ে একাধিকবার অভিযুক্ত স্বপন মিয়ার মুঠোফোনে ফোন করে তার তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সরাইল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আজিজুল আলম সঞ্চয়/এআরএ/এমএস