আজ শাবনূরের জন্মদিন

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৩৮ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮

তার পরিচয় তিনি। তার নাম শুনলেই হৃদয়ে আসে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। নব্বই পরবর্তী বাংলা চলচ্চিত্রের সফল নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম শাবনূর। স্নিগ্ধ চেহারা, মায়াবী হাসি, চিরায়ত বাঙালি নারীর মধুমাখা চাহনি আর প্রাণবন্ত অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি খুব দ্রুতই চলচ্চিত্রে স্থায়ী আসন করে নেন।

একটা সময় ছিলো শাবনূর মানেই সুপারহিট চলচ্চিত্র। শাবনূর মানেই দর্শকের সেরা পছন্দ। ভালোবেসে অনেকেই শাবনূরকে ঢাকাই ছবির রানী বলে ডাকেন।

বর্তমানে চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকলেও বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে কথা বললে শাবনূরের নাম চলে আসে অনায়াসেই। তিনি নিজেকে ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনন্য এক অভিনেত্রী হিসেবে।

আজ নন্দিত এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। জীবনের এই বিশেষ দিনটিতে ভক্তদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন তিনি। চলচ্চিত্রের সহকর্মীরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এই শুভেচ্ছা আর ভালোবাসাকেই জীবনের সেরা অর্জন বলে মনে করেন শাবনূর।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘চলচ্চিত্রই আমাকে আজকের শাবনূর বানিয়েছে। দেশে-বিদেশে যতো নাম-সুনাম সব দিয়েছে চলচ্চিত্র। আমিও কোনোদিন আমার জানামতে চলচ্চিত্রকে ছোট করিনি, খাটো করিনি। এখনো সিনেমা ও সিনেমার মানুষ আমার কাছে সবচেয়ে আপনজন।

আর এই সিনেমার হাত ধরে মানুষের যে ভালোবাসা আমি পেয়েছি সেটাই আমার জীবনের সেরা উপহার। সবার কাছে দোয়া চাই যেন ছেলেকে নিয়ে ভালো থাকতে পারি। সবার জন্য আমিও অনেক দোয়া করি।’

পারিবারিক আয়োজনে আজ বাড়িতেই কাটবে শাবনূরের জন্মদিন। একান্তই কাছের কিছু মানুষের সঙ্গে দেখা হতে পারে। গল্প-আড্ডা আর স্মৃতিচারণে মুখর হবেন তাদের সঙ্গে।

১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে জন্মগ্রহণ করেন শাবনূর। তার পর্দার পেছনের নাম নুপুর। প্রথম চলচ্চিত্র কিংবদন্তি পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’। ১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর ‘চাঁদনী রাতে’ মুক্তি পায়। সাব্বিরের বিপরীতে অভিনীত চলচ্চিত্রটি ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হয়।

তবে শাবনূরের মুগ্ধতার ইতিহাস শুরু হয় ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জহিরুল হক পরিচালিত ‘তুমি আমার’ ছবিটি দিয়ে। সালমান শাহের সঙ্গে জুটি বেঁধে এই নায়িকা ১৪টি ছবি করেন। তার সবগুলোই রেকর্ড সংখ্যকভাবে ব্যবসায়িক সাফল্য পায়। এটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সফল জুটিগুলোর অন্যতম। বলা হয়ে থাকে সালমান-শাবনূর জুটি ইন্ডাস্ট্রির মিথ।

পরবর্তীতে এদের আদর্শ মেনেই এখানে নায়ক-নায়িকার জুটি গড়ে উঠেছে। তবে সালমানের যুগে ওমর সানী, অমিত হাসান, আমিন খান, বাপ্পারাজদের সঙ্গেও অভিনয় করে সফলতা পান শাবনূর।

সালমান মৃত্যু পরবর্তী সময়ে রিয়াজ, শাকিব খান ও ফেরদৌসসহ অনেক নায়কের সঙ্গেই অভিনয় করে সফল হন শাবনূর। তবে রিয়াজের সঙ্গে প্রায় অর্ধশত চলচ্চিত্রে জুটি বাঁধেন তিনি। এবং সবগুলো ছবিই ছিলো ব্যবসায়িকভাবে সফল এবং আলোচিত। বলা হয়ে থাকে, রিয়াজ-শাবনূর জুটির পর ঢাকাই চলচ্চিত্রে সার্বজনীনভাবে জনপ্রিয় সুপারহিট আর কোনো জুটি আসেনি।

এই জুটির ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘মোল্লাবাড়ির বউ’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘বুক ভরা ভালোবাসা’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘এ বাঁধন যাবে না ছিড়ে’, ‘মন মানে না’ ইত্যাদি ছবিগুলো মাইলফলক হয়ে আছে এদেশীয় চলচ্চিত্রে ব্যবসায়িক সাফল্যের ইতিহাসে।

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে শাবনূরের সবচেয়ে বড় অর্জন ভক্ত-দর্শকের ভালোবাসা। পাশাপাশি অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত দুই নয়নের আলো চলচ্চিত্রের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়া পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার ও সর্বাধিক ১০ বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার।

ব্যক্তি জীবনে ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী অনিক মাহমুদের সঙ্গে শাবনূরের আংটি বদল হয় এবং ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তাকে বিয়ে করেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করেন ও নাগরিকত্ব লাভ করেন। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তিনি ছেলে সন্তানের মা হন। তার ছেলের নাম আইজান নিহান।

এদিকে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘এতো প্রেম এতো মায়া’ ছবিতে শিক্ষকের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কথা দিয়েছেন শাবনূর। এই ছবির জন্য নিজেকে তৈরি করছেন শাবনূর। হয়তো শিগগিরই সাইমন-পিয়া বিপাশা জুটির ছবিটির জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন বাংলা ছবির উজ্জ্বল নক্ষত্র শাবনূর।

এলএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।