ভূপেন হাজারিকার জন্মদিন আজ

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫৩ এএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আজ ৮ সেপ্টেম্বর, ১৯২৬ সালের এইদিনে আসামে জন্মগ্রহণ করেন ভারতীয় উপমহাদেশের কিংবদন্তির কণ্ঠশিল্পী ভূপেন হাজারিকা। অত্যন্ত দরাজ গলার অধিকারী এই কণ্ঠশিল্পীর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। তার পিতার নাম নীলকান্ত হাজারিকা, মায়ের নাম শান্তিপ্রিয়া হাজারিকা। ১০ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।

ভূপেন হাজারিকা ১৯৪২ সালে গুয়াহাটির কটন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট আর্টস, কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৪ সালে বি.এ. এবং ১৯৪৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ. পাস করেন। ১৯৫২ সালে নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষায় শ্রবণ-দর্শন পদ্ধতি ব্যবহার করে ভারতের মৌলিক শিক্ষা পদ্ধতি প্রস্তুতি-সংক্রান্ত প্রস্তাব’।

মাত্র ১০ বছর বয়স থেকেই গান লেখে সুর দিতে থাকেন তিনি। আসামের চলচ্চিত্রে তার অভিষেক হয় এক শিশুশিল্পী হিসেবে। ১৯৩৯ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি অসমীয়া ভাষায় নির্মিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা পরিচালিত ইন্দুমালতী ছবিতে ‘বিশ্ববিজয় নওজোয়ান’ শিরোনামের একটি গান গেয়েছিলেন। পরে তিনি অসমীয়া চলচ্চিত্রের একজন নামজাদা পরিচালক হয়ে ওঠেন।

বাংলাদেশ, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে ভূপেন হাজারিকার জনপ্রিয়তা ছিল ব্যাপক ও বিশাল। অসমীয়া ভাষা ছাড়াও বাংলা ও হিন্দি ভাষাতেও তিনি সমান পারদর্শী ছিলেন এবং অনেক গান গেয়েছেন। অবশ্য এসব গানের অনেকগুলোই মূল অসমীয়া থেকে বাংলায় অনূদিত। তার গানে মানবপ্রেম, প্রকৃতি, ভারতীয় সমাজবাদের, জীবন-ধর্মীয় বক্তব্য বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। এছাড়াও, শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদী সুরও উচ্চারিত হয়েছে বহুবার।

সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য নেক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ১৯৭৯ সালে অল ইন্ডিয়া ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন’ পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে অসম সরকারের শঙ্করদেব পুরস্কার, ১৯৯২ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, ১৯৯৩ সালে পদ্মভূষণ, ২০০১ সালে অসম রত্ন এবং ২০০৯ সালে সঙ্গীত নাটক একাডেমি পুরস্কার।

তিনিই প্রথম ভারতীয় হিসেবে জাপানে এশিয়া প্যাসিফিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে রুদালী ছবির শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালকের পুরস্কার অর্জন।

তার গানগুলোর মধ্য ‘আজ জীবন খুঁজে পাবি, আমি এক যাযাবর, আমায় ভুল বুঝিস না, একটি রঙ্গীন চাদর, ও মালিক সারা জীবন, গঙ্গা আমার মা, প্রতিধ্বনি শুনি, বিস্তীর্ণ দুপারে, মানুষ মানুষের জন্যে, সাগর সঙ্গমে, হে দোলা হে দোলা, চোখ ছলছল করে’ ইত্যাদি খুব জনপ্রিয়।

উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই কণ্ঠশিল্পী ২০১১ সালের ৫ নভেম্বর ৮৫ বছর বয়সে মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানী হাসপাতালে মারা যান।

এমএমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।