পাবনায় হরিজন সম্প্রদায়ের যুবককে পিটিয়ে হত্যা


প্রকাশিত: ০৭:৪৭ পিএম, ০১ আগস্ট ২০১৫

পাবনায় নিয়ম ফুড লিমিটেড কারখানায় সাইকেল চুরির অভিযোগে তুলসী চন্দ্র দাস (২৩) নামে হরিজন সম্প্রদায়ের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সন্ধ্যায় নিহতের স্বজন ও কয়েকশ’ হরিজন সম্প্রদায়ের লোক শহরের শালগাড়িয়া এলাকায় পৌনে এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। তারা কারখানার মালিক ও তার ভাইয়ের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। নিহত তুলসী শহরের অন্তত এলাকার হরিজন কলোনির শাওন চন্দ্র দাসের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শহরের শালগাড়িয়া মহল্লায় অবস্থিত নিয়ম ফুড লিমিটেডের এক কর্মচারীর সাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এদিন বিকেলে কোম্পানির লোকেরা পরিচ্ছন্নতা কর্মী তুলসী চন্দ্র দাসকে বেধড়ক মারপিট করে। মারধরের এক পর্যায়ে তুলসী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর সে সেখানেই মারা যায়।

তুলসীর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে নিহতের স্বজন ও হরিজন কলোনির কয়েকশ’ বিক্ষুব্ধ বাসিন্দা হাসপাতাল সড়ক পৌনে এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। বিক্ষুব্ধরা নিয়ম ফুডের মালিক ফরহাদ হোসেন ও তার ভাইয়ের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এসময় ওই এলাকায় চরম আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে পাবনা থানার পুলিশ, ডিবি এবং র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত সাড়ে ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তুলশীর মরদেহ হাসাপাতাল মর্গে ছিল। নিয়ম ফুডের সামনে হাসাপাতাল সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা ছিল।

তুলশীর বাবা শাওন ও মা বীনা জানান, বছরখানেক আগে তুলসী নিয়ম ফুডে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাকরি নেয়। সে দু’বছর হলো বিয়ে করেছে এবং তার এক বছরের একটি সন্তান রয়েছে। বীনা জানান, শনিবার ওই কারখানায় একটি সাইকেল চুরির অভিযোগে তুলসীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। কিন্ত তুলসীর বাবা মাকে কোনো খবর না দিয়ে বিকেলে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসাপাতালে ভর্তি করে এবং সেখানেই সে মারা যায়।

পাবনা জেনারেল হাসাপাতালের জরুরি বিভাগ সুত্র জানায়, বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে তুলসীকে কয়েকজন অপরিচিত যুবক গুরুতর অবস্থায় জেনারেল হাসাপাতালে ভর্তি করে। এরপর বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে সে হাসাপাতালে মারা যায়। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকরা আরো জানান, যখন তুলসীকে ভর্তি করা হয় তখন সে ছটফট করছিল এবং বারবার পানি চাচ্ছিল।

এ ব্যাপারে নিয়ম ফুডের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কারো সঙ্গে কথা বলাও সম্ভব হয়নি। পাবনা থানার ওসি আহসানুল হক জানান, তারা এখন পর্যন্ত ক্ষুব্ধ সুইপারদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন। কেউ এখনো মামলা করতে আসেনি। শুনেছি বিক্ষুব্ধরা থানাতেও আসবে।

এদিকে হরিজন নেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিকার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

একে জামান/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।