বিশ্ববাসীকে রোহিঙ্গা শিশুদের পাশে দাঁড়াতে বললেন প্রিয়াঙ্কা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০২:২৬ পিএম, ২৪ মে ২০১৮

রোহিঙ্গাদের সমস্যা, শিশুদের স্বপ্ন নিয়ে ফেসবুক লাইভে কথা বলার সময় ভক্তদের প্রশ্ন ও নিজের উত্তরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন হলিউড ও বলিউড অভিনেত্রী এবং ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।

এ সময় রোহিঙ্গা শিশু ও নারীদের চলমান জীবনের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রিয়াঙ্কা বলেন, রোহিঙ্গা শিশুরা তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছুই জানে না। কিন্তু বাংলাদেশে আশ্রিত জীবনে এখন তারা মৌলিক শিক্ষা পাচ্ছে। তাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রায় ১৫ মিনিটের লাইভ ভিডিওতে কক্সবাজারকে বিদায় জানিয়ে ঢাকার পথে বিমানে উড়াল দেন প্রিয়াঙ্কা। মিয়ানমারের বাস্ত্যুচুত রোহিঙ্গাদের দেখতে গত ২১ মে বাংলাদেশে আসেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কক্সবাজারে অবস্থান করেছিলেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় উখিয়ার কুতুপালং থেকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে কথা বলেন প্রিয়াঙ্কা। এ সময় ভক্তকুলের নানা প্রশ্নের জবাবও দেন তিনি।

ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত প্রিয়াঙ্কা ফেসবুক লাইভে রোহিঙ্গা শিশুদের করুণ অবস্থার বিবরণ দিয়েছেন। বর্ষা মৌসুমে রোহিঙ্গাদের পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে করা ভক্তদের প্রশ্নের জবাব দেন বলিউড অভিনেত্রী। ১৪ মিনিটের সেই বক্তব্যে প্রথমেই বিশুদ্ধ পানির সংকটের কথা তুলে ধরেন তিনি।

এছাড়া শৌচাগার ও টিউবওয়েল পাশাপাশি হওয়ায় বৃষ্টিতে পানি দূষিত হচ্ছে উল্লেখ করে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত বলেন, এতে নানা রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে।

শিশুদের জন্য নির্ধারিত ক্যাম্প থেকে প্রিয়াঙ্কা বলেন, নড়বড়ে ছোট ছোট ছাউনিতে রয়েছেন রোহিঙ্গারা। বর্ষা মৌসুমে এদের জীবন শঙ্কায় রয়েছে। এদের বাঁচাতে বিশ্ববাসীকে আরও বেশি ত্রাণ ও সহযোগিতা করা দরকার।

ভক্তদের উদ্দেশে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘শিশুদের ধর্ম কী, বাবা-মা কে, এদের পরিচয় কী- এগুলো বড় বিষয় না। এখন এদের দরকার আপনার আমার সহানুভূতি।’

এক ভক্তের প্রশ্নের জবাবে বলিউড অভিনেত্রী বলেন, ‘শিশুদের আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম তোমাদের স্বপ্ন কী? তাদের সবাই বলে ওঠে, আমি স্কুলে যেতে চাই। এই শিশুরা তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছুই জানে না। কিন্তু বাংলাদেশে আশ্রিত জীবনে এখন তারা মৌলিক শিক্ষা পাচ্ছে।’

প্রিয়াঙ্কা আরও বলেন, রোহিঙ্গা শিশুদের বার্মিজ, ইংলিশ ও গণিত শেখানো হচ্ছে। তাদের সহায়তায় সবাইকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল জানান, প্রায় ১৫ মিনিট ফেসবুক লাইভের পর ৪ দিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ছেড়ে যান সাবেক এই বিশ্বসুন্দরী।

প্রসঙ্গত, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বেসরকারি একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর সড়কপথে তিনি ইনানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ওঠেন। সেখান বিকেল ৪টার দিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে এবং খোঁজখবর নিতে টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ইউনিসেফের পক্ষ হয়ে এই সফরে এসেছেন। প্রকৃতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি। এর আগে গত বছর জর্ডানে, সিরিয়ান শরণার্থী শিশুদের সঙ্গে সাক্ষাতে যান বলিউডের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।

সায়ীদ আলমগীর/এলএ/এএম/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।