আমাদের আরও দশটা মোশাররফ করিম দরকার : শাহাজাদা মামুন

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪৪ পিএম, ২৫ মার্চ ২০১৮

স্বপ্নের জায়গা মিডিয়া। এখানে সবাই প্রবেশ করেন রঙিন এক দুনিয়ার হাতছানিতে। কেউ টিকে থাকেন, কেউ বা হারিয়ে যান তাল না মেলাতে পারার হতাশা নিয়ে। একটা সময় ছিলো মিডিয়াতে পর্দার সামনের মানুষেরাই থাকতেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কিন্তু সময়ের হাতবদলে পর্দার পেছনের কারিগরেরা কেড়ে নিয়েছেন দর্শকের আগ্রহ। তারা এখন খোঁজ করেন কোনো একটি নাটকের লেখক কে, কে নির্মাণ করছেন। স্বভাবতই আজকাল তারকা খ্যাতি লাগছে পর্দার পেছনের মানুষদের নামের শেষেও।

তবে গড়পড়তা কাজে খ্যাতির চেয়ে মানুষের মনে দাগ কেটে দেয়া নির্মাণকে প্রাধান্য দিয়েই কাজ করে যাওয়া নির্মাতার নাম শাহাজাদা মামুন। তিনি নাটক রচনাও করেন। দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত থিয়েটারের সঙ্গে। নাটক নির্মাণকে বেছ নিয়েছেন নিজের কাজের তৃপ্তির উপায়। ২০০৭ সালে ‘অবশেষে’ নামের নাটক বাংলাভিশনে প্রচারের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে শুরু তার। চলছে এখনো মুগ্ধতার পথচলা। বর্তমানে প্রচার হচ্ছে তার রচনা ও পরিচালনায় ধারাবাহিক নাটক। আসছে ঈদকে কেন্দ্র করে তৈরি হচ্ছেন বেশ কিছু খণ্ড নাটক নির্মাণেও। হঠাৎ দেখার এক আড্ডায় এই মেধাবী, ভিন্ন ভাবনার নির্মাতা জাগো নিউজকে জানালেন টিভি মিডিয়ায় সমসাময়িক সমস্যা, সম্ভাবনার অনেক কথা। লিখেছেন লিমন আহমেদ......

অনেক কিছুই করার সুযোগ ছিলো। নাটক নির্মাণে কেন এলেন?
শাহাজাদা মামুন : মিডিয়ার প্রতি সবসময় একটা ভালোবাসা কাজ করে। হয়তো অনেক কিছুই করতে পারতাম। কিন্তু নানা অস্থিরতার মধ্যেও এই শোবিজে কাজ করে যে তৃপ্তিটা আমি পাই সেটা পেতাম না। দেখুন, একজন প্রেমিক তার ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখতে অনেক কিছুই করে। অনেক কিছু ত্যাগও করে। আমি মিডিয়ার জন্য তাই করে চলেছি। এখানে যে খেয়ে পড়ে বাঁচতে হবে সেটা মূখ্য নয়। ভালোবাসাটাই আসল। তাই আমার কোনো প্রতিযোগী নেই, প্রতিদ্বন্দ্বীও নেই। মানুষ ও চারপাশ নিয়ে নিজের যা ভালো লাগছে তাই ভাবছি, সেই ভাবনা নিজের নির্মাণে তুলে আনছি।

নাটক নির্মাণের পাশাপাশি চিত্রনাট্যও করে থাকেন। আপনার কী মনে হয় একজনই চিত্রনাট্যকার ও নির্মাতা হলে বিশেষ কোনো সুবিধা আছে?
শাহাজাদা মামুন : সুবিধা এটুকুই নির্মাতা নিজের ভাবনাগুলোকে নিজের মতো করে বাস্তবায়ন করতে পারেন। যা ভাবছেন সেটাই পর্দায় তুলে ধরতে পারেন। তবে তার মানে এই কিন্তু নয় যে নাটক লেখা ও নির্মাণে একজন ব্যক্তি থাকলেই সেটি আদর্শ কিছু হবে। কারণ একটি ভালো নির্মাণ সবসময়ই নির্ভর করে একজন নির্মাতার মেধা ও নির্মাণের স্মাার্টনিটির উপর। আর যে কোনো ভালো কাজে টিমওয়ার্কের বিকল্প নেই। সম্মিলিত প্রচেষ্টা যা পাবেন একক চেষ্টায় কখনোই সেটা আসবে না।

একটি ভালো নির্মাণে অভিনয়শিল্পীদের গুরুত্বটাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
শাহাজাদা মামুন : একটি ভালো নির্মাণ হয় ভালো নির্মাতার জন্যই। তবে আমি মনে করি একটি নাটক দুইবার লেখা হয়। প্রথম লেখেন নাট্যকার, তিনি যা ভাবেন। এরপর সেই নাটকটি আবার লেখা হয় অভিনয়শিল্পীদের কালিতে। তারা যেভাবে নিজেদের মেলে ধরবেন নাটকটি সেভাবেই দর্শকের কাছে উপস্থাপিত হবে। তাই দক্ষ অভিনয়শিল্পীর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দেশে অভিজ্ঞতার মূল্যায়ণটা কম। এখানে গ্ল্যামারই সব। তাই আফসোস করতে হয় বিপাশা হায়াত, শমী কায়সার, আফসানা মিমি, তারিনদের মতো অভিনেত্রীদের অভিনয় না দেখতে পারার অভাবে। তারা বহু বছর আগেই দুর্দান্ত সব কাজ উপহার দিয়েছেন। কিন্তু এখন নেই। কেন? তারা কী অভিনয় ভুলে গেছেন? মোটেও তা নয়। এখানে সমস্যাটা ভিন্ন।

আপনার দৃষ্টিতে কী সেই সমস্যা?
শাহাজাদা মামুন : সমস্যা বিস্তর। প্রথমত চ্যানেলের চাহিদা থাকছে নতুনদের ঘিরে। তারা অভিনয়ের দক্ষতার চেয়ে চকচকে উপস্থিতিটাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। ফলস্বরুপ প্রযোজক ও নির্মাতারাও সেইভাবে ভাবছে। নাট্যকারও তার গল্পের চরিত্রগুলো চ্যানেল চাহিদা মাথায় রেখেই করছে। আবার অনেক সময় চ্যানেল মালিক, নির্মাতা-প্রযোজকদের স্বজনপ্রিতীর কারণেও এমনটা হচ্ছে। ভালো শিল্পীদের নিয়ে একটি ভালো নাটক বানাতে খরচ বেশি হয়। এটাও একটা কারণ। আপনি আমি চ্যানেলকে যতোই দোষ নেই তাতে লাভ কিছু নেই। কারণ চ্যানেল এসছে ব্যবসা করতে, সে ব্যবসাটাকেই প্রাধান্য দেবে। শিল্প তার কাছে মুখ্য নয়। যা কিছু তারা দেখায় তা শো আপ। কারণ আপনি হিসেব করে দেখুন আমাদের দেশের ৯৯ ভাগ চ্যানেলের মালিক হয় ব্যবসায়ী নয়তো রাজনীতিবিদ। তারা কেউই সমাজসেবা করতে আসেননি। যতোই শিল্প শিল্প বলে মুখে ফেনা তুলুক না কেন, শিল্পচর্চা তাদের কাছে শখের; ব্যবসায়ের অনুষঙ্গ মাত্র। আবার শিল্পী নির্বাচনের ক্ষেত্রে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের নাক গলানোটাও একটা প্রতিবন্ধকতা ভালো শিল্পীদের কাজের বেলায়। আমি নির্মাতা হয়তো ভাবছি একটি চরিত্রের জন্য মাধুরীকে দরকার, কিন্তু চ্যানেল বলে দিচ্ছে এখানে ক্যাটরিনাকে নেন। ওকে না নিলে নাটক চলবে না। স্বাভাবিকভাবেই আমার নির্মাণের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়। সেইসঙ্গে দক্ষ অভিনয় থেকে বঞ্চিত হয় নাটক।

পর্দায় জুটি প্রথা খুব জনপ্রিয়। কিন্তু পর্দার বাইরে জুটি খুব একটা দেখা যায় না। আমি নাট্যকার-পরিচালক জুটির কথা বলছি। এক্ষেত্রে জুটি হলে নাটক-টেলিছবিতে কোনো বাড়তি সুবিধা হতো বলে মনে করেন আপনি?
শাহাজাদা মামুন : হতে পারতো। কারণ এর আগে আমাদের এখানে বেশ কয়েকটি জুটি কিন্তু গড়ে উঠেছে নাট্যকার ও নাট্যনির্মাতাদের মধ্যে। সেগুলো তাদের নাটকের মতোই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। অনেকক্ষেত্রে আমি বলবো জুটিগুলো ব্র্যান্ডও হয়েছে। দর্শক অমুকদের নাটক জেনেই উত্তেজিত হয়ে টিভি খুলে বসেছেন ভালো নির্মাণ দেখবেন সেই বিশ্বাসে। এখানে জুটি হলে সুবিধা হলো গল্প ভাবনা ও এটিকে পর্দায় তুলে ধরার মুন্সিয়ানাটা দুজন মিলে করতে পারেন। একজন নাট্যকার যদি বুঝতে পারেন আমি নির্মাণের বেলাতে কী কী বিষয় প্রাধান্য দেই তবে সেই নাট্যকারের নাটকটি আমি অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই ভালো বানাবো। এখানে দুজনের চিন্তার মিলন ঘটে। কারণ নাট্যকার যে ভাবনা নিয়ে নাটক লেখেন এর বাইরে গিয়ে সেটি নির্মিত হলে ভাবনা ও ম্যাসেজে মার খেতে পারে। দর্শক নাটকের মূল বিষয় থেকে সরে গিয়ে অন্য কিছুকে মূল করে দেখতে পারে। তখন সেটি হবে পরিচালকের ব্যার্থতা। কারণ, কোনো কাজ ভালো হলে এর ফল সবাই পায়। তবে কাজ মন্দ হলে সমালোচনার ভাগটা পরিচালককে একাই বহন করতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।

বর্তমানে নাটকের মান নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়। এক্ষেত্রে আপনার ভাবনা কী?
শাহাজাদা মামুন : এই বিষয়ে প্রথমেই আমি বলতে চাই, আমি একজন গর্বিত নির্মাতা যে এদেশের নাট্যাঙ্গনে নাটক নির্মাণ করতে পারছি। কারণ, এত চমৎকার নাটক আর কোথাও বানানোর সুযোগ নেই। আমাদের নাটক সেরা ছিলো, আছে এবং থাকবে। অস্থিরতা সবখানেই থাকে। আমাদের এখানেও আছে। ভালো কাজগুলো ঠিক ততোটা আলোচনা পায় না তুলনামূলক কম ভালো নাটকগুলো যে প্রচার পায়। তাই সবার মুখে মুখে চলছে- নাটক ভালো হচ্ছে না। কিন্তু টিভি রিপোর্ট বা ইউটিউব চ্যানেলগুলোর রিপোর্ট কিন্তু বলছে যে নাটক ভালো হচ্ছে। কারণ দর্শক নাটক দেখছে। প্রতি মাসেই দুই-তিনটি নাটক প্রশংসিত হচ্ছে। এখন সময়টা অস্থির। খুব বেশিদিন কোনো ভালো লাগাই টিকে থাকছে না। আজকের ভালো লাগায় আগামীকাল ক্লান্তি আসছে। তাই কোনো কিছুই কালজয়ী হবে বলে মনে হচ্ছে না। কিন্তু ভবিষ্যতে আজকের প্রশংসিত কাজগুলোই কালের স্রোতে স্থান পেয়ে যেতে পারে। তবে নাটকের মান উন্নয়নের অনেক সুযোগ আছে। সেজন্য অনেক কিছুর পরির্বতন ও ভাবনা প্রয়োজন।

যেমন.....?
শাহাজাদা মামুন : যেমন গল্পের ভাবনায় করপোরেট জীবনযাপন ঢুকে গেছে। দিবসভিত্তিক নাটকগুলো দেখুন- সব করপোরেট চিন্তা চেতনার। সহজ ভাষায় মনকে ছুঁয়ে যাবে এমন কিছু নেই। ভালোবাসা দিবস নিয়ে টিভি চ্যানেল ও নির্মাতারা যতো সিরিয়াস ঠিক ততোটাই বেখেয়ালী ভাষার মাস নিয়ে, স্বাধীনতা দিবস নিয়ে। এইসব জাতিগত-ইতিহাসভিত্তিক দিবসগুলোকে কেন্দ্র করে বৈচিত্রময় নির্মাণ হচ্ছে না। আর ভালোবাসা দিবস মানে কী শুধু টিএনএজ প্রেম? গ্ল্যামারের ঝলকানি? মোটেও না। কিন্তু চ্যানেলে চ্যানেলে তাই হচ্ছে। এই দিবস আসার দুই মাস আগে থেকে শুরু হয় হাঁকডাক। পরিচালকদের ডেকে করপোরেট ফরমায়েশ অর্ডার দিয়ে দেয়া হয়। একই চেহারার, একই বয়সের, একই গল্পের নাটক সব চ্যানেলে। দর্শক কেন নেবে? ভালোবাসার বৈচিত্রতা বিশাল। আমাদের ভাবনা বিস্তৃত করতে হবে। ফরমায়েশি কাজে আটকে না রেখে নাট্যকার ও নাট্য নির্মাতাকে কাজ করার স্বাধীনতা দিতে হবে। তবেই ভালো কাজ আসবে।

গল্পে গল্পে জীবনের ক্রাইসিস, বাঙালিয়ানা, জাতিগত বোধ তুলে আনতে হবে। লুটোপুটি প্রেম আর স্বস্তা আবেগের কিছু কাজ আমাদের জীবনযাপনের প্রতিনিধিত্ব করে না। বাংলাদেশের মানুষের যেভাবে বেঁচে থাকা, যেভাবে আমরা ভালোবাসি নিত্যদিন সেভাবেই দেখাতে হবে। আর এজন্য চ্যানেলগুলোকে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। স্বজনপ্রীতি, তোষামোদি মনোভাব ছাড়তে হবে। নির্মাণের স্বাধীনতা পরিচালককে দিতে হবে। প্রতিটি বিভাগের মানুষদেরই পড়াশোনার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। নিজের ভেতরে সততা রাখতে হবে। ইমেজ তৈরি করতে হবে শিল্পীদের। ভালো কাজের সর্বোচ্চ চেষ্টা রাখতে হবে।

অনেকে বাজেটকেও নাটকের অন্তরায় হিসেবে দেখে। আপনি কী বলবেন?
শাহাজাদা মামুন : চ্যানেলগুলোতে তোষামোদি ও স্বজনপ্রীতি না থাকলেই বাজেট বাড়বে। বাজেট বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এখনো কিন্তু অনেকেই বিশাল বাজেটে নাটক নির্মাণ করছেন। আমি নিজেও কিন্তু ভালো বাজেটে কাজ করি। কারণ, বাজেট ঠিক মতো না হলে কাজের মানের সঙ্গে আপোষ করতে হবে। সেটা আমি কখনোই করবো না। বাজেট নিয়ে এই ঝামেলটা তৈরি করেছেন নির্মাতারাই। যারা তোষামোদি করে চ্যানেল থেকে কম বাজেটের নাটক নির্মাণের সুযোগ নেয়ার প্রতিযোগিতায় মেতেছেন। এ বলছে দেড় লাখে বানাতে পারবো, ও বলছে ১ লাখ বিশে হবে। এবং হচ্ছেও। ধারাবাহিকের প্রতি পর্ব ৫০ হাজারেও বানাচ্ছেন অনেকে। কী করে সেটা সম্ভব? ঠিক তখনই সম্ভব যখন আপনি মানের দিকটা ছাড় দেবেন। কিন্তু লাভ কী অহেতুক কাজ করে। এইসব কাজ কেউ মনে রাখে না।

চ্যানেলগুলো চাইলেই সব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাদের সদিচ্ছাতেই বড় বাজেটে মানসম্পন্ন নির্মাণ করেও ব্যবসাতে মুনাফা করা সম্ভব। একুশে টিভি একসময় টেলিফিল্মে ৬ লাখ টাকা দিতো, প্যাকেজ নাটকে দিতো ৩ লাখ। এখন আগের চেয়ে ব্যবসায়ের ক্ষেত্র বেড়েছে, কিন্তু নির্মাণের বাজেট বাড়েনি। বরং কমেছে। কেন? সততা, ইচ্ছে ও নিয়ন্ত্রণের অভাব। আমাদের কোনো চ্যানেলই স্বাধীন নয়। কারো না কারো দ্বারা প্রভাবিত।

এক্ষেত্রে বিটিভি হতে পারতো সফল উদাহরণ। কারণ এটি রাষ্ট্রায়ত্ত চ্যানেল। এখানে দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সবারই সুযোগ পাবার কথা ছিলো। কিন্তু হচ্ছে না। প্যাকেজ নির্মাণে স্বাধীন হলে বিটিভি দিয়েই আমরা দর্শককে মাতিয়ে রাখতে পারতাম। বিটিভিও অনেক মুনাফা পেত, নিজেদের মানোন্নয়ন করতে পারতো। কিন্তু বিটিভি করছে উল্টোটা। ইনহাউজ নাটক-অনুষ্ঠান বানাচ্ছে নিজেদের লোক দিয়ে। এতে করে একই সেট, সোফা, অভিনয়শিল্পী দেখে দেখে ক্লান্ত দর্শক। কিন্তু বিটিভির বাজেট ভালো ছিলো। পরিচালকদের নির্মাণে স্বাধীনতা দিলেই চ্যানেলটি আগের মতো দর্শকপ্রিয় হতে পারতো।

নাটক এখন টিভির চেয়ে ইউটিউবেই বেশি দেখা হচ্ছে, এখানেই আলোচনা হচ্ছে। আগে ইউটিউব ব্যক্তি মালাকানাধীন হলেও আজকাল টিভি চ্যানেলগুলোও ইউটিউবে ঝুঁকছে। এ নিয়ে একজন নির্মাতা হিসেবে আপনার কী মূল্যায়ণ?
শাহাজাদা মামুন : সবটাই সময়ের দাবি। তবে ইউটিউবের ভিউ কখনোই নাটকের মানকে ধারণ করে না। ইউটিউবে বেশিরভাগ সময়ই হুজুগে ভিউ পড়ে। একজন অখ্যাত শিল্পী ‘টাঙ্কি ছেদা’ শিরোনামের গান দিয়ে এক সপ্তাহেই এক কোটি ভিউ পেতে পারেন। তাই বলে তিনি আব্দুল হাদী বা জেমস-আইয়ূব বাচ্চুর মতো মানের গান করেন না নিশ্চয়ই। কিন্তু যেহেতু ইউটিউবে ব্যবসায়ের স্বাদ পেয়ে গেছেন সবাই তাই মান না ভেবে স্বস্তা বিষয়ের নাটকের সংখ্যা বাড়াচ্ছেন। এটাই হুমকির। ভালো কাজ করার আগেই বুস্ট করার প্রবণতা তৈরি হয়ে গেছে আমাদের। এটাও হুমকির।

আবারও আপনার ব্যক্তিগত বিষয়ে ফিরতে চাই। আপনার বর্তমান কাজগুলো নিয়ে বলুন…..
শাহাজাদা মামুন : চ্যানেল আইতে প্রতি সপ্তাহের শনি ও রবিবার রাত ৮টায় এটি প্রচার হচ্ছে আমার নির্মিত মেগাধারাবাহিক ‘শুকনো পাতার নূপুর’। এটি বেশ আলোচনায় এসেছে এরইমধ্যে। চ্যানেলও নাটকটি নিয়ে সন্তুষ্ট। এতে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর ও আরও অনেকে। নতুন করে শুরু করতে যাচ্ছি ধারাবাহিক ‘হিমশিম’। এখানে মোশাররফ করিম, শবনম ফারিয়াসহ আরও অনেক তারকাকে দেখা যাবে। ঈদ উপলক্ষে কিছু খন্ড নাটক নির্মাণ করবো।

আপনার অধিকাংশ কাজগুলোতেই মোশাররফ করিমকে দেখা যায় কেন?
শাহাজাদা মামুন : কারণ বিশেষ কিছু নয়। আমার কাছে ভার্সেটাইল অভিনেতা মোশাররফ করিম। তিনি অভিনয়ে খবু দক্ষ। দর্শকের পালস বুঝতে পারেন খুব সহজেই। আমাদের আরও দশটা মোশাররফ করিম দরকার। যারা চরিত্রের সঙ্গে মিশে যেতে পারবেন। অনেক অভিনেতাই আছেন আমাদের। কিন্তু অপেশাদারীত্ব, অর্থের লোভ, নিজেকে বিরাট তারকা ভাবার প্রবণতা তাদের মোশাররফ করিমের চেয়ে পিছিয়ে রেখেছে।

সিনেমা নির্মাণের পরিকল্পনা নেই?
শাহাজাদা মামুন : অবশ্যই। প্রতিটি নির্মাতাই নিজেকে একজন সিনেমা নির্মাতা হিসেবে দেখতে চায়। আমিও চাই। পাণ্ডুলিপি রেডি আছে। নামও রেডি; ‘হৃদয়ের বাইপাসে’। আগামী বছর ছবিটি নির্মাণে হাত দিতে চাই।

আপনাকে অভিনন্দন…..
শাহাজাদা মামুন : আপনাকে ধন্যবাদ। জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য শুভেচ্ছা……

এলএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।