হাজি প্রতিস্থাপনের অনুমতি দিবে না ধর্ম মন্ত্রণালয়


প্রকাশিত: ১১:৩৭ এএম, ১৫ জুলাই ২০১৫

চলতি বছর কোনো হজ এজেন্সিকে তালিকাভুক্ত হাজির পরিবর্তে অন্য কাউকে (প্রতিস্থাপন) হজে পাঠানোর অনুমতি দিবে না ধর্ম মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার সকল হজ এজেন্সিকে দেয়া এক চিঠিতে হজযাত্রী প্রতিস্থাপনে হজ অফিসের কোনো এখতিয়ার নেই উল্লেখ করে তাদের কাছে আবেদন জমা না দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পরিচালক (হজ) ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল।

ওই চিঠিতে বলা হয়, হজ প্যাকেজ ২০১৫ এর ৩ দশমিক ২৪ ও জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি অনুচ্ছেদ ৭ দশমিক ৪ মোতাবেক মোয়াল্লেম ফি জমাদানকারী হজ যাত্রীদের নামের মূল তালিকায় বর্হিভূত কোন  ব্যক্তিকে প্রতিস্থাপন করার এখতিয়ার নেই।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আকস্মিক মৃত্যু, গুরুতর শারিরিক অসুস্থতা ও দুর্ঘটনাজনিতসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে প্রতি বছরই বিভিন্ন হজ এজেন্সি হাজি রিপ্লেসমেন্টের জন্য আবেদন করে থাকে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আবেদনপত্রগুলো যাচাই বাছাই করে একজনের পরিবর্তে অন্য হাজিকে হজ করার অনুমতি প্রদান করে থাকে।

গতবছর প্রায় আড়াই সহস্রাধিক তালিকাভুক্ত হাজির বদলে অন্য হাজিকে হজে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। অভিযোগ রয়েছে, প্রতি বছরই এক শ্রেণির হজ এজেন্সি বিভিন্ন ব্যক্তির নামে হজের টাকা জমা দেয়। পরবর্তীকালে অসুস্থতার ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দিয়ে হাজি প্রতিস্থাপন করার অনুমতি গ্রহণ করে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক শ্রেণির অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে বিভিন্ন  হজ এজেন্সি প্রতিস্থাপিত হাজিকে হজে পাঠানোর নামে মানব পাচার করে। এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনার বাস্তব অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মমন্ত্রণালয় এবার হজ প্যাকেজ ও নীতিমালায় হাজি প্রতিস্থাপন করা যাবে না বলে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। বর্তমান পরিচালক (হজ) ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল অতীতের মানবপাচারের  পুনরাবৃত্তিরোধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।

বুধবার দুপুরে হজ এজেন্সিজ অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি ইব্রাহিম বাহারের কাছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলতি বছর সৌদি সরকার সম্পুর্ণ ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে অনলাইনে ভিসা প্রদান করবে। এ ক্ষেত্রে হাজি প্রতিস্থাপনের সুযোগ কতটুকু থাকবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

তিনি জানান, প্রতি বছরই হজে টাকা জমা দেয়ার পর জমাদানকারি হাজির আকস্মিক মৃত্যু কিংবা অপ্রত্যাশিত শারিরিক অসুস্থতার কারণে হজে যেতে পারেন না। এ সময় তারা সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির মাধ্যমে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে ওই হাজির বদলে অন্য কোন ব্যক্তিকে হজে পাঠানোর আবেদন করে থাকেন। প্রয়োজনীয় যাচাই বাছাইয়ের পর সন্তুষ্ট হলে তবেই হাজি প্রতিস্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, অন্যান্যবারের চেয়ে চলতি বছর ভিসা দেয়ার প্রক্রিয়া ভিন্ন। গত বছর পর্যন্ত হাতে লিখা পাসপোর্টে ভিসা পাওয়া গেলেও এবার এমআরপি পাসপোর্ট ছাড়া অনলাইনে কোন প্রকার ভিসা দেয়া হবে না।

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ১ হাজার ৭শ` ৫৮ জন হজে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন। তন্মধ্যে সরকারি ভাবে ১০ হাজার ও বেসরকারি ভাবে ৯১ হাজার ৭শ’ ৫৮ জন যাবেন। ধর্মমন্ত্রী সম্প্রতি সংসদে জানিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে অতিরিক্ত আরো কয়েক হাজার হাজিকে হজে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি সরকার।

এমইউ/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।