সুরের মোহে জেগে থাকে রজনী

সায়েম সাবু
সায়েম সাবু সায়েম সাবু , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:০২ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭
ছবি: মাহবুব আলম

আষাঢ়ে দিনের গম্ভীর আকাশ। নদীর ঢেউয়েরা আঁচড়ে পড়ছে তীরে তীরে। সে তীর ঘেঁষে বাঁশ বাগান। বাঁশের ঝরা পাতারা ঢলে ঢলে পড়ে ঢেউয়ে মিলে যাচ্ছে। মঞ্চের পেছনে স্কিনের রূপ এটি।

আর মঞ্চে তখন রাগ ঝিঁঝোটিতে আলাপ, জোড়, ঝালা ও গৎ-এর খেলা। রাগে রাগে মন গিয়ে মিলছে স্কিনে ভেসে থাকা নদীর জলে। রজনীর মধ্যবেলা পেরুয়নি তখনও। সঙ্গীতপ্রেমীদের ঠিকানা মিলছে রাজধানীর আবহানী মাঠে।

bengol

রাত দশটা নাগাদ মঞ্চে আসেন প্রখ্যাত সন্তুর শিল্পী পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা। তিনি পরিবেশন করেন রাগ ঝিঁঝোটিতে আলাপ, জোড়, ঝালা ও গৎ। তার সঙ্গে তবলায় ছিলেন যোগেশ শামসি, তানপুরায় ছিলেন তাকাহিরো আরাই। পাকা অথচ বাবরি চুলে দুলে দুলে সন্তুর বাজিয়ে প্রেম দিতে থাকলেন মধ্যরাত পর্যন্ত। সুরের ঢেউয়ে হারিয়ে রইল আবাহানী মাঠ।

bengol

পাঁচ দিনব্যাপী বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের দ্বিতীয় দিনের আয়োজনের শুরুতেই কত্থক নৃত্য পরিবেশন করে অদিতি মঙ্গলদাস ড্যান্স কোম্পানি-দৃষ্টিকোণ ড্যান্স ফাউন্ডেশন। উৎসব, প্রিয়তমের খোঁজে এবং তারানা এই তিন পর্বে নৃত্য পরিবেশন করেন অদিতি নৃত্যাংশে ছিলেন অদিতি মঙ্গলদাস, গৌরী দিবাকর, মিনহাজ, আম্রপালি ভাণ্ডারী, অঞ্জনা কুমারী, মনোজ কুমার, সানি শিশোদিয়া। শিল্পীদের মন হরণ করা নৃত্যে মনে কুঞ্জে উত্তাপ বইতে থাকে সন্ধ্যার পর থেকেই।

bengol

অদিতির পর সুরেশ তলওয়ালকরের পরিচালনায় তবলা পরিবেশন করে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবলা দলে ছিলেন প্রশান্ত ভৌমিক, সুপান্থ মজুমদার, এম জে জেসাস ভুবন, ফাহমিদা নাজনিন, নুসরাত-ই-জাহান এবং শ্রেষ্ঠা প্রিয়দর্শিনী। তারা রাগ কিরওয়ানি নাগমায় তিন তালে কম্পোজিশন পরিবেশন করেন উম্মাদ বনে দেয় শ্রোতাদের।

bengol

তবলা পরিবেশনের পরেই সন্তুরে রাতের রূপ রাঙান পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা। এরপর খেয়াল পরিবেশন করেন পণ্ডিত উলহাস কশলকর। প্রথমে তিনি পরিবেশন করেন রাগ যোগকোষ, পরে গেয়েছেন সোহিনী রাগ। তার সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন সুরেশ তলওয়ালকার।

আর সেতারে ওস্তাদ শাহিদ পারভেজ খাঁ তো রাতের রাগিনীকে জাগিয়ে রাখলেন। তার সঙ্গে তবলায় ঝড় তুললেন অভিজিৎ ব্যানার্জি। ওস্তাদ শাহিদ পারভেজ খাঁ শ্রোতাদের শোনান বাগেশ্রী রাগ।

bengol

নাচ, তবলা, সন্তুর আর ধ্রুপদির রাগে রাগে রাতের প্রায় শেষবেলা তখন। ঘড়ির কাঁটা চারটা ছুঁইতে যাচ্ছে। অমন মধুলগ্লেই আড়বাঁশি হাতে মঞ্চে আসেন পণ্ডিত রণু মজুমদার। তাতে সঙ্গ দেন পণ্ডিত দেব জ্যোতি বোস (সরোদ) পণ্ডিত যোগেশ সামসি (তবলা) এবং পণ্ডিত অভিজিৎ ব্যানার্জি (তবলা)। প্রায় দুই ঘণ্টার ঝড়োসুর। চার পণ্ডিতের সুর প্রেমে মাতাল বনে গেলেন শ্রোতারা।

এএসএস/এমআরএম/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।