ভারী বর্ষণে পানিবন্দী বাগেরহাটের মানুষ : ত্রাণ সামগ্রীর দাবি


প্রকাশিত: ০৫:৩৩ এএম, ১১ জুলাই ২০১৫

উপকূল জুড়ে গত চার দিনের ভারী বর্ষণে বাগেরহাট পৌরসভাসহ অধিকাংশ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতার শিকার মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এছাড়া মৎস্য ঘের, পুকুর ও নদী-নালার পানি উপচে পড়ে একাকার হয়ে গেছে।

রোজায় নিম্ন আয়ের মানুষরা কোনো সাহায্য-সহযোগিতা না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ঘরের মেঝে ও রান্নাঘরে পানি ঢুকে পড়ায় পানিবন্দী মানুষগুলোকে না খেয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। অনেকের পানের বরাজ ও ফসলি জমিতে জলবদ্ধতার শিকার হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছেন। অনেক কৃষকের আমন ধানের বীজ জমিতে বুনতে না পারায় সেগুলো বাড়িতেই নষ্ট হচ্ছে। বিভিন্ন সবজি, আউশ ধান ও পানের বরজে বৃষ্টির পানি জমে আছে। কৃষকরা বৃষ্টির পানির কারণে তাদের বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা করছেন। লাগাতার বৃষ্টিপাতে বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

bagerhat

বাগেরহাট শহরের নাগেরবাজার, বাসাবাটি, খারদ্বার, পুরাতনবাজার, হাড়িখালী, মিঠাপুকুরপাড় এবং সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের সিংড়াই দেয়ালবাটি, পাটরপাড়া, রনজিয়পুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু পানি জমে আছে। অনেকের বাড়িঘরের মধ্যে পানি ঢুকে পড়েছে। পানির কারণে সিংড়াই মল্লিকা পাড়া থেকে কেউ কেউ বাড়ি-ঘর ফেলে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ও কয়েকটি অফিসের মধ্যেও বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়েছে। কয়েক হাজার মানুষ মঙ্গলবার থেকে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। নদী-খাল দখল, পলিমাটি জমে ভরাট এবং অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা কারণে দ্রুত বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় ওই জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

বাগেরহাট সদর উপজেলার সিংড়া গ্রামের দিনমজুর সুজনের স্ত্রী সনিয়া বেগম জাগো নিউজকে বলেন, গত চারদিন ধরে চুলা জলছে না। রোজায় ছেলে মেয়ে নিয়ে কোনোমতে খাটের উপরে রাত কাটছে। ঘুম নেই খাওয়া নেই এ কোন দূর্বিসহ জীবন-যাপন!

bagerhat

আরেক বাসিন্দা আ. মজিদ জাগো নিউজকে বলেন, জীবনের এই প্রথম দেখলাম আমাদের গ্রামে বৃষ্টির পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। পানি নামতে না পারায় আমাদের রান্না-বান্না খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। প্রভাবশালীরা মাছ চাষের নামে স্লুইজ গেট আটকে দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছেন। তাড়াতাড়ি গেটটি খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।

এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বাগেরহাট সদরের সাংসদ অ্যাডভোকেট মীর শওকত আলী বাদশা জাগো নিউজকে বলেন, পৌরসভাসহ সদর উপজেলার জলাবদ্ধতার শিকার এলাকাবাসীদের দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা করতে দখল করা সরকারি খাল ও স্লুইজ গেট খুলে দিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

শওকত আলী বাবু/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।