দক্ষিণ আফ্রিকার সহজ জয়


প্রকাশিত: ০৫:২১ পিএম, ১০ জুলাই ২০১৫

কাগিসো রাবাদার দুর্দান্ত বোলিং এবং ফাফ ডু প্লেসিসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে আট উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অভিষেকে রেকর্ড গড়া বোলিংয়ে বাংলাদেশকে শুরু থেকেই চেপে ধরেন রাদাবা।

শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দেওয়া ১৬১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩১.১ বলেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বল্প রানের পুঁজি নিয়ে দলের পক্ষে প্রথম আঘাত হানেন অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা। ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ ওভারে বাংলাদেশের অধিনায়ক প্রতিপক্ষের অধিনায়ক হাসিম আমলাকে (১৪) মাহমুদউল্লাহ ক্যাচে পরিণত করে স্বাগতিকদের উল্লাসে মাতান। এরপর ১৪তম ওভারে আরেক ওপেনার ডি কককে তামিম ইকবালের ক্যাচে পরিণত করে সাজঘরে ফেরান অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। আউট হবার আগে ৪১ বলে ৫টি চারে ৩৫ রান করেন সফরকারি দলের এই ব্যাটসম্যান।

ককের বিদায়ের পর রিলে রুশোকে নিয়ে প্রোটিয়াদের টি২০ অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস বাকি কাজ সারেন। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে সহজ জয় পায় সফরকারীরা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে এই দুই ব্যাটসম্যান ৯৮ রান যোগ করেন। ফাফ ডু প্লেসিস ৭৪ বলে ৭টি চারের সাহায্যে করেন ৬৩* রান। ৫৩ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৪৫* রান করেন রিলে রুশো।

বাংলাদেশের পক্ষে মাশরাফি এবং নাসির একটি করে উইকেট নেন।

এর আগে রাবাদার বোলিং তোপে পড়ে মাত্র ১৬১ রানের লক্ষ্য দিতে পারে বাংলাদেশ। ১৬ রানে ছয় উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেন এই প্রোটিয়া পেসার।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। টাইগারদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় মাত্র ১৩৯ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। সাকিব আল হাসান এবং শেষ দিকে নাসির হোসেন ছাড়া কেউ উইকেটে থিতু হতে পারেননি।

শুরু থেকেই একেরপর এক উইকেট হারিয়ে রীতিমত কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। পেসারদের পাশাপাশি স্পিনারদের খেলতেও হিমশিম খায় বাংলাদেশ।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারে রাবাদা হ্যাট্রিক করেন। চতুর্থ এবং পঞ্চম বলে তামিম ইকবাল এবং লিটন দাসকে বোল্ড করেন এই প্রোটিয়া বোলার। শেষ বলে মাহমুদউল্লাহকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে অভিষেক ম্যাচেই হ্যাট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন রাবাদা।

অভিষেকে হ্যাট্রিক করার একমাত্র কৃতিত্ব ছিল বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলামের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনি এই গৌরব অর্জন করেছিলেন।

রাবাদা করা অষ্টম ওভারে সৌম্য সরকারকে কভারে ডুমিনির হাতে সহজ ক্যাচ পরিণত করে সাজঘরে ফেরান। ২৭ বলে চারটি চারে ২৭ রান করেন সৌম্য।  

৪০ রানে চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ দুই অভিজ্ঞ কাণ্ডারি সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে প্রাথমিক চাপ সামলে নেন। তবে দলীয় ৯৩ রানে ডুমিনির বলে ইমরান তাহিরের হাতে লংঅনে ক্যাচ দিয়ে ফিরিয়ে আসেন মুশফিকুর রহিম।

মুশফিকের বিদায়ের পর বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ২৩তম ওভারে ক্রিস মরিসের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরত আসেন সাব্বির রহমান।

২৬তম ওভারের প্রথম বলেই ইমরান তাহিরের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন সাকিব আল হাসান। মাত্র ২ রানের জন্য অর্ধশতক মিস করেন পৃথিবীর সেরা অলরাউন্ডার। ৫১ বলে ৫টি চারে ৪৮ রান করেন সাকিব।

২৯তম ওভারে রাবাদা ব্যাক্তিগত পঞ্চম উইকেটের দেখা পান। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফিকে উইকেটরক্ষক দি ককের ক্যাচে পরিণত করেন। রাবাদার পরের ওভারেই জুবায়ের হোসেনকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান।

শেষ দিকে নাসির হোসেনের দৃঢ়টায় দেড়শত রানের কোঠা পাড় করে বাংলাদেশ। তবে ৩৭তম ওভারে নাসির মরিসের বলে বোল্ড হয়ে গেলে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। ৪৪ বলে ৩টি চার এবং একটি ছক্কায় ৩১ রান করেন নাসির।

অভিষেকে সেরা বোলিং রেকর্ড এখন রাবাদার। মাত্র ১৬ রানে ৬ উইকেট নেন এই পেসার। এছাড়া ক্রিস মরিস নেন দুটি উইকেট।
 
সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হওয়ায় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার প্রথম ওয়ানডের খেলা শুরু হতে দেরি হয়। বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে খেলা মাঠে গড়ায়। নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু না হওয়ায় ডার্ক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে খেলা ৪০ ওভারে নামিয়ে আনা হয়।

আরটি/এএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।