অভিনেতা খলিলের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ
অভিনেতা হিসেবে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে তিনি ছিলেন ভীষণ জনপ্রিয়। বলছি চলচ্চিত্রের সদা হাস্যোজ্জ্বল গুণী অভিনেতা খলিল উল্লাহ খানের কথা। সবাই তাকে অভিনেতা খলিল বলেই চেনেন। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অভিযাত্রার সঙ্গে থেকে ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর চিরবিদায় নেন। আজ বরেণ্য এই অভিনেতার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
৫৪ বছর ধরে প্রায় আটশ’ ছবিতে অভিনয় করেছেন খলিল। তবে তার অভিনয়ের শুরুটা হয়েছিল টিভি নাটকের মধ্যদিয়ে। ‘গুণ্ডা’ শিরোনামের ছবিতে অভিনয়ের জন্য পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ ছবিতে তার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক, আলমগীর ও কবরীসহ আরো অনেকে।
১৯৩৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সিলেটের কুমারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন খলিল উল্লাহ খান। ১৯৫৯ সালে ‘সোনার কাজল’ ছবিতে প্রথম অভিনয় শুরু করেন। এর আগে বেশ কয়েকটি নাটকেও অভিনয় করেন। খলিল অভিনীত দ্বিতীয় ছবি ‘প্রীত না জানে রীত’। ছবিটি ১৯৬৩ সালের ১৩ জানুয়ারি মুক্তি পায়। খলিলের তৃতীয় ছবি ‘সংগম’।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’, ‘ক্যায়সে কঁহু’, ‘জংলি ফুল’, ‘আগুন’, ‘পাগলা রাজা’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ওয়াদা’, ‘বিনি সুতার মালা’, ‘বউ কথা কও’, ‘কাজল’ ইত্যাদি। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সিনেমায় মীরজাফরের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে দর্শকের কাছে প্রশংসিত হয়েছিলেন।
১৯৬৬ সালে এস এম পারভেজ পরিচালিত ‘বেগানা’ সিনেমায় প্রথমবারের মতো খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এরপর বহু সিনেমায় তাকে খলচরিত্রে দেখা গেছে। ইতিহাসনির্ভর ‘ফকির মজনু শাহ’ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেও তিনি ভূয়সী প্রশংসা পান।
১৯৬৫ সালে ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে খলিল আত্মপ্রকাশ করেন পরিচালক হিসেবে। ‘সিপাহী’ ও ‘এই ঘর এই সংসার’ নামে দুটি সিনেমার প্রযোজনাও করেছেন তিনি।
শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’-এ তার অভিনীত ‘মিয়ার বেটা’ চরিত্র দর্শকনন্দিত হয়। ‘টাকা আমার চাই, নইলে জমি’ ফেলু মিয়ার (মিয়ার বেটা) এই সংলাপ তখন ছিল ব্যাপক আলোচিত।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সভাপতি খলিলকে ২০১২ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়। তার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির উদ্যোগে বাদ আসর এফডিসিতে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলেরও আয়োজন করা হয়েছে।
এনই/এলএ/জেআইএম