লাশ তুমি কার! ভাই না বোনের


প্রকাশিত: ১১:৪৭ এএম, ০২ জুলাই ২০১৫

অজ্ঞাত এক তরুণীর লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছে উত্তরা থানা পুলিশ। এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও অজ্ঞাত ওই তরুণীর পরিচয় উদ্ধার করতে পারেননি তারা। উপরন্তু দুই পক্ষ লাশটি তাদের স্বজন বলে দাবি করায় শেষ পর্যন্ত ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমেই প্রকৃত স্বজন খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। স্বজন, পুলিশ, চিকিৎসক সবার মনে এখন একটাই প্রশ্ন , লাশ তুমি কার? অজ্ঞাত ওই তরুণীর লাশ দাফনও হয়নি, ঠাঁই মিলেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের মরচুয়েরি কুলারে।

১ জুলাই বুধবার উত্তরা পূর্ব থানার সাব ইন্সপেক্টর মো. জামালউদ্দিন অজ্ঞাত লাশটি সনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত মর্গে রাখার জন্য ঢামেক ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. হাবিবুজ্জামান চৌধুরীর কাছে আবেদন করেন। ডা. হাবিবুজ্জামান বৃহস্পতিবার জাগো নিউজকে জানন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় সনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত লাশটি মর্গে রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ ও পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে গত ২৫ জুন উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ বিকেল সাড়ে ৫টায় ৪ নম্বর সেক্টর রোড নম্বর ৬/এ’র ৭ নম্বর বাসার সামনের ড্রেন থেকে অজ্ঞাত (২৫) তরুণীর লাশ উদ্ধার করে। সাব ইন্সপেক্টর জাকির হোসেন সুরুতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা (মামলা নং ১৩ তারিখ ২৫ জুন ধারা ৩০২/৩০১/৩৪) দায়ের করা হয়।

সূত্র জানায়, লাশ উদ্ধারের দুদিন পর ২৭ মে মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার মাজাইল মোন্দারতলা গ্রামের রজব আলীর ছেলে আনিসুর রহমান থানায় উপস্থিত হয়ে মৃতাকে তার বোন বলে দাবি করেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ ও পরামর্শক্রমে পরদিন পুলিশ আনিসুর রহমানের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেন। আনুমানিক বিকেল ৩টায় তারা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যান।

এর কিছুক্ষণ পরই নাটকীয়ভাবে সেখানে উপস্থিত হন কিশোরগঞ্জ জেলার চিকনিচর গ্রামের চাঁন মিয়ার মেয়ে হেলেনা (২৪) খাতুন। তিনি পুলিশের কাছে মৃতাকে তার বোন দাবি করে লাশ পাওয়ার আবেদন করেন।

দুইপক্ষ দাবিদার হওয়ায় পুলিশ আনিসুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করে লাশ ঢামেক মর্গে ফেরত নিয়ে আসেন। লাশ মর্গে রাখার আবেদনপত্রে পুলিশ জানায়, মর্গে সংরক্ষিত ডিএনএ নমুনার সাথে মৃতার ভাই ও বোন দাবিদার উভয়েরই ডিএনএ পরীক্ষা করা প্রয়োজন। তাই ডিএনএ রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ লাশটি মর্গে রাখার আবেদন করেন।

ঢামেক মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকান্দার আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুপক্ষই অজ্ঞাত তরুণীকে তাদের বোন দাবি করে। দুজনই বলেছেন তরুণী একজন গৃহবধূ ছিলেন।   

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে সাধারণত এ ধরণের মামলার ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা ঢামেকের ন্যাশনাল ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে করা হলেও এ মামলার নমুনা এখানে আসেনি। এটি সিআইডির ডিএনএ ল্যাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।

এমইউ/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।