বন্যা দুর্গতদের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ত্রাণ বরাদ্দ


প্রকাশিত: ০৩:০৪ পিএম, ২৯ জুন ২০১৫
ফাইল ছবি

কক্সবাজার জেলায় রোববার গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলেও সোমবার সারাদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কমে গেছে নদীর পানি। নামতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে খাল বিল-নদী নালার পানি। এতে জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরো উন্নতি হয়েছে। দুর্গত ৮০০ পরিবারের জন্য ৮`শ বস্তা খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ দিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

সোমবার সকালে এসব ত্রাণ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর ওই সব মালামাল সংশ্লিষ্ট দুর্গত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়। বানবাসীদের মাঝে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল।

পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি পানিবন্দি হয়ে পড়া মানুষগুলো। বন্যা দুর্গত কেউ কেউ ঘরে ফিরতে অনেকে এখনো আশ্রয় কেন্দ্র ও বাঁধের উপর ঝুঁপড়িতে রয়ে গেছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কটের পাশাপাশি অনেক স্থানে বিভিন্ন রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে।

গত সপ্তাহে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলা সদর, চকরিয়া, রামু ও পেকুয়া উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানিতে ভেসে গিয়ে পাহাড় ও দেয়াল ধসে এবং গাছ চাপা পড়ে জেলার ২৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

গত সাত দিনের বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলার ৪০টি গ্রামের মানুষের বাড়ি-ঘর পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিল। বন্যার পানি হ্রাস পাওয়ায় বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এসব মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

বন্যার সময় বেশিরভাগ এলাকা দীর্ঘ সময় পানির নিচে তলিয়ে থাকার কারণে ফসলসহ তৃণ জাতীয় খাদ্য স্বমূলে নষ্ট হয়। এতে করে বন্যা দুর্গত এলাকায় গবাদিপশুর চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। স্বল্প আয়ের চাষিরা সারা দিন মাঠে ঘুরেও গো-খাদ্যের সন্ধান পাচ্ছেন না। অনেকেই গবাদিপশুকে খাদ্য দিতে না পেরে বাজারে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও কমিউনিটি পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ সুপার (এসপি) শ্যামল কুমার নাথ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মদসহ অনেক সরকারি-বেসরকারি সংস্থা দুর্গতদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন।

তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতে, দুর্গতদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তবে প্রশাসনের দাবি, প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কক্সবাজার-সদর রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল জানান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে রামু উপজেলার জন্য ৫শ ও চকরিয়ার জন্য ৩শ বস্তা খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে যে বরাদ্দ দুর্গত এলাকায় দেওয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে তিনিও উল্লেখ করেন।

কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. অনুপম সাহা জানান, প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলায় বন্যা দুর্গত লোকদের জন্য ১৪৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১১ লাখ টাকা, ১৪৫ বস্তা ছিড়া, গুড় ১৪০ থান, ১৫৫ বস্তা মুড়ি বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগে প্রাণ হারানো প্রতি ব্যক্তির পরিবারে ২০ হাজার টাকা করে নগদ সাহায্য দেেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কক্সবাজার জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে বানভাসি মানুষদের জন্য দেওয়া ৮শ বস্তা ত্রাণ সোমবার পাওয়া গেছে। এসব বস্তায় রয়েছে চাল, চিনি, দুধ, লবণ, আলু, তৈল ও সাত লিটার করে খাবার পানি। এসব খাদ্য সামগ্রী দ্রুত সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সায়ীদ আলমগীর/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।