চলে গেলেন লাকী আখন্দ


প্রকাশিত: ০১:৩০ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৭

প্রখ্যাত সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক লাকী আখন্দ মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাই... রাজিউন)। দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর আরমানিটোলায় নিজ বাসভবনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে  দ্রুত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

লাকী আখন্দ একজন মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। লাকী আখন্দের মেয়ে মামিন্তি ও স্ত্রী মরিয়ম তার মৃত্যুর বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

গুণী এ শিল্পীর সংগীতায়জনে করা বিখ্যাত গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, এই নীল মনিহার, আবার এলো যে সন্ধ্যা, আমায় ডেকো না, মামনিয়া, আগে যদি জানতাম, হৃদয় আমার প্রভৃতি।

জানা গেছে, বিকেলে আরমানিটোলার বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. নিজামউদ্দিনের বরাত দিয়ে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। বিএসএমএমইউ ভিসি জানান, লাকি আকন্দ বিএসএমএমইউতে চার দফা ভর্তি ছিলেন। সর্বশেষ গত ১০দিন আগে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজি দেয়া হয়।

অনেক দিন ধরেই মরণব্যাধী ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন জনপ্রিয় এ শিল্পী। ছয় মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ দেশে ফেরেন তিনি। সেখানে কেমোথেরাপি নেয়ার পর শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছিল তার। একই বছরের জুনে আবারও থেরাপির জন্য ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে পরে আর সেখানে যাওয়া হয়ে উঠেনি।

গেল আড়াই মাস যাবত রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন লাকী আখন্দ। কয়েকদিন আগে তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার দুপুর থেকে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।সন্ধ্যার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

লাকি আখন্দের প্রথম সলো অ্যালবাম ‘লাকি আখন্দ’। ১৯৮৪ সালে সারগামের ব্যানারে এ অ্যালবাম প্রকাশ পায়। তিনি ব্যান্ড দল ‘হ্যাপি টাচ’ এর সদস্য। তার জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৮ জুন। ৫ বছর বয়সেই তিনি তার বাবার কাছ থেকে সঙ্গীত বিষয়ে হাতেখড়ি নেন।

তিনি ১৯৬৩-১৯৬৭ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন এবং রেডিওতে শিশু শিল্পী হিসেবে সঙ্গীত বিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই এইচএমভি পাকিস্তানের সুরকার এবং ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ভারতের সংগীত পরিচালক হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক (সংগীত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

লাকী আখন্দ অন্যান্য যেসব শিল্পীর গান রচনা ও সঙ্গীতায়োজন করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, যেখানে সীমান্ত তোমার (কুমার বিশ্বজিৎ), কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে (সামিনা চৌধুরী), আবার এলো যে সন্ধ্যা ( হ্যাপী আখন্দ), কে বাঁশি বাজায় রে (হ্যাপী আখন্দ)এবং বিতৃঞ্চা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’ ‘লিখতে পারি না কোনও গান, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’ প্রভৃতি।

এলএ/ওআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।