নারী দিবস নিয়ে তারকাদের ভাবনা


প্রকাশিত: ০৮:১৪ এএম, ০৮ মার্চ ২০১৭

প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ৮ মার্চ নারী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটিকে বিশ্বের প্রতিটি নারীর জন্য একটি বিশেষ দিন হিসেবে পালন করা হয়। তবে বছরের এই একটি দিন কি শুধু নারীর জন্য, আর বাকি ৩৬৪ দিন কেন নয়? কালের বিবর্তন ও নারীর সমান অধিকার নিয়ে বিশেষ এই দিবসে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন শোবিজের জনপ্রিয় কয়েকজ জন তারকা......  

ফেরদৌসী মজুমদার
নারী পরিচয় আমার গর্ব। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিশ্বের সব নারীর মঙ্গল কামনা করছি। আমি মনে করি, নারী ও পুরুষ আলাদা সত্তা নয়, সবাই মানুষ। তারপরও একজন নারীর জীবনে প্রতিবন্ধকতার সীমা নেই। সামাজিক অনেক ক্ষেত্রে তারা নিজের অধিকার থেকে এখনও বঞ্চিত। এ অবস্থা থেকে নারীকে নিজ চেষ্টায় সব বাধা অতিক্রম করে সাফল্য অর্জন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি দিনই সংগ্রামের। তাই নারী দিবস উদযাপনের পাশাপাশি নারীর এগিয়ে যাওয়ার সংগ্রাম যেন অব্যাহত থাকে, এ কামনা করি।

বিজরী বরকতউল্লাহ
নারী দিবস আসলে বছরের একদিন হয়, প্রতিদিনই হওয়া উচিত। আর এই প্রত্যেকটি দিনকে স্মরণ রাখতেই আসলে বছরের একটি দিন পালিত হয় নারী দিবস। প্রত্যেকদিনই নারীকে সচেতন হতে হবে, দেখতে হবে সে তার নিজের অধিকারগুলো ঠিক মতো পাচ্ছে কিনা। আর এই চর্চাটা শুরু হবে একেবারে ঘর থেকে। সম্মান করতে হবে মা, বোন, ভাবী, শাশুড়িসহ ঘরের সকল নারী সদস্যকে। তখনই নারী দিবসের আসল তাৎপর্য আসবে বলে আমি মনে করি। এছাড়া নারী দিবসে বিশেষ কোনো রঙের পোশাক পড়ে ঘুরে বেড়ানো এবং উপহার আদান-প্রদেনের জন্যও নয়, এটি নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার দিন বলেই মনে করেন করি।

মেহরীন মাহমুদ
নারীর অধিকার নিয়ে কি এই একটি দিনই চিন্তা করবো? বছরের এই একটি দিন শুধু নারীদের সম্মান জানানো হবে আর বাকি দিনগুলোতে তারা অবহেলিত থাকবে; এমন হলে এই দিবসের কোনো প্রয়োজন নেই। অনেক ক্ষেত্রেই নারী অধিকার এখন ইতিবাচক হয়ে এসেছে। এসব ভাবনা অনেকটা এগিয়ে গেলেও এখনও আমাদের সমাজে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি।  

তমালিকা কর্মকার
নারী স্বাধীনতা এখন আগের চেয়ে বেশি। এখন নারীরা নানা ধরণের কাজ করে এগিয়ে যাচ্ছে। তব এখনও অনেক কিছুই নারীদের জন্য নিরাপদ নয়। যেমন মেয়েরা এখনও রাত করে ঘরে ফিরলে বাবা-মা বকা দেন। ছেলেদের ক্ষেত্রে এতোটা দেখা যায় না। তবে সবশেষে বলতে চাই ছেলেমেয়ে সবাই যে যার দিন থেকে স্পেশাল। তাই লোক দেখানো দিবস না হয়ে এটা সঠিকভাবে মূল্যায়ণ করা উচিত।

ন্যানসি
আমাদের সমাজ ব্যসস্থা পিতৃতান্ত্রিক হলেও এটা মাতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থায় চলে। নারীরা আমাদের সমাজে অবহেলিত এই কথার সম্পূর্ণ বিরোধী আমি। নারীরা যদি সমাজে অবহেলিত হত তবে আমি আজ গায়িকা ন্যানসি হতে পারতাম না। আমাদের দেশের দুটি রাজনৈতিন দলের প্রধান হচ্ছেন নারী। দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী। আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে নারীরা প্রতিষ্ঠিত। তাহলে আমাদের সমাজে নারীরা অবহেলায় ভোগে কীভাবে? তবে দু’একটি একটি বিশৃঙ্খলার দ্বারা কোনোদিন পুরো জাতিকে বিচার করা উচিত হয়। সেজন্য প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা। সেই শিক্ষা শুরু করতে হবে পরিবার থেকেই। একজন মুক্তমনা, শিক্ষিত, রুচিশীল, সংগ্রামী, আদর্শ মাই পারেন তার কন্যাকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে। পুরুষকেও এজন্য সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।

বুবলী
শুধুমাত্র একদিন নারীদের মর্যাদা না দেখিয়ে এটা সারাবছর দেখানো উচিত। তাহলে সেটা হবে নারীর প্রতি আসল অধিকার প্রদর্শন। আমাদের দেশের নারীরা আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। আর যারা অবহেলার শিকার হচ্ছেন তারা প্রকৃত শিক্ষা থেকে দূরে আছেন বলেই মনে করি। তাই সকল নারীর এই ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত।

মেহজাবিন
প্রতিটি ছেলের জীবনে এক বা একাধিক নারী থাকে। সেটা হতে পারে মা, বোন, স্ত্রী। তাই প্রতিটি পুরুষের জীবনে নারীর অবদান অনেক। আর সমাজে বাস করতে হলে নারী পুরুষ একসাথে চলতে পারলে সবদিক দিয়ে উন্নতি করা সম্ভব। এখন মিডিয়াতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও দিব্যি কাজ করে যাচ্ছে। তারাও এই অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করছে।

তানহা
একদিন শুধুমাত্র নারী দিবসে নারীদের সম্মান দেখিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস না দিয়ে মন থেকে নিজের ঘরের নারীদের সাথে ভালো ব্যবহার করা উচিত। তাহলে হয়তো কোনো নারীকে আর নির্যাতিত হতে হবে না। সমাজ ও জাতি এমনিতেই বদলে যাবে।

এনই/এলএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।