চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সুদর্শন চেহারার মিষ্টি হাসির যুবক। তার হাসি সংক্রমিত করতো অন্যদের। খুব উচ্ছ্বল ছিলেন, প্রাণবন্ত ছিলেন। অভিনয়টাও করতেন দারুণ। এফডিসিতে ‘দেবদাস’ নিয়ে এক ঘরোয়া আড্ডায় প্রয়াত পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম কথাগুলো বলেছিলেন। যাকে নিয়ে বলেছিলেন তিনি অকাল প্রয়াত চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী।
চলচ্চিত্রে এসে মন জয় করে নিয়েছিলেন দর্শকের। মায়াবী চোখ, মিষ্টি হাসি, মোলায়েম শুদ্ধ উচ্চারণের কণ্ঠ, সাবলীল অভিনয় দিয়ে সোহেল চৌধুরী বেশ অল্প সময়েই ইন্ডাস্ট্রি কাঁপাতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু বিধিবাম! ক্যারিয়ার যখন সুবাস ছড়াতে শুরু করলো কেবল তখনই থেমে গেল এই নায়কের মুগ্ধতার গান। আজ থেকে ১৮ বছর আগের এইদিনে (১৮ ডিসেম্বর) সিনেমার মতোই রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন সোহেল চৌধুরী।
তারপর কেটে গেছে অনেকটা সময়। হয়েছে অনেক উত্থান পতনের গল্প। কিন্তু সোহেল চৌধুরীর খুনের বিচার পায়নি তার পরিবার। সেই কষ্ট চাপা নিয়েই প্রতি বছর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করা হয়। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তার ভক্তরাও। তবে পরিতাপের বিষয়, চলচ্চিত্রের কারখানা এফডিসির কোথাও নেই সোহেল চৌধুরী। কেউ মেন রাখেনি তাকে। সব ভুলে যাবার রোগে আক্রান্ত ইন্ডাস্ট্রিতে অবশ্য এ নতুন কিছু নয়; অবাক হবারও কিছু নয়।
সোহলে চৌধুরীর জন্ম ১৯৬৩ সালে ঢাকার বনানীতে। তার বাবার নাম তারেক আহমেদ চৌধুরী। মা নূরজাহান বেগম। উচ্চবিত্তদের পরিবারের সন্তান এই নায়ক আধুনিক শিক্ষায় নিজেকে আলোকিত করেছিলেন। চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে আশি ও নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে।
১৯৮৪ সালের নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। সেই বছরেই নির্মাতা এফ কবির চৌধুরী পরিচালিত ‘পর্বত’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিষেক হয়। তিনি ৩০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
১৯৮৬ সালে সোহেল চৌধুরী ভালোবেসে সেইসময়ের হার্টথ্রব চিত্রনায়িকা দিতিকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির দুইটি সন্তান আছে। ১৯৮৭ সালে জন্ম হয় দিতি-সোহেল দম্পতির প্রথম সন্তান লামিয়া চৌধুরীর। ১৯৮৯ সালে এ দম্পতির ছেলে দীপ্ত চৌধুরীর জন্ম হয়। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে দিতি ও সোহেল চৌধুরীর দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ ঘটে।
১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে উচ্চবিত্তদের আনন্দ ক্লাব ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই খবর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তুমুল তোলপাড়। প্রিয় নায়ককে এক নজর দেখতে শত শত মানুষ ছুটে যান গুলশান থানা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ পর্যন্ত।
এলএ