আমাকে হেয় করতেই এই সাজানো মামলা : কবির বকুল
জনপ্রিয় গীতিকার কবির বকুল ও পরিচালক পি কাজলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। সুনামগঞ্জ আদালতে বৃহস্পতিবার সকালে গান নিয়ে প্রতারণা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।
গত ১৩ এপ্রিল সুনামগঞ্জের বিচারিক হাকিম শহিদুল আমিনের আদালতে মামলা করেন জেলার গীতিকার বাউল জবান আলী। সেই মামলায় পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারি পারোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
কিন্তু এই খবরকে মিথ্যা বলে দাবি করলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী গীতিকার কবির বকুল। তিনি বলেন, ‘আমি আজ গ্রেফতারি পরোয়ানার খবর পেয়ে সুনামগঞ্জের আদালতে খোঁজ নিয়েছি। সেখানে পাবলিক প্রসিকিউটরের সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি জানান কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়নি। তবে গেল সেপ্টেম্বরে আমার নামে এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সমন জারি হয়েছিল। কিন্তু কোনো নোটিশ আমার কাছে পৌঁছায়নি। তাই আমি হাজিরা কিংবা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেইনি।’
এই গীতিকবি আরো বলেন, ‘শুরু থেকেই আমার মনে হয়েছে এই মামলাটির পেছনে কেউ কলকাঠি নাড়ছে। নইলে ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া একটি ছবির গানের জন্য ২০১৬ সালে এসে কেন মামলা হলো? আর এখানে আমার কোনো দায় আছে বলে মনে করি না। কেননা, ওই ছবিটির সবগুলো গান লিখেছিলাম আমি। কিন্তু কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘প্রেমের মানুষ ঘুমাইলেও চায়া থাকে’ গানটিও ছবিটিতে ব্যবহৃত হয়, যার গীতিকার জবান আলী। সেজন্য আলাদা করে গীতিকার হিসেবে তার নাম যায়নি। সেই দোষ তো আমার নয়। এটা প্রযোজকের দোষ।’
কবির বকুল বলেন, ‘সবাই আমাকে খুব ভালো চেনেন ও জানেন। একজন গীতিকারের গানকে নিজের করে নেয়ার কোনো ইচ্ছাে আমার কোনোকালেই ছিলো না। বরং গীতিকারদের অধিকার, প্রাপ্য সম্মানের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই লড়াই করছি। আমার নামে এমন একটি মামলা যখন হয় তখন বারবারই মনে হয় আমার মানহানির জন্য কেউ ইন্ধন জোগাচ্ছে। কিন্তু এতে কোনো ফায়দা হবে বলে আমি মনে করি না।’
এদিকে চলচ্চিত্র নির্মাতা পি এ কাজলের কোনো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও সুনামগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর খায়রুল কবির রুমেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মামলায় কবির বকুল ও পি এ কাজলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তাদের সমন দিয়েও আদালতে হাজির না পাওয়ায় এই আদেশ দিয়েছেন আদালত। তারা আদালতে হাজির হয়ে আবেদন করলেই জামিন পেয়ে যাবেন।’
চলতি বছরের এপ্রিলে জবান আলীর করা মামলার অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, ‘প্রেমের মানুষ ঘুমাইলেও চাইয়া থাকে, ভালো মন্দের ধার ধারে না, যা বলার বলুক লোকে’ গানটির গীতিকার জবান আলী। এই গান সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের কণ্ঠে ‘রোদেলা দুপুর’ অডিও অ্যালবামে প্রচারিত হয়। বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন টেলিভিশনে গানটি প্রচারিত হয়েছিল। তখন গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
কিন্তু গীতিকার কবির বকুল এই গানটি মার্কেট থেকে সংগ্রহ করে নিজের লেখা দাবি করে পি এ কাজলের পরিচালিত ‘পিরিতের আগুন জ্বলে দ্বিগুণ’ ছায়াছবিতে ব্যবহার করে কোটি টাকা মুনাফা করেন। এমনকি গানের অনেক অন্তরার কথাও পরিবর্তন করেছেন। যা গীতিকারের জন্য মানহানিকর।
এলএ