ফেসবুক সেলিব্রেটি হতে চান না অন্তরা


প্রকাশিত: ০৭:২৬ এএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৬
ছবি - সংগৃহিত

অন্তরার সঙ্গে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) রাতে যখন প্রথমে কথা হলো তখন তিনি ছিলেন রাস্তায়, শ্যুটিং সেরে বাসায় ফিরছিলেন। মুঠোফোনের ওপাশ থেকে বললেন, ‘ভাইয়া, জ্যামে আটকে পড়েছি। ফ্রি হয়ে কথা বলছি।’ ঘণ্টাখানেক পরে তিনি নিজেই ফোন করলেন।

অন্তরা প্রথমেই জানালেন তার ব্যস্ততার কথা। ক’দিন আগে তিনি নেপাল থেকে অনিরুদ্ধ রাসেলের পরিচালনায় ‘টাইম’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটকের শ্যুটিং করে এসেছেন। দৃকের পরিবেশনায় নাটকটি চ্যানেল নাইনে প্রচারিত হচ্ছে।

নেপালে টানা কুড়ি দিন ছিলেন অন্তরা। আরো ছিলেন ছোটপর্দার ১৫ জন শিল্পী। শুটিংয়ের ফাঁকে অন্তরা নেপালের কাঠমান্ডু শহরটা ঘুরে দেখেছেন, সিনেমা দেখেছেন। তার মতে, এই ট্যুরটা ছিল এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো! মানে শ্যুটিং হলো, আবার ঘোরাঘুরিও। বেশ উপভোগ্য ছিল সময়গুলো।’

বর্তমানে অন্তরা কাজ করছেন আরো কয়েকটি ধারাবাহিক নাটকে। এর মধ্যে রয়েছে এশিয়ান টিভিতে মাবরুর রশিদ বান্নাহর ‘ব্যাকবেঞ্চারস’, দেশটিভিতে আর বি প্রীতিমের ‘কমিউনিটি’, আরটিভিতে শ্রাবণী ফেরদৌসের ক্রাইম ফিকশন ‘অনাকাঙ্ক্ষিত সত্য’ ইত্যাদি।

এ তো গেলো নাটক, বিজ্ঞাপনের খবরা-খবর আছে? অন্তরা বললেন, ‘আমি আসলে খুব বেশি বিজ্ঞাপনে কাজ করিনি। তবে হ্যাঁ, ক’দিন আগে আরএফএল গ্যাসের চুলার একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। যেটি ভাইরাল ক্যাম্পেইন হবে। পুরান ঢাকার আবহে, চমৎকার কনসেপ্টে বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করেছেন মাসুদ জাকারিয়া সাবিন।’

ontora

এদিকে, গত ঈদে অন্তরা-অভিনীত সাতটি নাটক প্রচার হয়েছে। এর মধ্যে কাজল আরেফিন অমির ‘ভিডিও’ এবং ‘ট্যাটু’ নামের দুটি নাটকে কাজ করে প্রচুর রেসপন্স পেয়েছেন বলে জানালেন। বললেন, ‘নাটক দুটিতে আমার উপস্থিতি ছিল একেবারেই অন্যরকম। এর মধ্যে ‘ট্যাটু’ নাটকে অভিনেতা নিশো ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ডের চরিত্রটি দিয়ে প্রশংসা পেয়েছি। আমার ভীষণ ইচ্ছে আগামীতে এ ধরনের ব্যতিক্রমী সব গল্প এবং চরিত্রের নাটকে অভিনয় করবো।’

রুপালি পর্দাতেও কাজের ইচ্ছে আছে অন্তরার। তবে সেটা তিনটি ভালোকে সঙ্গে নিয়ে। ভালো গল্প, ভালো চরিত্র এবং ভালো নির্মাতা। যদি এই তিনটি ব্যাটে-বলে টাইমিং হয়, তবে ফুলটাস কিংবা হাফবলি যাই হোক না কেন রুপালি পর্দায় ছক্কা হাঁকাতে চান তিনি।

অন্তরার ভাষ্য, ‘এখন তো আমাদের ফিল্ম ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। নতুন নির্মাতারা আসছেন। আরো কিছুদিন সময় নিয়ে চলচ্চিত্রে কাজের জন্য মনোযোগী হবো।’

বর্তমানে রাজধানীর নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তরা। তার পুরো নাম অন্তরা আজিম হলেও বন্ধুমহল এবং মিডিয়ায় অন্তরা নামেই পরিচিত। জন্ম, শৈশব, কৈশোর- পুরোটাই কেটেছে ঢাকাতে। ছোটবেলা থেকে তিনি টুকটাক গান করতেন। তবে আগের মতো আর গানে সময় দিতে পারেন না।’

সদালাপি আর মিশুক প্রকৃতির মেয়ে অন্তরা সবসময় আড্ডা দিতে এবং এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন। আর পাঁচটা মেয়ের মতো খুব বেশি সাজগোজের প্রতি ঝোঁক নেই অন্তরার। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এখন অভিনয়ে মনোযোগী তিনি।

অন্তরা বলেন, ‘ছোটবেলা তো দূরের কথা সাত বছর আগেও ভাবিনি আমি মিডিয়ায় কাজ করবো, অভিনেত্রী হবো। ২০১১ সালে শখের বশে একটি ফ্যাশন হাউসে স্বাধীনতা দিবসের পোশাক কালেকশনের ফটোশুটে অংশ নিয়েছিলাম। সেটি প্রকাশ হয়েছিল অনেক বিলবোর্ড, পত্র-পত্রিকায়। তারপর টুকটাক পত্রিকার ফটোশুটে অংশ নিতাম। এসব শখের বশেই করতাম।’

ontora

এরপর ২০১৩ সালে নির্মাতা আদনান আল রাজীবের নির্দেশনায় ‘মিডলক্লাস সেন্টিমেন্ট’ টেলিফিল্মে প্রথম অভিনয় করি। তারপর আস্তে আস্তে অনেক নাটকে কাজ করেছি।

আরো বলেন, ‘প্রতিনিয়ত নতুন করে নিজেকে অবিষ্কার করছি। আমার সবচেয়ে ভালো লাগে অভিনেত্রী নওশীন আপুকে। তার অভিনয় আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তাছাড়া আমার পরিবার থেকে আমার মা আমাকে অভিনয়ের ব্যাপারে অনেক উৎসাহ দেন। তিনি আমার কাজের ভালো-মন্দ সমালোচনা করেন।’

যোগ করে অন্তরা বলেন, ‘আগে অভিনয় করতাম একেবারেই শখের বশে। ভালো লাগতো কাজ করতে, এখন আরো বেশি করে। তবে ইদানীং কাজের প্রতি দায়িত্ববোধ বেড়ে যাচ্ছে, আর অভিনয়টা নিয়ে প্রফেশনালি ভাবছি। আমি ফেসবুক সেলিব্রেটি হতে চাই না। সুবর্ণা মুস্তাফা, বিপাশা, তারিন আপুরা তো ফেসবুক দিয়ে আজকের অবস্থানে আসেননি। তারা এসেছেন তাদের অভিনয় দিয়ে। আমিও আগামীতে পেশাদার অভিনেত্রী হয়ে মিডিয়ায়ই থিতু হতে চাই। সবার অন্তরে ঠাঁই পেতে চাই।’

অন্তরা তার অন্তর থেকে চান অভিনয়ের আঙিনায় নিজের নামটি অম্লান করে রাখতে। সেই লক্ষ্য নিয়েই পথ চলছেন তিনি। কোনো তাড়াহুড়া নেই। তিনি বিশ্বাস করেন, পরিশ্রমই সৌভাগ্যের প্রসূতি।
                
এনই/এআরএস/এনএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।