জমে উঠছে পরিচালক সমিতির নির্বাচন


প্রকাশিত: ১১:১৪ এএম, ২৪ নভেম্বর ২০১৬

নির্বাচনের উষ্ণ হাওয়া বইছে চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি)। ডিসেম্বরে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচন এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে শিল্পী সমিতির নির্বাচন। তবে চলতি বছরের শেষেই যেহেতু পরিচালক সমিতির নির্বাচন, তাই এটি নিয়েই আপাতত বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।
 
শুটিং না থাকলেও প্রায় প্রতিদিনই বিকেলের পর পরিচালকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে এফডিসি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিচালক সমিতির নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নামছে তিনটি প্যানেল। তিনটি প্যানেলই গঠিত হয়েছে গুণী আর জনপ্রিয় পরিচালকদের সমন্বয়ে।

একটি প্যানেলে সভাপতি পদে দাঁড়াচ্ছেন প্রবীণ নির্মাতা আমজাদ হোসেন এবং মহাসচিব পদে জাকির হোসেন রাজু। সভাপতি পদে অন্য আরেকটি প্যানেলে থাকছেন সমিতির বর্তমান মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার। তার সঙ্গে মহাসচিব পদে আছেন বদিউল আলম খোকন।

সবশেষে তৃতীয় প্যানেলটিতে সভাপতি পদে লড়বেন জনপ্রিয় নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান এবং মহাসচিব পদে রায়হান মুজিব। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছে চলচ্চিত্র নির্মাতা সাফি উদ্দিন সাফির নাম।

আগামী নির্বাচন নিয়ে গুলজার বলেন, ‘আমি দু’বার মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছি। সমিতি পরিচালনার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। সেই ভাবনা থেকে এবার আমি সভাপতি হিসেবে আসতে চাইছি। সুযোগ পেলে পরিচালক সমিতিকে আরো চলচ্চিত্রবান্ধব করবো।’

আরেক প্যানেল থেকে জাকির হোসেন রাজু জানান, ‘পরিচালক সমিতির নির্বাচনে মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। আমার প্যানেলের সভাপতি পদে আছেন শ্রদ্ধেয় আমজাদ হোসেন। কিছুদিনের মধ্যেই বাকি সদস্যদের নাম জানানো হবে। আশা করছি যোগ্যদের বিজয় হবে।’

তবে কে এগিয়ে জনপ্রিয়তায় সে খবর নিতে গিয়ে পাওয়া গেল নানা রকম হিসাব-নিকেশের ফিরিস্তি। সমিতির অনেক ভোটারই নানা অঙ্ক কষছেন এবারের নির্বাচন নিয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নির্মাতা জানালেন, দুই বছর ধরে পরিচালক সমিতিতে চ্যানেল আইয়ের একটা প্রভাব লক্ষ করা গেছে। এটা অনেক বড় একটি প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করেন অনেকেই। চলচ্চিত্র শিল্পের সবচেয়ে বড় মাধ্যম। এখানে কোনো চ্যানেলের নিয়ন্ত্রণ মেনে নেয়া যায় না। সেই ভাবনা থেকে এবার সমিতিকে একদম নতুন করে দেখতে চাইছেন পরিচালকরা। যারা কোনো চ্যানেলের প্রতিনিধি হবেন না। চলচ্চিত্রের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

পাশাপাশি কেউ কেউ একটি প্যানেলকে আলোচিত এবং সমালোচিত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার পোষ্য বলে ভাবছেন। সেখানে দুজন বরেণ্য নির্মাতার সুনামকে ব্যবহার করে চলচ্চিত্রে একতরফা রাজত্ব কায়েম করতে চাইছে জাজ। তাই এই প্যানেলটিকেও এড়িয়ে চলতে চাইছেন অনেকে। স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে থাকে নিরপেক্ষ প্যানেল ও প্রার্থীরা। তবে ব্যক্তি ইমেজে এগিয়ে আছেন আমজাদ হোসেন, জাকির হোসেন রাজু, সোহানুর রহমান সোহান, মুশফিকুর রহমান গুলজার, বদিউল আলম খোকন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আশা করা যাচ্ছে জমে উঠবে এবারের পরিচালকদের নির্বাচন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির ২০১৫-১৬ সালে নির্বাচিত বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ ডিসেম্বর। আর পরিচালক সমিতির ২০১৭-১৮ সালের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন আগামী ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচন সামনে রেখে পরিচালক সমিতি থেকে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এফডিসির মহাপরিচালক হারুন-উর-রশিদ। এছাড়া বাকি দুজন সদস্য হলেন শফিকুর রহমান ও বি এইচ নিশান।

পরিচালক সমিতির সদস্যদের চাঁদা দেয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। ৩ ডিসেম্বর হবে ভোটার তালিকা সংশোধন। আর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৪ ডিসেম্বর। ৫ ডিসেম্বর থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে। মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ৮ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে খসড়া তালিকা প্রকাশ ১০ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১১ ডিসেম্বর।

এনই/এলএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।