শুরু হচ্ছে প্রাণ চিনিগুঁড়া চাল নবান্ন উৎসব


প্রকাশিত: ০৬:৪৬ এএম, ২২ নভেম্বর ২০১৬

নতুন ধান! নতুন অন্ন! নবান্ন। আর এই নবান্ন উৎসবকে ঢাকার নাগরিক জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জন্য বিগত বছরের মতো এবারেও শোবিজ এন্টারটেইনমেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে আবহমান গ্রাম-বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জীবনঘনিষ্ট বিষয় নিয়ে নবান্ন উৎসব। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে রাজধানীর ধানমণ্ডি রবীন্দ্র সরোবরে শুরু হবে ‘প্রাণ চিনিগুঁড়া চাল নবান্ন উৎসব-১৪২৩’।

উৎসব শুরু হবে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে আর চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। আগামী বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে বরেণ্য অতিথিদের উপস্থিতিতে প্রধান অতিথি আসাদুজ্জামান নূর এমপি উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।

জানা গেছে, নবান্ন উৎসবকে আকর্ষণীয় এবং দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য রয়েছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নবান্নের নাচ, নবান্নের গান, পুতুল নাচ, নাগরদোলা, পুঁথি পাঠ, বায়োস্কোপ, গাজীর কিসসা, পালকি, লাঠিখেলা, বানর খেলা, সাপ খেলাসহ নানা আয়োজন। আর এতসব আয়োজন উপভোগের পাশাপাশি মুখের স্বাদ বাড়াতে রয়েছে দেশের ঐহিত্যবাহী সব রকমারি পিঠাপুলির প্রদর্শনী।

নবান্ন উৎসবে কুমিল্লা পিঠাঘর, লামিয়া বি-বাড়িয়া পিঠাঘর, নেত্রকোনা পিঠাঘর, লাবণ্য নোয়াখালী পিঠাঘর, শরীয়তপুর পিঠাঘর, মানিকগঞ্জ পিঠাঘর, গোপালগঞ্জ পিঠাঘর, মনিচুরি পিঠাঘর, গ্রামবাংলা পিঠাঘর, বিনোদন পিঠাঘর, ঘর কন্যা, পিঠাপুলি, বিক্রমপুরের পিঠাপুলি, ময়মনসিংহ পিঠা পল্লিসহ প্রায় ৩২টি স্টলে দেশের বিভিন্ন এলাকার পিঠাপুলি প্রদর্শন ও বিক্রিয় করা হবে।

এসব স্টল থেকে খেঁজুরের গুড়ে ভেজানো চিতই, ফুল পিঠা, দুধ চিতই, ভাপা পিঠা, ডিম চিতই, মুখ পাকন, পাটি সাপ্টা, সুচি পিঠা, রস মাধুরী পিঠা, ইলিশ পুলি, মালাই পুলি, খেঁজুরের পিঠা, মাল পোয়া পিঠা, সেমাই পিঠা, জামাই আদর পিঠা, পাকান পিঠাসহ বিভিন্ন নাম ও স্বাদের পিঠাগুলোর প্রদর্শনী এবং বিক্রি চলছে। উৎসবে বিভিন্ন অঞ্চলের মজাদার স্বাদের প্রায় ৬০ থেকে ৮০ রকমের পিঠা পাওয়া যাবে। উৎসবে আগত নানা বয়সী মানুষের উৎসব প্রাঙ্গণে বসেই পিঠা খাওয়ার যাবে। আবার অনেকে পরিবারের জন্য পার্সেলও নিতে পারবেন। এছাড়া শাড়ি ও শীতের আকর্ষণীয় শালও মিলছে।

উৎসব নিয়ে আয়োজক সংগঠন শোবিজ এন্টারটেইনমেন্টের নির্বাহী পরিচালক মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, ‘গ্রাম-বাংলার নবান্ন উৎসবে শহরের মানুষকে যুক্ত করতে এ আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ। নবান্ন উৎসবে পিঠা শিল্পীদের কাজে উৎকর্ষ আনয়ন ও উৎসাহ প্রদানের জন্য পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। আশাকরি এই প্রচেষ্ঠা নতুন মাত্রা যোগ করবে।’

এদিকে প্রাণ চিনিগুড়ার ব্র্যান্ড ম্যানেজার মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের নাগরিক জীবনে নবান্ন ক্রমেই ফ্যাকাশে হয়ে আসছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই নবান্নকে নতুন করে সবার কাছে তুলে ধরতে এই উৎসবটির দারুণ ভূমিকা রয়েছে। সেই ভাবনা থেকেই এর সঙ্গে আমাদের যুক্ত হওয়া। এবারে বর্র্ণিল আয়োজনে সাজানো হয়েছে উৎসব। আশা করছি তিন দিনব্যাপী নগরবাসী আনন্দ-বিনোদনে গ্রামীন সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের রঙিন করে নেবেন।’

তিন দিন ধরে চলা এই উৎসবে গান করবেন ফকির আলমগীর, কুদ্দুস বয়াতি, ফকির শাহাবউদ্দিন, শফিউল আলম রাজা ও তার দল (ভাওয়াইয়া), ইফফাত আরা নারগিস, উৎপল কুমার পাল, বাউল কাশেম, উসমান উদাস, দেলোয়ার বয়াতি, ইউসুফ বয়াতি, মায়া রানী, সুমী শবতম, অনিমা রায়, শাহনাজ বাবু, মহসিন খান, ক্লোজআপ তারকা বাপ্পি, পুলক, সাজু, রাফাত, ক্ষুদে গান রাজ প্রিয়াংকা, নাবিল ও নিলয়। থাকবে লালন পাঠশালা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, স্বরশ্রুতি, মুক্তধারা আবৃতি চর্চা কেন্দ্র ,সত্যসেন শিল্প গোষ্ঠী, ঋষিজ শিল্প গোষ্ঠী, ধ্রুব শিশু কিশোর সংগঠন, বাফা, খেলাঘর শিশু শিল্পী গন, শিল্পবৃত্ত, নৃত্যলোক ও নটরাজসহ বেশ কিছু সংগঠনের পরিবেশনা।

এলএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।