হুমায়ূন আহমেদের গল্পের তারকারা
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, নাট্যকার ও গীতিকার। পরিচালক হিসেবেও তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। আজ রোববার (১৩ নভেম্বর) নন্দিত এই মানুষটির জন্মদিন। অথচ আজ তিনি নেই আমাদের মাঝে। চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তার নির্দেশনায় কাজ করে আজ অনেক শিল্পী পেয়েছেন দারুণ জনপ্রিয়তা। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের অনেক শিল্পীই অভাববোধ করেছেন হুমায়ূন আহমেদের নির্দেশনার। তারা কাজ করেছেন তার গল্পে। কয়েকজন তারকার অভিজ্ঞতা নিয়ে এই প্রতিবেদন-
চঞ্চল চৌধুরী
আমি স্যারের নির্মাণে ‘কালা কৈতর’ নামে একটি ধারাবাহিক নাটকে কয়েক পর্বে কাজ করেছি। স্যার মারা যাওয়ার পর তার পত্নী শাওনের নির্দেশনায় ‘নিমফুল’ নাটকে কাজ করেছি। স্যার যখন আমেরিকাতে অসুস্থ ছিলেন, তখন শাওনকে নাকি জানিয়েছিলেন ‘নিমফুল’ নাটকটি নির্মাণ করবেন; সেখানে অভিনয় করবো আমি। স্যার সেটা আর পারেননি। পরে শাওন নির্মাণ শুরু করলে আমাকে জানান, হুমায়ূন আহমেদের ইচ্ছে ছিল আমি যেন এই নাটকে কাজ করি। নাটকটির শুটিং করার সময় বারবার তার কথা মনে হয়েছিল।
শবনম ফারিয়া
আমি হুমায়ূন আহমেদ স্যারের গল্পে তিনটি নাটকে কাজ করেছি। প্রথমটা ছিল ‘যাও মেঘ যাও’, দ্বিতীয়টা ছিল ‘প্রিয় পদরেখা’ এবং তৃতীয় কাজটি ছিল ‘ভালোবাসার গল্প’। সবগুলো নাটকই নির্মাণ করেছেন মেহের আফরোজ শাওন আপু। তবে স্যারের গল্পে কাজ করাটা আমার কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। আমি ছোটবেলা থেকে একাডেমিক বইয়ের বাইরে বলতে গেলে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের লেখা দিয়েই বই পড়া শিখেছি। প্রথম পড়েছিলাম স্যারের লেখা ‘ভূত ভূতাং ভৌত’ বইটি। এবং আমার বইপড়ার অভ্যাসটা শুরুই হয় স্যারের লেখা বইগুলো পড়ার মাধ্যমে। স্যারকে স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। কিন্তু উনি ছিলেন আমার কাছে আমার পরিবারের একজন সদস্যের মতো। স্যারের মৃত্যুর খবরটা শুনে আমি প্রায় তিন দিন নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলাম! আমার মনে হয়েছিল আমার পরিবারের একজন সদস্য আমায় ছেড়ে চলে গেল। যদি তিনি বেঁচে থাকতেন অবশ্যই তার নির্দেশনায় কাজের সুযোগ পেতাম।
তৌসিফ মাহবুব
স্যারের লেখা প্রচুর বই পড়েছি, তার নির্মিত অনেক নাটক দেখেছি ছোটবেলা থেকে। আর তার গল্পে গত ঈদে ‘আজ জরির বিয়ে’ নাটকটি রিমেকে নির্মিত হয়। এটি শাওন আপু নির্মাণ করেন। অনেক আগে একবার নাটকটি নির্মাণ করেছিলেন হুমায়ূন স্যার নিজেই। সেসময় অভিনয় করেছিলেন মাহফুজ আহমেদ ভাইয়া এবং শাওন আপু। আমি যখন পুনরায় আবার এই নাটকে কাজ করি তখন আমার মধ্যে একটা চ্যালেঞ্জ কাজ করছিল। কারণ আগে মাহফুজ ভাইয়া যেখানে চরিত্রটি রূপ দিয়েছেন এবার সেখানে আমি দিচ্ছি। এটা ছিল আমার জন্য অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। পরে শাওন আপুকে এই চ্যালেঞ্জের ব্যাপারটা বললাম; তিনি আমাকে বলেছিলেন, মাহফুজ আহমেদের সেই অভিনয়কে ফলো করার দরকার নেই। আমি যেন আমার সেরাটা দিয়ে কাজ করি। পরে সেভাবেই কাজ করেছি। অনেক প্রশংসা পেয়েছিলাম নাটকটিতে কাজ করে। আর শুটিং করার সময় হুমায়ূন স্যারকে ভীষণ মিস করছিলাম।
জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি
হুমায়ূন আহমেদ স্যারের গল্পে ‘জুতার বাক্স’ নাটকটি প্রচার হয়েছে কদিন আগে। তারআগে ‘চার দুগুণে আট’ এবং ‘চৌধুরী খালেকুজ্জামানের গুণের সীমা নেই’ নামের আরো দুটি রিমেক নাটকে কাজ করেছি। এগুলো পরিচালনা করেছেন শাওন আপু। খুব ভালো লেগেছে স্যারের নাটকে কাজ করতে পেরে। কারণ চিত্রনাট্যগুলো অসাধারণ। তবে ইউনিটে কাজ করতে গিয়ে অনেকবার মনে হয়েছিল ইশ! যদি স্যারের নির্দেশনায় কাজ করতে পারতাম! তারপরও হুমায়ূন আহমেদ স্যারের মতো একজন বিখ্যাত মানুষের গল্পে কাজ করলাম এটাই বা কম কিসে!
এনই/এইচএন/আরআইপি