ঈগলস ড্যান্স কোম্পানিকে এখন সবাই এক নামে চেনে : তানজিল


প্রকাশিত: ০৮:৪৭ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬
ছবি : মাহবুব আলম

বাংলাদেশে পশ্চিমা নৃত্যের অন্যতম সেরা কোরিওগ্রাফার তানজিল আলম। সমসাময়িক সালসা, টেংগো, হিপহপ, ওয়েস্টার্ন থেকে শুরু করে বলিউড নৃত্য নিয়েই মূলত কাজ করছেন তিনি। রাজধানীর নিকেতনে তার গড়া ঈগলস ড্যান্স কোম্পানীর অফিস। অফিসে তার নিজের রুমজুড়ে দেয়ালে দেয়ালে ফ্রেমে আটকানো ছবির মেলা। দেশ-বিদেশের কর্মশালার সনদ ও পুরস্কার গ্রহণ, তার নির্দেশনায় বড় শিল্পীদের প্রশিক্ষণের সময়কার তোলা ছবিগুলোও উঁকি দেয়। সেখানে বসে একাডেমি এবং কোরিওগ্রাফার হয়ে ওঠার গল্প শোনালেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত এই ডান্স মাস্টার। সঙ্গে ছিলেন নাহিয়ান ইমন। ছবি তুলেছেন মাহবুব আলম

জাগো নিউজ : ঈদের ব্যস্ততা কেমন গেল?
তানজিল : আসলে অনেকগুলো কাজ করেছি এবারের ঈদের জন্য। তবে বেশিরভাগ কাজই বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের ঈদ অনুষ্ঠান কেন্দ্রিক। যেমন- সাতদিন ব্যাপী এসএ টিভিতে একটি নাচের অনুষ্ঠান প্রচার হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন আটির্স্টরা পারফর্ম করেছেন গানের তালে। ছিলেন সাফা কবির, মেহজাবিন, তানজিন তিশা, আমব্রিন, শিরিন শিলা, অমৃতা ছাড়াও আরো অনেকে। প্রতি পর্বে চারজন করে সৃজনশীল, ফিউশন, কনটেম্পোরারি, মর্ডান, ছাড়াও বিভিন্ন ধাঁচে পারফর্ম করেছেন। তাছাড়া চ্যানেল আইয়ের ‘হ্যান্ডসাম দ্য আলটিমেট ম্যান’র নাচের কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করছি।

জাগো নিউজ : আপনি তো চলচ্চিত্রেও বেশ জনপ্রিয়। নিয়মিত কাজ করে থাকেন। এখন তো ফিল্মে সুদিন ফিরছে। সবার ব্যস্ততা বেড়েছে। আপনার কী অবস্থ?
তানজিল : এটা খুবই আশা জাগানিয়া ব্যপার যে গেল রোজা ঈদ থেকে আমাদের চলচ্চিত্রে বসন্ত ফিরেছে। বেশ কয়েকটি ছবি লগ্নির তিনগুনও ব্যবসা করেছে। এতে করে প্রযোজকরা আরো লগ্নি করার সাহস পাচ্ছেন। আমাদেরও কাজ বাড়ছে। বেশ কিছু ছবিতে কাজের কথা হচ্ছে। আর এই মুহূর্তে সম্প্রতি নিরব-মম’র ‘ভালোবেসে তোর হবো’ ছবির গানের কোরিওগ্রাফি করেছি। অনন্য মামুনের একটি ছবিতে বলিউডের রাখি সাওয়ান্তের একটি আইটেম গানের নৃত্য পরিচালনা করেছি। এর এডিটিং শেষ হয়েছে। শিগগির গানটি প্রকাশ করা হবে। সবমিলিয়ে আমার ব্যস্ততাটা বাড়ছেই বলা যায়।

Tanzil

জাগো নিউজ : রাখি সাওয়ান্ত বলিউডে আইটেম গার্ল হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। তিনি ভালো নাচেনও। তার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো?
তানজিল : এককথায় অসাধারণ। রাখি চমৎকার নাচ করেন। খুব সহজেই তিনি কৌশলগুলো রপ্ত করতেন পারেন। মনযোগ দিয়ে শুনেন তাকে কী করতে বলা হচ্ছে। এত বড় ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন তবু লোক দেখানো তারকাগিরি তার মধ্যে দেখিনি। ভালো লেগেছে তার সঙ্গে কাজ করে।

জাগো নিউজ : দেশের বাইরে আর কোন তারকার সঙ্গে কাজ করা হয়েছে?
তানজিল : বিপিএলের আসরে বলিউডের অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্ন্দাদেজ আমার কোরিওগ্রাফিতে নাচ করেছেন। এছাড়াও এর আর রহমান, উদিত নারায়ণ, সঞ্জয় দত্ত, হেমা মালিনী, কুমার শানু, সনু নিগমের মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। আগামীতেও নিশ্চয় আরো অনেক কাজ হবে।
 
জাগো নিউজ : চলচ্চিত্রে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চাই.....
তানজিল : আমি চলচ্চিত্রের গানে প্রথম কোরিওগ্রাফি করি জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘আমার প্রাণের প্রিয়া’ ছবিতে। এটি ২০০৯ সালের কথা। সে ছবির একটি গানের কোরিওগ্রাফার ছিলাম আমি। গানটি ছিল হৃদয় খানের গাওয়া ‘আছে দু’চোখ কাছে আসার, আসে হৃদয় ভালোবাসার’। গানের সঙ্গে নেচেছিলেন শাকিব খান। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই গানের কোরিওগ্রাফির জন্য আমি সেবছর ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পাই। মানে প্রথম ছবিতে কোরিওগ্রাফি করেই এই সম্মাননা আমার হাতে আসে। তখন নিজের কাছে মনে হলো এই পথে আমাকে দিয়ে কিছু একটা হবে হয়তো। চলচ্চিত্রের সবাই খুব উৎসাহ দিলেন। সেই সাহসকে পুঁজি করে ‘অগ্নি’, ‘দবির সাহেবের সংসার’, ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’, ‘ফুল অ্যান্ড ফাইনাল’, ‘ওয়ান ওয়ে’সহ বেশ কিছু ছবিতে কাজ করেছি। আর আমাগীতে তো আরো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জিং কাজ আসছে।     
 
জাগো নিউজ : এবার স্টেজ শো নিয়ে বলুন...
তানজিল : সেটা তো সংখ্যায় বলা মুশকিল। দেশের যত বড়বড় কর্পোরেট বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আছে তাদের প্রায় সব কাজগুলো আমিই করি। যেমন- গ্রামীনফোন, রবি, বাংলালিংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, ইউনিলিভার ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের শো’গুলো আমার তত্ত্ববধানেই হয়ে থাকে। তাছাড়া ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার’, ‘লাক্স-চ্যানেল আই প্রতিযোগিতা’, ‘আরটিভি অ্যাওয়ার্ড’, ‘সেরা নাচিয়ে’র গ্র্যান্ড ফিনাল, ‘পাওয়ার ভয়েজ’র গ্র্যান্ড ফিনালেতেও আমি কোরিওগ্রাফি করি। তাছাড়া বাংলাদেশ ফুটবল সুপারলীগের একটি গর্জিয়াস অনুষ্ঠান করেছি। এই অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতাটি ছিলো দারুণ।

জাগো নিউজ : দেশের বাইরে কি কোন শো-তে যাওয়া হয়?
তানজিল : মাঝেমধ্যেই যাওয়া পড়ে। দুবাইয়ে চ্যানেল আই’র যেসব অনুষ্ঠানগুলো হতো সেখানে নাচের যাবতীয় দায়িত্ব থাকতো আমার উপর। ২০১২-তে সিঙ্গাপুরে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের একটা অ্যাওয়ার্ড শো করেছি, ব্যাংককে ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে একটা অনুষ্ঠান হয়েছে সেটা করেছি। ২০১৫ সালে টিম নিয়ে কাতারে সেরা কণ্ঠের গ্র্যান্ড ফিনালের অনুষ্ঠান করেছি। আরো অনেক প্রোগ্রামে দেশের বাইরে নিয়মিতই যাওয়া হয়।       

Tanzil

জাগো নিউজ : এবার আপনার ঈগলস ড্যান্স কোম্পানী নিয়ে বলুন...
তানজিল : মিরপুরে ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে এসে ঈগল ড্যান্স গ্রুপ তৈরি করি এবং নিকেতনে ড্যান্স স্কুলের বয়স ছয় বছর। বর্তমানে ঈগলস ড্যান্স কোম্পানীর বয়স ১৭ বছর। এ পর্যন্ত ঈগল থেকে প্রায় এক হাজারেরও বেশি ছেলেমেয়ে বের হয়ে নিজেরাই কোরিওগ্রাফার হিসেবে মিডিয়াতে জায়গা করে নিয়েছেন। তাছাড়া বাংলাদেশের মিডিয়াতে এমন কোনো নতুন শিল্পী নেই যারা ঈগল থেকে ট্রেনিং নেয়নি। অনেক বড় তারকারাও এখান থেকে নাচের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। যেমন- বিন্দু, বিদ্যা সিনহা মিম, তানজিন তিশা, মেহজাবিন। এছাড়া আগের প্রজন্মের তিন্নি, মোনালিসা ও আরো অনেকেই এখান থেকে নাচের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আর বর্তমানে ঈগলের স্টুডেন্টস সংখ্যা ৬০ জনের মত। এখানে দু’টি ব্যাচে ৩০ জন করে শনি-রবি ক্লাস নেয়া হয়।

জাগো নিউজ : ঈগলস ড্যান্স কোম্পানীতে ভর্তির যোগ্যতা ও নিয়ম কানুন কেমন?
তানজিল : এখানে ৪-৬০ বছর বয়সের যে কেউ নাচ শেখার জন্য আসতে পারেন। ভর্তির সময় ২ হাজার টাকা নেয়া হয় এবং প্রতিমাসে প্রশিক্ষণ বাবদ নেয়া হয় ৩ হাজার টাকা। আর ভর্তির সময় বায়োডাটা/জাতিয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দরকার হবে। প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে আলাদা তিনজন নাচের শিক্ষক আছেন তারা ক্লাস নেন। সেটা বাদে আমিও সপ্তাহে একটি ক্লাস নিয়ে থাকি।

জাগো নিউজ : আপনি তো অনেকের নাচের শিক্ষক। আপনার শিক্ষক কারা?
তানজিল : প্রথমে আমি ক্ল্যাসিকাল নাচের তালিম নেই আজমেরি আনোয়ার কুমকুম আপুর কাছ থেকে। সেটা `৯০ সালের শেষদিকের কথা। তারপর মগবাজারে সোপান ভাই নামের একজন মোস্ট পপুলার ড্যান্স পাইনিয়র ছিলেন, তার কাছে থেকে মর্ডান ড্যান্স শিখি। এছাড়া ইন্ডিয়া, ব্যাংকক ছাড়া আরো বিভিন্ন জায়গা থেকে বরেণ্য সব নাচের গুরুদের কাছ থেকে নাচের দীক্ষা নিয়েছি। আর আমি মনে করি জন্ম-থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একজন মানুষের শেখার শেষ নেই। আমি এখনো নিজে নিজে শিখছি প্রতিনিয়তই।

জাগো নিউজ : এত পেশা থাকতে নাচের প্রতি ঝোঁক এলো কেন?
তানজিল : সত্যি কথা বলতে কি ছোটবেলা থেকে মাইকেল জ্যাকসনের অন্ধ ভক্ত ছিলাম আমি। যখন ওয়ান-টু’তে পড়ি তখন মাইকেল জ্যাকসনের ভিডিও দেখে নিজে নিজে প্র্যাকটিস করতাম। তারপর যখন ফাইভ-সিক্সে পড়ি; সে প্রায় ’৯৫-৯৬ সালের কথা তখন মনে হলো আমাকে নাচ শিখতে হবে। মাইকেল জ্যাকসনের মতো নাচের তালে সবাইকে মুগ্ধ করতে হবে। তখন অনুধাবন করলাম, নিজে নিজে প্র্যাকটিস করেই হবে না, নাচে ভালো করতে হলে সঠিক তালিম নিতে হবে। তখন কুমকুম আপুর কাছে দেড় বছর ধরে একটা কোর্স করি। সেসময় শিবলী স্যার, নিপা ম্যাম, রতন স্যার অনেক ফেমাস। তারা নাচেন এবং নাচের শিক্ষাও দিচ্ছেন। কিন্তু তাদের দেখে আমার মনে হলো তারা যেভাবে কাজ করেন তাদের থেকে ব্যতিক্রম কিছু করা উচিৎ। আর যেহেতু মাইকেল জ্যাকসন আমার ভাবগুরু তাই সেই ব্যতিক্রমী ধারাটা আমিই শুরু করবো বলে ভাবলাম। তবে পশ্চিমা বা বিদেশি ধাঁচের এই নাচ সেইসময়ে আমাদের এখানে খুব একটা দেখা যেতো না। তাই অনেকেই আমাকে বলেছে এইসব বিদেশি নাচ দিয়ে কিচ্ছু হবে না। কিন্তু আমি দমে যাইনি। অনুধাবন করলাম, জগতের সব নাচই শিল্প যদি সেটা শৈল্পিকভাবে উপস্থাপন করা যায়। নইলে মুনওয়াক দিয়ে মাইকেল জ্যাকসন সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে পারতেন না। আমার বিশ্বাস ছিলো, নান্দন্দিকভাবে উপস্থাপন করতে পারলে এদেশেও পশ্চিমা বা দ্রুপধী নাচের বাইরের নাচ জনপ্রিয়তা পাবে। আসলে শিল্পের মানচিত্র অনেক বড়। এখানে সব প্রয়োজন পড়ে। কেবল ক্ল্যাসিক দিয়ে নৃত্যশিল্পের পূর্ণতা আসবে না। এখানে মাইকেল জ্যাকসনের মুনওয়াক, শাকিরার কোমর নাচানোটাও একটা অংশ হিসেবে থাকতে পারে। তাছাড়া বিশ্বের নানা অঞ্চলে নানা রকম আধিবাসীদের বৈচিত্রময় সব নাচ আছে। সেইসবের সমন্বয়ে যিনি যতো বেশি সমৃদ্ধ হবেন তিনি ততো বড় নৃত্যশিল্পী। সেই বিশ্বাস থেকেই লেগে আছি। নাচকে জীবনের ব্রত করে নিয়েছি। নিজেকে ঋদ্ধ করতে দেশের বাইরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। সেখান থেকে ফিরে সোপান ভাইয়ের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেই। এরপর নিজেই একটা টিম বানিয়ে কাজ শুরু করি। ব্যাস। সময়ের স্রোতে সবার ভালোবাসায় আজি এতোটা পথ পাড়ি দিতে পেরেছি। ব্যতিক্রমী ধারার নাচকে আমি এ দেশে জনপ্রিয় এবং প্রতিষ্ঠিত করেছি। এখন সবাই একনামে চিনে ‘ঈগলস ড্যান্স কোম্পানী’।

জাগো নিউজ : ঈগলস ড্যান্স কোম্পানীতে কী কী প্যাটার্নের নাচ শেখানো হয়?
তানজিল : বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ড্যান্স প্রশিক্ষণ একাডেমিতে হরেক ধরণের নাচ শেখানো হয়। আর ঈগল বাংলাদেশের একমাত্র একাডেমি যেখানে ট্যাংগো, সালসা, রামবা, জুম্বা, হিপহপ, মর্ডান, ক্ল্যাসিকাল, ফিউশনসহ দেশীয় সব নৃত্যও শেখানো হয়। তাছাড়া যদি কোনো অর্গানাইজার অন্যরকম নাচ চান আমরা সেটাও দেয়ার চেষ্টা করি।

জাগো নিউজ : আমাদের আজকালকার শিল্পচর্চায় কাজের বৈচিত্রতা খুবই কম। সেখানে আপনি একেক গানে একেক রকম নাচের বিভিন্ন কনসেপ্ট নিয়ে হাজির হচ্ছেন। বাহবা তো আপনার প্রাপ্যই। তবে এই বৈচিত্রতার রহস্য কী?
তানজিল : একটা নাচ তৈরি করতে মিনিমাম দুই দিন রিহার্সেল করা লাগে। আর তার চাইতেও বেশি প্রয়োজনর হয় আইডিয়া তৈরি করতে। এটা সত্যি কঠিন বৈচিত্রতা নিয়ে শিল্পচর্চা করা। তবে অসম্ভব নয়। শিল্পী চাইলে এবং নিজের সামর্থের উপর আস্থা থাকলে সময় কিছুটা বেশি ব্যয় হলেও নিত্য নতুন কাজ করা যায়। আমার ক্ষেত্রে বৈচিত্রতা নির্ভর করে গানের বা অনুষ্ঠানের ধরণের উপর। যেমন চলচ্চিত্রের গান এক ধরনের আবার স্টেজ শো’তে নাচগুলো হয় অন্য আমেজে। তাছাড়া নতুন কোনো গানে ড্যান্সের আগে গানটা নিয়ে ২-৩ ঘণ্টা ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করি। তারপরেই একটা কনসেপ্ট বেরিয়ে আসে।

জাগো নিউজ : ঈগলস ড্যান্স কোম্পানী নিয়ে আগামীতে কী ধরণের পরিকল্পনা আছে?
তানজিল : নিকেতনে ঈগলসের মেইন ব্রাঞ্চ। আর আগামীতে ঢাকার উত্তরা, মিরপুর, ধানমন্ডি, পুরান ঢাকাসহ পাঁচটা স্থানে ঈগলের শাখা খোলার ইচ্ছে আছে। এবং সেটা আগমী এক বছরের মধ্যে ইনশাল্লাহ করতে পারবো। এরপর ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ছাড়াও বিভাগীয় শহরগুলোতে শাখা খুলবো। আমি চাই, নাচে ঈগল হবে বাংলাদেশের একটি গোল্ডেন ব্র্যান্ড।

Tanzil

জাগো নিউজ : নাচের এই পেশায় পেশাদারিত্ব কেমন?
তানজিল : শুধু নাচ নয়, যেকোনো কাজের সঙ্গেই যদি ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকা যায় তবে অবশ্যই সাফল্য আসবে। সেখানে পেশাদারিত্বের সুযোগ হবে। আমাদের দেশে নাচ মানেই মেয়েলিপনা মনে করা হয়। অনেকেই ছেলেদের নাচকে বাঁকা চোখে দেখেন। তবে বর্তমানে এই চিন্তা দর্শনে পরিবর্তন এসেছে। এখন সবাই নাচকে একটি শিল্প হিসেবেই মূল্যায়ণ করেন। মেয়রাতো আগে থেকেই নাচের সঙ্গে ছিলো। আজকাল ভালো ঘরের শিক্ষিত ভদ্র ছেলেরাও কিন্তু নাচে আসছে। পাশাপাশি দেশের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নৃত্যকে অন্যতম কলা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সে বিষয়ে তাত্ত্বিক শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। সেই জায়গা থেকে নাচের ক্যারিয়ার এখন অনেক সম্ভাবনার। অন্তত আমরা যখন শুরু করেছিলাম তার থেকে তো বেশি বটেই।

জাগো নিউজ : আপনার পরিবার সম্পর্কে বলুন...
তানজিল : বাবা-মা দুজনেই জীবিত আছেন। আমার বড় একভাই আর বোন আছেন। গতবছর বিয়ে করেছি। কিছুদিন আগে আমার এক ছেলে সন্তান হয়েছে। ওর নাম তেহজিব আলম আজীন, বয়স সবে দু`মাস হলো। সবাইকে নিয়ে সুখেই রেখেছেন পরম করুণাময়।

জাগো নিউজ : আপনার আজকের এই অবস্থান নিয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?
তানজিল : দেখুন, বিশ্বখ্যাত সব শিল্পীরা বলে গেছেন শিল্পী মনের নাকি তৃপ্তি বলে কিছু নেই। শিল্পী তৃপ্ত হয়ে গেলে শিল্প চর্চার আগ্রহ হারিয়ে যায়, উৎসাহ মরে যায়। তাই আমরন অতৃপ্তি নিয়েই একজন শিল্পী শিল্পের অমৃত সুধা পান করে চলেন। আমিও তাই করে যেতে চাই। পাওয়া না পাওয়ার হিসেবে মিলাতে চাই না। পরিশ্রম করে, তিল তিল করে গুছিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসেছি। সকলের দোয়ায় আমি ভালো আছি; এটুকুই কেবল বলা যেতে পারে।

এলএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।