শুভ জন্মদিন আবুল হায়াত


প্রকাশিত: ০৭:৩৬ এএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক আবুল হায়াতের জন্মদিন আজ। ১৯৪৪ সালের এই দিনে তিনি (৭ সেপ্টেম্বর) জন্মেছিলেন। জীবনের সমুদ্রে শত সহস্র স্রোত পেরিয়ে এবারে তিনি ৭২ বছরে পা রাখলেন।

দিনটি উপলক্ষে পরিবারের সদস্য, বন্ধু-স্বজন ও ভ্ক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন আবুল হায়াত। সারাদিনই চলভে শুভেচ্ছা বিনিময়। গুণী এই অভিনেতার জন্মদিন উপলক্ষে জাগো নিউজ পরিবারের পক্ষ থেকেও রইল অভিনন্দন ও শ্রদ্ধামিশ্রিত ভালোবাসা।

এ দিনের নানা আয়োজন ও সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে তিনি জানালেন, ‘জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ কোনো আয়োজন করি না। আমার দুই মেয়ে বিপাশা ও নাতাশা পুরো বাড়িটা উৎসব আমেজে ভরিয়ে দেয়। ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছুঁতে না ছুঁতেই ওরা শুভেচ্ছা জানায়। নাতি-নাতনিদের নিয়ে হাসি-গান-আড্ডায় মেতে উঠি সবাই। অন্যদিকে সকাল হতে না হতেই আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা শুভেচ্ছা জানায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’

Abul-haid

আবুল হায়াত মিষ্টি হেসে জানালেন, একইদিনে তার নাতনী শ্রীশারও জন্মদিন। তাই আনন্দটা হয় দ্বিগুণ।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আবুল হায়াতের বাবা আব্দুস সালাম ছিলেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে ওয়াজিউল্লাহ ইন্সটিটিউটের সাধারন সম্পাদক। স্কুল জীবন কাটে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট ও রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে মেটৃকুলেশন (বর্তমান এসএসসি) পাস করে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আইএসসি পাস করে ১৯৬২ সালে বুয়েটে ভর্তি হন। বুয়েটে পড়ার সময় শেরেবাংলা হলে থাকতেন। এরপর বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট থেকে ১৯৬৭ সালে পাস করে ১৯৬৮ সালেই ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী পদে যোগ দেন।

Abul-haid

১৯৬৯ সালে ‘ইডিপাস’ নাটকে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো টিভি স্ক্রিনে তার অভিনয়ের অভিষেক ঘটে। তারপর থেকে টিভি নাটকে, সিনেমায় আর বিজ্ঞাপনে সফলতার সাথে অভিনয় করে আসছেন। জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ রচিত প্রচুর নাটকে তিনি অংশ নিয়েছেন। ‘মিসির আলি’ চরিত্রে অভিনয়টি তার বিশেষ কাজ। এর বাইরে ‘আজ রবিবার’, ‘বহুব্রিহী’, ‘অয়োময়’, ‘জোছনার ফুল’ ধারাবাহিকগুলোতে আবুল হায়াত ছিলেন অনবদ্য। তার অসংখ্য খণ্ড নাটকও মুগ্ধ করেছে দর্শকদের।

একজন মঞ্চ অভিনেতা হিসেবেও আবুল হায়াত কিংবদন্তি। তার বেশ কিছু নাটক নতুনদের সৃষ্টিশীল অভিনয়ে উৎসাহ দেয়। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য, আসাদুজ্জাম নূরের চিত্রনাট্য ও নির্দেশনায় বিদেশি নাটক অবলম্বনে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ নাটকটি। ১৯৭৮ সালে এতে অভিনয় করে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন এই আবুল হায়াত।

Abul-haid

আবুল হায়াত সাহিত্যিক হিসেবেও নাম কামিয়েছেন। তার লেখা প্রথম উপন্যাসটি বের হয় ১৯৯১ সালের বই মেলায়। উপন্যাসটির নাম ছিল ‘আপ্লুত মরু’। এরই ধারাবাহিকতায় একে একে বের হয় ‘নির্ঝর সন্নিকট’, ‘এসো নীপ বনে’ (তিন খণ্ড), ‘অচেনা তারা’, ‘জীবন খাতার ফুট নোট’, (দুই খণ্ড) ও ‘জিম্মি’।

আবুল হায়াত ১৯৭০ সালে মেজ বোনের ননদ মাহফুজা খাতুন শিরিনকে বিয়ে করেন। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান বিপাশা হায়াত। ছয় বছর পর জন্ম নেয় নাতাশা। তারা দুজনেই শোবিজের জনপ্রিয় মুখ। বর্তমানে নাতাশা সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বিপাশা চিত্রশিল্পী হিসেবে নিয়মিতই কাজ করছেন। আবুল হায়াতের দুই কন্যার স্বামীরাও অভিনয় ও পরিচালনায় জনপ্রিয় মুখ। তারমধ্যে বিপাশার স্বামী তৌকীর আহমেদ বর্তমানে অভিনয়ের চাইতে পরিচালনাতেই বেশি ব্যস্ত। সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে তার নতুন ছবি ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিটি। অন্যদিকে নাতাশার স্বামী শাহেদ শরীফ খানের অভিনয় খানিকটা অনিয়মিত। তবে ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিতে তিনি একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

এলএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।