নাটকের সিস্টেম নিয়ে জ্যোতিকা জ্যোতির ক্ষোভ
নাটকের দর্শকদের কাছে পরিচিত মুখ অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। সম্প্রতি ঈদের নাটক নিয়ে তার সমসাময়িক শিল্পীরা ব্যস্ত সময় কাটালেও তার হাতে তেমন কাজ নেই! তার কাজ না থাকার জন্য তিনি বর্তমান সময়ে নাটক নির্মাণের সিস্টেমকে দায়ি করলেন।
আজ রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এই অভিনেত্রী নাটকের সিস্টেমের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘একজন শিল্পী হিসেবে আমি আমার পছন্দের পরিচালককে বলতেই পারি যে আমি তার সাথে কাজ করতে আগ্রহী। তার জন্য হাজারবার অডিশনও দিতে পারি। এর বেশি আর কিছু পারিনা। আমি বিশ্বাস করি পরিচালকই একটা প্রডাকশনের বস, সর্বেসর্বা। একজন পরিচালকই নির্ধারণ করবেন তার প্রডাকশনের সব কিছু। কিন্তু আমার কাজের ক্ষেত্র টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি আর এভাবে চলছে না। পরিচালকের হাতে নেই কিছু আর। আছেন হয়তো ২/৪ জন ব্যতিক্রম, কিন্তু দুই-চার জন দিয়ে তো ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়ায় না!’
‘অনীল বাগচীর একদিন’ ছবির এই অভিনেত্রী আরো লেখেন, ‘পরিচালকের বাইরে চ্যানেল, এজেন্সি, প্রডিউসার (ব্যাসিক্যালি টাকা ইনভেস্টর) তাদের সাথে লবিং, যোগাযোগ বা বাকি সব মেইন্টেইন করতে আমার পার্সোনালিটিতে বাঁধে, ইগোতে লাগে। আর এই চ্যানেল-এজেন্সি চেইনের সাথে শিল্পের কোন সম্পর্ক আমি দেখি না। তোষামোদকারী ম্যানেজার-ডিরেক্টরদের সাথে কাজ করতে ভাল লাগে না আমার, রাগ হয়। মেরুদন্ডহীন মানুষদের সাথে জীবনে কখনোই চলতে পছন্দ করিনা। আর মিডিয়ায় আমার নিজের অপক্ষমতাবান মামা-চাচা-স্বামী-বানানো ভাই- বড়-নেতা কেউই নেই। যেহেতু আমি সিস্টেমের সাথে গা ভাসাচ্ছি না, ফলে আমার কাজের পরিমাণ কমছে। মনে-মাথায় হতাশা, রাগ, অভিমান বাসা বাঁধছে। কারণ এটাই আমার একমাত্র পেশা। ভালো রেজাল্ট নিয়ে এম,এ পাশ করার পরও কখনো চাকরীর চেস্টা করিনি, অন্য পেশায় যাওয়ার চিন্তা করিনি।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে জ্যোতিকা জ্যোতি আরো লিখেছেন, ‘স্বপ্ন আর শক্তি নিয়ে অজপাড়া গাঁ থেকে এই অবস্থানে আসছিলাম তাকে নোংরা প্রতিযোগিতায় নষ্ট করতে চাইনা। অবশ্যই আমি কোন চ্যানেল, এজেন্সির বা প্রডিউসারের কাছে যাবনা। আর তাতে যদি আমার একটা কাজও না থাকে, না থাকবে। প্রয়োজনে গ্রামে গিয়ে কৃষিকাজ করবো অথবা হলিউড/বলিউড ইন্ডাস্ট্রি তে কাজ করা চেষ্টা করবো। যা আছে কপালে। তোমরা তোমাদের মেরুদন্ডহীন শরীর নোংরা স্রোতে ভাসাতে থাক।’
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে লাক্স-আনন্দধারা ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় সেরা দশে স্থান করে নিয়েছিলেন জ্যোতি। এরপর টুকটাক অভিনয়ের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। তারপর সারাহ বেগম কবরীর ‘আয়না’ ছবিতে সুযোগ পান। এরপর থেকে অভিনয়ই তার ধ্যান-জ্ঞান।
‘আয়না’র পর মুক্তি পায় জ্যোতি অভিনীত বেলাল আহমেদের ‘নন্দিত নরকে’ এবং তানভীর মোকাম্মেলের ‘রাবেয়া’ ছবি দুটো। এছাড়া তানভীর মোকাম্মেলের ‘জীবনঢুলি’ ও আজাদ কালামের ‘বেদেনী’ চলচ্চিত্র দু`টিতে কাজ করে নিজেকে ভিন্নধারার ছবিতে প্রমাণ করেছেন জ্যোতি। সর্বশেষ গেল বছরের শেষে জ্যোতি অভিনীত হুমায়ূন আহমেদের গল্প অবলম্বনে ‘অনীল বাগচীর একদিন’ ছবিতে অভিনয় করে নতুন করে আলোচনায় আসেন রাজনীতি সচেতন এই অভিনেত্রী।
এনই/এলএ/এমএস