প্রথমবার বাংলাদেশের গানে শিলাজিৎ
শিলাজিৎ মজুমদার। গেল ২২ শে শ্রাবণ ৫০ বছর পেরিয়েছে তিনি। কলকাতার মানুষ যাকে আদর করে ডাকেন প্রথাবিরোধী শিল্পী। নিজের কথা-সুর-গায়কী দিয়েই তিনি স্রোতের বিপরীতে ছুটছেন প্রায় ৩০ বছর যাবত। করেছেন একাধিক ছবিতে অভিনয়ও। অথচ কী আশ্চর্য, বাংলায় গেয়েও এতকাল বাংলাদেশের গান গাওয়া হলো না তার!
গত বছর একটি এফএম রেডিওর আমন্ত্রণে তিনি প্রথম বাংলাদেশে এসেছিলেন ক্ষণিকের জন্য। ফিরে যাওয়ার আগে বলেছিলেন, ‘আমি এই দেশের গান গাইতে চাই। এই মানুষের সামনে প্রাণভরে পারফর্ম করতে চাই। বাঙালি হিসেবে এটাও আমারই দেশ, কাঁটাতার এখানে ফ্যাক্টর হতে পারে না।’
পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় এই সংগীত শিল্পীর সেই ইচ্ছে পূর্ণ হতে যাচ্ছে আসছে ঈদ উৎসবে। প্রথমবারের মতো তিনি গাইলেন বাংলাদেশের গান। মাহমুদ মানজুরের কথায় এবং কণ্ঠশিল্পী-সুরকার জয় শাহরিয়ারের সুরে এই গানটির শিরোনাম ‘অসহায়’। যা ঈদে এক্সক্লুসিভ সিঙ্গেল হিসেবে প্রকাশ পাচ্ছে সিএমভির ব্যানার হয়ে জিপি মিউজিক অ্যাপস-এ।
সম্প্রতি কলকাতার স্টুডিওতে গানটি রেকর্ড শেষে শিলাজিৎ বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের গান গাইতে পেরে স্বস্তি পেয়েছি। আসলে গাইলে তো সবখানেই গাওয়া যায়। কিন্তু গাইবার মতো গানইবা কোথায় পাই? সে হিসেবে এই গানটির কথা-সুর আমাকে টেনেছে, ভাবিয়েছে খুব। তাই মনভরে গাইলাম, তৃপ্তি পেলাম।`
তিনি আরো বলেন, ‘গানটি দিয়ে বাংলাদেশের শ্রোতাদের কাছে আমার খানিক ঋণ শোধ হবে হয়তো। কারণ, সেখানে অসংখ্য শ্রোতা আছেন, যারা গেল দুই দশক ধরেই বলছিলেন, বাংলাদেশে কেন আসি না, কেন গাই না? তাদের বলছি- এটাই শেষ নয় বরং এখান থেকেই শুরু করলাম। চিয়ার্স।’
গানটির গীতিকার মানজুর বলেন, ‘গেল দুই যুগ ধরে ওনার গান মুগ্ধ হয়ে শুনছি। প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিল তার সঙ্গে একটা গান করার। সেটি এবার হয়ে গেল। গানটি করতে গিয়ে বুঝলাম শিলুদা শুধু শিল্পী হিসেবেই নন, মানুষ হিসেবে অনেক বড় হৃদয়ের। ভাবতে ভালো লাগছে, তিনি বাংলাদেশের প্রথম গান গাইলেন আমার কথায়। এই গানটি আমার জীবনের অন্যতম অর্জন হয়ে থাকবে।’
শিলাজিৎ মজুমদার গত ৩০ বছরের ক্যারিয়ারে এক ডজন একক অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। অভিনয়ের সঙ্গে গান করেছেন প্রায় ২০টি চলচ্চিত্রে।
তার জনপ্রিয় হওয়া গানের মধ্যে রয়েছে- `লাল মাটির সরানে`, `ঝিন্টি তুই বৃষ্টি হতে পারতিস`, `ভগবান`, `এক্স ইকুয়্যালটু প্রেম`, `তোদের ঘুম পেয়েছে বাড়ি যা` কিংবা ‘হেমলক সোসাইটি’র ‘জলফড়িং’ ইত্যাদি।
এনই/আরএস/এমএস