আবারো অস্কার জিতলেন বাংলাদেশি নাফিস
চলচ্চিত্রের নোবেল খ্যাত একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার) আবারো জিতলেন বাংলাদেশি তরুণ অ্যানিমেটর নাফিস বিন জাফর। `হাউ টু ট্রেইন ইয়োর ড্রাগন টু` সিনেমায় ব্যবহৃত ডিজিটালি বিধ্বংসী ইফেক্টস তৈরির স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর কারিগরি বিভাগে আরউইন কওম্যানস ও স্টিফেন মার্শালের সঙ্গে যৌথভাবে অস্কার জিতেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশি এই অ্যানিমেশন প্রকৌশলী।
গত ৮ জানুয়ারি চিঠির মাধ্যমে নাফিসকে আনুষ্ঠানিক অস্কার জয়ের সুখবর দেয় একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস। গতকাল নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে দ্বিতীয়বারের মতো অস্কার বিজয়ের খবরসহ সংশ্লিষ্ট চিঠি পোস্ট করেন নাফিস। ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, `একাডেমি অ্যাওয়ার্ড জয়ে আমি ভীষণ সম্মানিত বোধ করছি। এ সম্মানের অংশীদার আমার বন্ধু এবং ডেভেলপার দলের সবাই। এ স্বীকৃতি নতুন কাজে আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করবে।`
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলসে জমকালো আয়োজনে চলচ্চিত্রের নোবেল খ্যাত এ পুরস্কার তার হাতে তুলে দেওয়া হবে। এর আগে ২০০৭ সালের `পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান :অ্যাট ওয়ার্ল্ডস এন্ড` চলচ্চিত্রে অ্যানিমেশন কাজের জন্য অস্কার পেয়েছিলেন নাফিস। দুই সহকর্মী ডাগ রোবেল ও রিয়ো সাকাগুচির সঙ্গে যৌথভাবে ওই বছর অস্কার জেতেন তিনি। ১৯৭৮ সালের ৮ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী নাফিস বর্তমানে চীনের সাংহাইতে ওরিয়েন্টাল ড্রিম ওয়ার্কসে অ্যানিমেশন বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছেন। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান নাফিস।
ঢাকার মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে স্ট্যান্ডার্ড সিক্স লেবেল পড়াশোনা করে সপরিবারে ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন নাফিস। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ অব চার্লসটন থেকে সফটওয়্যার প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। বাবা জাফর বিন বাশার বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি অ্যাকাউন্টিং ফার্মে চাকরি করছেন। আর মা নাফিসা জাফর গৃহিণী। তাদের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার কাজীকান্দা।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি প্রয়াত সৈয়দ মইনুল হোসেন নাফিসের মামা এবং বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার তার নানা। নাফিস বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসভিত্তিক বিশ্বখ্যাত স্পেশাল ইফেক্টস ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান `ড্রিম ওয়ার্কস অ্যানিমেশন`-এর নতুন উদ্যোগ ওরিয়েন্টাল ড্রিম ওয়ার্কসের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক হিসেবে চীনে দায়িত্ব পালন করছেন। চীন-যুক্তরাষ্ট্র যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় সাহাংইতে অবস্থিত। গত সেপ্টেম্বর থেকে সেখানেই নতুন একটি দল নিয়ে কাজ করছেন নাফিস।