পাল্টেছে কত দৃশ্যপট বদলাননি শাহরুখ

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:২০ এএম, ০২ নভেম্বর ২০২২

ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে শাহরুখ খান এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশেষ করে বলিউডে। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাস রচনা করতে গেলে বিশেষ অংশজুড়েই রাজত্ব করবেন শাহরুখ- একথা নির্দিধায় বলা যায়।

অনেক কিছুর পালা বদলে বলিউড আজকের অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। শুধু সিনেমা জগতের পালবদল নয়, বদলেছে দুনিয়ার অনেক কিছুই। কিন্তু বলিউডে যাত্রা শুরু করেই সিনেমাপ্রেমীদের কাছে যখন থেকে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া শুরু করেছিলেন, পেয়েছিলেন জনপ্রিয়তা- সেই ধারাবাহিকতা আজও ধরে রেখেছেন শাহরুখ।

বলিউড যাত্রার সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসেও দর্শকের কাছে শাহরুখের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা আজও অটুট-অম্লান। অভিনয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়ে সিনেমাপ্রেমীদের কাছে তিনি ‘কিং খান’ বা বলিউড বাদশার সম্মান-ভালোবাসার আসন করে নিয়েছেন। আজ এই বলিউড বাদশার ৫৭তম জন্মদিন। এখন তিনি রোমান্টিক চরিত্রে সাবলীল। শুধু তা-ই নয় যেকোনো চরিত্রে শাহরুখ এখনও নিখুঁতভাবে অভিনয় করে যাচ্ছেন। তাই বলা-ই ‘সবকিছু বদলালেও বদলাননি শাহরুখ।’

পাল্টেছে কত দৃশ্যপট বদলাননি শাহরুখ

আজকে শাহরুখ যে অবস্থানে এসেছেন-এই যাত্রা মোটেই সুখকর ছিল না। অনেক কণ্টকাকীর্ণ বন্ধুর পথ মাড়িয়ে এখানে এসে দাঁড়িয়েছেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ।

শাহরুখের জীবনযুদ্ধের এমন কাহিনি ডার্ক থ্রিলারের চেয়ে রহস্যময়। তবে তার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বরাবরই তুঙ্গে ছিল। তাই শাহরুখ এসবের তোয়াক্কা করেননি কখনো। যেমন মায়ের মৃত্যুর পর মাত্র ১৫০০ রুপি হাতে নিয়ে দিল্লি থেকে মুম্বইয়ে পা রেখেছিলেন ভারতীয় এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শাহরুখ।

পাল্টেছে কত দৃশ্যপট বদলাননি শাহরুখ

একটা সামান্য নামকে নেমপ্লেট করে তোলার কঠিন যুদ্ধে বেশি কিছু না ভেবেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। অভিনয়ের প্রতি প্রেম, চরম আত্মবিশ্বাস আর মানসিক জোর নিয়ে এমন এক শহরে পা রাখলেন যেখানে তার কোনো পরিজন নেই।

প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও এই স্বপ্ন দেখার সাহস পান না অনেকেই। কিন্তু তিনি তো সেই ফিলগুড স্বপ্নের ফেরিওয়ালা, যার নাম ‘শাহরুখ খান’। আশ্চর্য তার জীবন কাহিনি। অতিবাস্তব তার জীবনের প্রতিটি বাঁক। ধীরে ধীরে বিশ্বায়নের দুনিয়ায় সারা পৃথিবীতে ভারতীয় সিনেমার, সংস্কৃতির বাহক হয়ে উঠলেন তিনি।

বিশ্বের দরবারে সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে ভারতের অন্য নাম হয়ে উঠলেন শাহরুখ খান। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে তার অতি সাধারণ নামকে স্বর্ণাক্ষরে লিখেছেন দিল্লির মধ্যবিত্ত পরিবারের এই ছেলে, যা এখন অস্বীকার করার ক্ষমতা ইতিহাসেরও নেই।

পাল্টেছে কত দৃশ্যপট বদলাননি শাহরুখ

নব্বইয়ের নতুন সময়ে দর্শক ভারতীয় পৌরুষের ধারণাকে নতুন ছাঁচে দেখতে চাইছিল। সে প্রেমে ব্যর্থ রোমান্টিক দিলীপ কুমার নয়, আবার অ্যাংরি ইয়ং ম্যান অমিতাভও নয়। তাহলে? ক্রমে নির্মিত হলো এক ধারণা, যার নাম শাহরুখ। যার প্রচ্ছদ বিশ্বায়ন নির্ধারিত, সত্তা ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতির। আরিয়ন হয়ে যে চ্যালেঞ্জ জানায় গুরুকুলকে, যে দিওয়ানা বাজিগর আবার একই সঙ্গে গড়ে তোলে তার স্বদেশ। সুখস্বপ্ন হয়ে ধরা দিলেন তিনি পর্দায়। বাস্তব হয়েও তিনি স্বপ্নের অধিক।

তিনি যে অভিনেতা হতে পারেন পরিবারের কারোরই সেই ভরসা ছিল না। কিন্তু তিনি তো জেদি তাই স্কুল জীবন থেকেই অভিনয়ে হাতেখড়ি করে নিয়েছিলেন নিজেই। শুধুমাত্র তার মা ভরসা রেখেছিলেন তার উপর। গর্ব করে সকলকে বলতেন, ‘ছেলে আমার দিলীপ কুমার হবে।’

পাল্টেছে কত দৃশ্যপট বদলাননি শাহরুখ

দিল্লি থেকে মুম্বাই এসে আজিজ মির্জার অফিসে টেবিলের নিচে রাতে ঘুমাতো যে ছেলেটা আজ তার ঘুম ভাঙে মুম্বাইয়ে সমুদ্রের পাড়ে ২০০ কোটি রুপি বাংলোয়। এটা স্বপ্নের আখ্যান নাকি বাস্তব, গুলিয়ে যায় সবটাই। তার চেহারা হিরোসুলভ নয় বলে তাকে ফিরিয়েছেন অনেক প্রযোজক। ছোটপর্দা দিয়েই ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। কিন্তু যিনি রাজা হতে এসেছেন তাকে দমিয়ে রাখার সাধ্য কার! তাই কালের নিয়মেই শুরু হল তার উথ্থান। সেকেন্ড হিরো হিসেবে সিনেমার দুনিয়ায় পা রাখলেও একের পর এক হিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়ে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনিই বক্সঅফিসের ‘কিং’।

তাই তো তিনি হাসির ছলে বলতে পারেন যে, ‘আপনি খুব ভালো হতে পারেন, আপনি সেরা হতে পারেন কিন্তু আমি তার থেকে আরেকটু ভালো’। এমনকী বলিউডে ৩০ বছর কাটিয়েও তিনি বলেন ‘এখন আর নিজেকে সেরা আমি বলি না কারণ সারা পৃথিবী সেটা মানে’। তবে শুধুই কি সাফল্য, ব্যর্থতাও এসেছে। কিন্তু সেই ব্যর্থতাকেই পাথেয় করে এগিয়ে চলেছেন শাহরুখ, পর্দার অপ্রতিরোধ্য ‘বাদশা’।

পাল্টেছে কত দৃশ্যপট বদলাননি শাহরুখ

আজও তাঁকে ঘিরে উন্মাদনায় এতটুকু ঘাটতি পড়েনি। শুধুমাত্র তাদের স্বপ্নের নায়ককে এক ঝলক দেখার জন্য জন্মদিনেও অনুরাগীদের ঢল নামে মান্নাতের সামনে।

এমএমএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।