টাকার জন্য পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয় আরিয়ানকে, দাবি সাক্ষীর

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২৮ এএম, ০৭ নভেম্বর ২০২১

বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের বড় ছেলে আরিয়ান খানের মাদক মামলার তদন্তে নতুন নতুন মোড় নিচ্ছে। আলোচিত এ মামলায় বিজয় পাগাড়ে নামে এক সাক্ষী স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের কাছে দাবি করেছেন, বিপুল পরিমাণ টাকা আদায়ের জন্য পরিকল্পিতভাবে আরিয়ান খানকে ফাঁসানো হয়েছে। তার কথায় উঠে এসেছে ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা সুনীল পাটিলের নামও।

গতকাল শনিবার মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা মোহিত কম্বোজও আরিয়ানের বিরুদ্ধে মাদককাণ্ডের নেপথ্যে মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে সুনীলের নাম উচ্চারণ করেছেন।

সাক্ষী বিজয় বলছেন, ২০০৮ সালে কিছু কাজের জন্য সুনীলকে টাকা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সে টাকা ফেরত না পাওয়ায় টাকা আদায়ের জন্য সুনীলকে অনুসরণ করা শুরু করেন। এমনকি সুনীলের সঙ্গে আহমেদাবাদ, সুরত ও মুম্বাইয়েও যান তিনি।

বিজয়ের দাবি, গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে ছিলেন সুনীল। ওই হোটেলেই আরিয়ানের মাদক মামলার অপর সাক্ষী কে পি গোসাভির নামেও একটি রুম রুম বুক করা হয়েছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তকারী দলকে বিজয় জানান, প্রমোদতরীতে মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থার (এনসিবি) অভিযান চালানোর কদিন আগে ওই হোটেলেই সুনীল ও গোসাভির সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির আরেক নেতা মণীশ ভানুশালী।

বিজয় বলেন, আমিও তখন ওই হোটেলেই ছিলাম। সেখানে তাদের তিনজনকে একসঙ্গে দেখেছি। এমনকি সুনীলকে চুম্বন করার পর মণীশকে বলতে শুনেছিলাম, ‘বড় কাজ হয়ে গিয়েছে। আহমেদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা হতে হবে। তবে পাগাড়েকে সঙ্গে নিও না’। তবে তখনো বিজয় অনুমান করতে পারছিলেন, আসলে কী ঘটতে চলেছে।

তার দাবি, গত ৩ অক্টোবর আবারও মুম্বাইয়ের সেই হোটেলে আসেন। তার সঙ্গে দেখা করে বলেন টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য। এরপরই দুজন এনসিবি কার্যালয়ে যান। রাস্তায় মণীশ ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখন তিনি পূজা, স্যাম ও ময়ূর- এ তিনজনের নাম উচ্চারণ করেন।

বিজয়ের কথায়, এনসিবি কার্যালয়ে পৌঁছেই দেখি সেখানে সাংবাদমাধ্যমের ভিড়। শুনতে পাই আরিয়ান খানকে আটক করেছে এনসিবি। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখতে পাই, আরিয়ানকে ঘিরে নিয়ে আসছেন মণীশ ও গোসাভি। এরপরই বিষয়টি আমার কাছে জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আরিয়ানের মাদককাণ্ড একটা পূর্ব-পরিকল্পিত ঘটনা।

সাক্ষী বিজয় আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেও তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তার কথা শোনা হয়নি।

তিনি বলেন, প্রমোদতরীতে অভিযান চালানোর আগে সুনীল আমাকে বলেছিলেন, একটা বড় কাজ পেয়েছি। আপনার টাকা ফেরত দেবো। পরে বুঝলাম, আসলে কাজটা কী ছিল এবং কীভাবে টাকা এসেছে।

মাদককাণ্ডে গ্রেফতার হয়ে ২২ দিন জেল খেটে গত ৩০ অক্টোবর ছাড়া পান আরিয়ান। এর আগে আর্থার রোডের কারাগারে তিন সপ্তাহ থাকেন ২৩ বছর বয়সী এ তরুণ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, মুম্বাইয়ের মাদকবিরোধী সংস্থা আরিয়ানের কাছ থেকে কোনো মাদক পায়নি। তবে তার হোয়াটসঅ্যাপ আলাপে মাদক কেনাবেচায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি এনসিবির।

এর আগেড় নিম্ন আদালতে দুদফা জামিন বাতিল হওয়ার পর গত ২৯ অক্টোবর মুম্বাই হাইকোর্ট ১৪ শর্তে আরিয়ানকে মুক্তি দেন। এর মধ্যে পুলিশকে না জানিয়ে আরিয়ান মুম্বাই ত্যাগ করতে পারবে না এবং প্রতি শুক্রবার এনসিবি কার্যালয়ে তাকে হাজিরা দিতে হবে বলে শর্তে বলা হয়।

আদালতের শর্ত মোতাবেক গত শুক্রবার দুপুরে একটি সাদা রঙের রেঞ্জ রোভারে করে এনসিবি কার্যালয়ে পৌঁছান আরিয়ান। এসময় তার সঙ্গে আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডেকে দেখা যায়।

এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।