যেসব নায়িকার সঙ্গে কালজয়ী প্রেমিক দিলীপ কুমার
সিনেমাপ্রেমীদের কাছে ‘ট্র্যাজেডি কিং’ নামেই বেশি পরিচিত ভারতের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার। ১৯৪৪ সালে ‘বোম্বে টকিজের’ ব্যানারে ‘জোয়ার ভাটা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পদার্পণ তার। সিনেমার এই রঙিন দুনিয়ায় বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্যময় ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি।
পেয়েছেন আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা। বিশেষ করে রোমান্টিক ধাঁচের চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন প্রাণ জয় করে নিয়েছিলেন তিনি। হয়ে উঠেছিলেন কোটি তরুণীর স্বপ্নের নায়ক। সেক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বেশ ক’জন নায়িকার সঙ্গে তার কালজয়ী জুটি।
দিলীপ কুমার-মধুবালা
স্বপ্ন এবং নিয়তের উপর ভর করেই যাত্রা শুরু বলিউডের কালজয়ী এই জুটির। ১৯৫১ সালে তারানা সিনেমার শুটিং সেটে গিয়ে তাদের প্রথম পরিচয়। এরপর সাঙ্গদিল, আমার, মুঘল-এ-আজমের জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করে দর্শক মাতিয়ে দিয়েছেন তারা।
সিনেমার মতো বাস্তব জীবনেও হিট জুটি ছিলেন দিলীপ-মধুবালা। দুজনই দুজনকে মন প্রাণ উজার করে ভালোবেসেছিলেন। কিন্তু মধুবালার উচ্চবিলাসী বাবার কারণে সেই প্রেম টেকেনি। সরে যান দিলীপ কুমার। সেই রাগে ক্ষোভে মধুবালা অনেকটা দিলীপ কুমারকে দেখানোর জন্যই যেন বিয়ে করে বসেন কিশোর কুমারকে। সেই বিয়ে দারুণ আলোচনার জন্ম দিয়েছিলো।
দিলীপ কুমার-নার্গিস
রাজ কাপুরের সঙ্গে সুপারহিট জুটির নায়িকা নার্গিস দত্ত ৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন দিলীপ কুমারের সঙ্গে। ১৯৪৮ সালের ‘আনোখা পেয়ার’ দিয়ে প্রথম বড় পর্দায় আসা দিলীপ-নার্গিসের। এরপর দেদার, ইন মেলা, আন্দাজ, বাবুলের মতো জনপ্রিয় অনেক সিনেমাই উপহার দিয়েছে এই জুটি। প্রতিটি সিনেমায় দুজনের সাবলীল অভিনয় উপভোগ করেছেন ভক্তরা। তারা প্রেম করতেন বলে গুজব চাউর হয়েছিলো। তবে সেই প্রেম নিয়ে কখনোই মুখ খুলেননি কেউই।
দিলীপ কুমার-বৈজয়ন্তীমালা
নার্গিসের মতো বৈজয়ন্তীমালার সঙ্গেও দিলীপ কুমার সাতটি ছবিতে জুটি হয়ে কাজ করেছেন। সেগুলো হলেঅ দেবদাস (১৯৫৫), নয়া দৌড় (১৯৫৭), মধুমতি (১৯৫৮), পাইঘাম (১৯৫৯), গঙ্গা যমুনা (১৯৬১), নেতা (১৯৬৪), এবং সংঘর্ষ (১৯৬৮)। অনেকেই বলে থাকেন নার্গিসের চেয়েও বৈজয়ন্তীমালার সঙ্গে দিলীপ কুমারের জুটি বেশি সুপারহিট ছিল।
সিনেমার পাশাপাশি বাস্তবেও দুজনের প্রেম ছিলো বলে শোনা যায়। তবে দুই তারকাই বরাবর সেই সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন। স্ক্যান্ডাল-গুজব নিয়ে বৈজয়ন্তীমালার পরিবারে ঝামেলাও তৈরি হয়। যার কারণে দিলীপ কুমারের সঙ্গে ছবি করাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি।
দিলীপ কুমার-সাইরা বানু
জীবনের দুটি স্বপ্ন ছিল সাইরার, একটি অভিনেত্রী হওয়া অন্যটি দিলীপ কুমারকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পাওয়া। ভাগ্য রসিকতা করেনি সাইরার সঙ্গে। দুটো স্বপ্নই পরিপূর্ণ হয়েছে তার। ২২ বছরের সাইরাকে যখন বিয়ে করেন দিলীপ তখন তার বয়স ৪৪। বিয়ের পর এই জুটি গোপি, সাগিনার মতো জনপ্রিয় সিনেমাগুলো উপহার দেয়।
দিলীপ কুমার-মিনা কুমারী
দিলীপ কুমারকে বলা হয় ট্রাজেডি কিং আর তার রানী ছিলেন মীনা কুমারী। বলা হয়ে থাকে বিরহ-বেদনায় মীনার মতো করে আর কেউ নিজেকে উজার করে দিয়ে অভিনয় করতে পারতেন না। ১৯৫৫ সালে আজাদ নামক সিনেমায় প্রথমবারের মতো দেখা মেলে এই ট্রাজেডি কিং এবং ট্রাজেডি কুইনের। সিনেমাটির দুর্দান্ত সাফল্য তাদের আবার দেখা করিয়ে দেয় কোহিনূর সিনেমায়। দর্শকের দারুণ সাড়া থাকার কারণে ফুটপাত এবং ইয়াহুদী নামক সিনেমাতেও দেখা মিলে তাদের। বলিউডের আকাশে বাতাসে উড়েছিলো এই জুটিরও প্রেম কাহিনি।
দিলীপ কুমার-কামিনী কুশাল
বলিউডের জনপ্রিয় এই জুটির যাত্রা শুরু ১৯৪৭ সালের সাহেদ সিনেমা দিয়ে। প্রথম সিনেমাতেই সুন্দরী কামিনীর প্রেমে পড়ে যান তরুণ দিলীপ কুমার। তবে বিবাহিত থাকার কারণে দিলীপের প্রেম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন কামিনী। দুজনেরই প্রেম কাহিনী নিয়ে অনেকবারই গনমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন দিলীপ। স্ক্যান্ডালে বিরক্ত হয়ে ভেঙ্গে যায় জুটিটি। ১৯৪৮ সালে শবনম সিনেমা দিয়ে ইতি টানেন দিলীপ-কামিনী।
তবে কামিনীর সঙ্গে প্রেম নিয়ে দিলীপ কোনোদিন লুকোচুরি করেননি। তার ভাষ্য ছিল, জীবনের প্রথম প্রেমে পড়েন তিনি কামিনীর। তবে পারিপার্শ্বিকতা অনুকূলে না থাকার কারণে সেই প্রেম আর এগুয়নি।
এলএ/এমকেএইচ