জামিয়ার পাশে বলিউড, মর্মাহত হলিউড স্টার জন কিউস্যাক

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৩ এএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় সম্প্রতি পাস হওয়া বহুল বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে টালমাটাল গোটা ভারত। বিশেষ করে ফুঁসে উঠেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। সর্বশেষ প্রতিবাদ করেছে দিল্লির ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে গত পাঁচ দিন ধরেই সরব জামিয়ার ছাত্রছাত্রীরা। রোববার তারা আন্দোলনে নামলে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেধড়ক লাঠিপেটা করে। বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা জামিয়া মিলিয়া ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে কমপক্ষে ১০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

এই ঘটনায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন বলিউডের অনেকে। সহমর্মিতার বার্তা এসেছে হলিউড থেকেও। জামিয়া মিলিয়ার ছাত্রছাত্রীদের সমর্থনে টুইটারে ভিডিও পোস্ট করেছেন হলিউড স্টার জন কিউস্যাক।

সোমবার টুইটারে করা ওই পোস্টে জামিয়া মিলিয়ার শিক্ষার্থীদের প্রতি ‘সহমর্মিতা’ জানিয়েছেন কিউস্যাক। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে আহত শিক্ষার্থীদের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন ওই হলিউড অভিনেতা। একই সঙ্গে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে ক্যালিফোর্নিয়ার নাগরিকদের একটি প্রতিবাদের ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি।

জামিয়া মিলিয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বলিউডের অনেকেই। মোদি সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে আক্রমণ করে টুইট করেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ। লিখেছেন, ‘বিষয়টা অনেক দূর গড়িয়েছে…এখন আর চুপ থাকতে পারলাম না। এই সরকার সম্পূর্ণ ভাবেই ফ্যাসিস্ট…আর আমি ক্ষিপ্ত এজন্য যে, অনেকে এ ঘটনায় চুপ রয়েছেন।’

শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ‘নিউটন’-এর অভিনেতা রাজকুমার রাও-ও। জামিয়া মিলিয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে পুলিশ যে ব্যবহার করেছে আমি তার তীব্র নিন্দা করছি। গণতন্ত্রে নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার আছে। সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করারও নিন্দা করছি। সহিংসতা কোনো সমস্যার সমাধান নয়।’

এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন অধিনেত্রী সায়নী গুপ্তও। কয়েক দিন আগেই মোদির সঙ্গে একসারিতে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলেন বলিউডের এক ঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রী। টুইটে তাদের প্রতি ইঙ্গিত করে সায়নী লিখেছেন, ‘জামিয়া ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, আপনাদের একজনও যদি পুলিশি বর্বরতা ও সহিংসতার কথা মোদিকে টুইট বা মেসেজ করে জানাতেন!’

রোববার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে জামিয়ার শিক্ষার্থীরা মাঠে নামলে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। শিক্ষার্থীদের ফাঁসাতে বাসে আগুন লাগিয়ে দেয় পুলিশ। বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটাও করে পুলিশ। তার রেশ ধরেই রাতে ফের প্রতিবাদ শুরু হয় জামিয়ার ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, রোববার রাতে দিল্লি পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের নির্বিচারে মারধর করে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে দেশ জুড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শুরু হয়েছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ।

ভারতের রাজ্যসভায় ১২৫-৯৯ ভোটে পাস হয়েছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল। ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনে এই সংশোধনের ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে চলে আসা হিন্দু, শিখ, খ্রিষ্টান, জৈন, পারসি ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। শুধু এ সুযোগ পাবেন না মুসলমানরা। মুসলমানদের সম্পূর্ণ মাইনাস করেই বিলটি পাস করা হয়েছে।

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।