‘চলচ্চিত্রে ধর্ষণ হলেও রুজি-রুটির ব্যবস্থা হয়’
বেশ অনেকদিন ধরেই বিশ্বজুড়ে আলোচিত হচ্ছে অভিনয়ের সুযোগ পেতে অভিনেত্রীদের যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়। ডাকসাইটে সব অভিনেত্রীরাও ‘কাস্টিং কাউচ’ নিয়ে কথা বলছেন। অনেকেই নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথাও শেয়ার করছেন। এতে করে উঠে আসছে অনেক জনপ্রিয় পরিচালক ও প্রযোজকদের নাম।
তবে গেল কয়েকমাস বলিউডে এই বিষয়টি নিয়ে রীতিমত তোলপাড় চলছে। একের পর এক অভিনেত্রী ও নারী চলচ্চিত্রকর্মীরা দাবি করছেন, বলিউডে সুযোগ পেতে হলে যৌন সম্পর্ক করতে হয়। এবার এই কথা বললেন বি-টাউনের সিনিয়র কোরিওগ্রাফার সরোজ খানও। এই সরোজ খান বলিউডে শ্রদ্ধেয় একজন শিল্পী। নৃত্য-পরিচালনার জন্য তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারও পেয়েছেন।
সম্প্রতি এক দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী কাস্টিং কাউচের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন প্রায় নগ্ন অবস্থায়। সেই প্রসঙ্গেই গত মঙ্গলবার সরোজ খানের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল সংবাদ মাধ্যম। সেখানে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্পে ‘কাস্টিং কাউচ’ বলে যে কথাটি চালু আছে তা একেবারে গুজব নয়। এর সত্যতা রয়েছে। অনেকেই বলিউডে সুযোগ পেতে পরিচালক বা প্রযোজকদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করে থাকে।’
তবে সরোজ খান কাস্টিং কাউচ নিয়ে আরও কিছু কথা বলেন যা তাকে ভারতজুড়ে বিতর্কিত করে তুলেছে। তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্পে অন্তত এ ব্যাপারটা আছে যে মেয়েদের ‘ধর্ষণ করে ছেড়ে দেওয়া হয় না’। তাদের জীবীকার ব্যবস্থা করে এই শিল্প। ধর্ষিত হলেও অভিনেত্রীদের রুজি-রুটির ব্যবস্থা হয়ে থাকে।’
তার ওই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে সংবাদ সংস্থা পিটিআইএর কাছে আজ তিনি ওই মন্তব্যের জন্য দু:খপ্রকাশ করেন। তবে তাতে সামাজিক মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় থামেনি। একজন টুইট করেছেন - ‘কাস্টিং কাউচকে সমর্থন করা মানে তো ধর্ষণের পক্ষে কথা বলা!’ কেউ বলছেন, ‘মিজ খান সেই সত্যটাই প্রকাশ করে দিয়েছেন, যেটা সবাই আগে থেকেই জানত।’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘কারো রোজগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেই একটা অন্যায়, একটা অপরাধ করা যায় না।’
সরোজ খান মঙ্গলবার আরও বলেছিলেন, ‘সব ক্ষেত্রেই তো নারীদের যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়। সব ক্ষেত্রেই এটা চলে আসছে বহু যুগ ধরে। শুধু চলচ্চিত্র শিল্পের নাম নেওয়া হচ্ছে কেন? মেয়েদের কাছ থেকে সকলেই সুযোগ নিতে চায়। সরকারও চায়! সরকারে থাকা লোকজনরা যখন এটা করে তখন কেন কেউ কথা বলেন না? আপনারা শুধু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে পড়ে রয়েছেন!’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো নারী যদি এর মধ্যে যেতে না চায়, তাকে জোর করবে না কেউ। যদি অভিনয় শিল্প থাকে কারও মধ্যে, তাহলে সে এমনিতেই কাজ পাবে।’
এলএ/পিআর