বইমেলা
১৩তম দিনে এলো নতুন ১১০ বই
ভাষার মাসজুড়ে চলা অমর একুশে বইমেলায় প্রতিদিনই আসছে নতুন নতুন বই। মেলার ১৩তম দিনে নতুন বই এসেছে ১১০টি। যার মধ্যে গল্পের বই ৭টি, উপন্যাস ২৪টি, প্রবন্ধ ৫টি এবং কবিতার বই ২৯টি।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ যা হয়েছে বইমেলায়
এদিন বইমেলা বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ : সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আহমাদ মোস্তফা কামাল। আলোচনায় অংশ নেন হরিশংকর জলদাস এবং ফারজানা সিদ্দিকা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেন, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ যেভাবে তার পরবর্তী প্রজন্মের লেখকদের কাছে এক অনিবার্য প্রসঙ্গ হয়ে উঠলেন তা সত্যিই বিস্ময়কর। চল্লিশের দশকে পূর্ব বাংলার ভিন্নতর এক কণ্ঠস্বর নির্মাণের প্রয়াস যারা নিয়েছিলেন, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাদের মধ্যে অন্যতম। লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন তীব্র সংবেদনশীল, সচেতন, সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী এবং বহুমাত্রিক। সাদামাটা গল্প বলার ছলেই তিনি পাঠকদের নিয়ে গেছেন এক দার্শনিক উচ্চতায়, দৃশ্যমান করে তুলেছেন একটি জনগোষ্ঠীর সামষ্টিক চিন্তা-বিশ্বাস-সংস্কারের বিমূর্ত রূপ।
আরও পড়ুন>> বইমেলায় বসন্তের আমেজ
আলোচকরা বলেন, জনজীবনের ভাষাকেই সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তার সাহিত্যের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করেছেন। সমাজের ক্ষমতা ও ক্ষমতা-কাঠামোর সঙ্গে জনগণের মনোজগতের পারস্পরিক সম্পর্ক বা দ্বন্দ্বটি তার সাহিত্যে বিশেষ রূপ লাভ করেছে। সমাজের গভীরে দৃষ্টিপাত করে প্রান্তিক মানুষের সংকটকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি।
তারা বলেন, সমাজ ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় আকস্মিক ছন্দপতন তার গল্পের উপজীব্য হয়েছে। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ প্রাসঙ্গিকতা এখানেই যে তিনি অতীতের চরিত্রগুলোর সঙ্গে আমাদের একটি নিবিড় যোগসূত্র তৈরি করে দেন।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, সাহিত্যের ভেতর দিয়ে জীবনের বাস্তবতাকে তুলে ধরার নিপুণ কারিগর সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্। তার সাহিত্যে তিনি সমকালীন জনগোষ্ঠীর অনুভূতির কাঠামোকে ধারণ করেছেন। ফলে, শুধু আমাদের সময়েই নয় ভবিষ্যতেও সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ ও তার সাহিত্যকর্ম অনিবার্য এবং প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবে।
আজ ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন নাট্যকার ও অনুবাদক খায়রুল আলম সবুজ, গবেষক আফরোজা পারভীন, কবি শিহাব শাহরিয়ার এবং শিশুসাহিত্যিক কামাল হোসাইন।
এসময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি জাহিদ হায়দার, হেনরী স্বপন, শিহাব শাহরিয়ার, মতিন রায়হান, জুনান নাশিত, টিমোনী খান রিনো, সাকিরা পারভীন এবং মু. আহসান উল্লাহ ইমাম খান তমাল। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী নাসিমা খান বকুল, ফয়জুল্লাহ সাঈদ এবং চন্দ্রিমা।
বুধবারের বইমেলার সময়সূচি ও কার্যক্রম
আগামীকাল ১ ফাল্গুন ১৪৩০ (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) অমর একুশে বইমেলার ১৪তম দিন। ওইদিন মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
ওইদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন রাফাত আলম মিশু। আলোচনায় অংশ নেবেন সুজাতা হক এবং মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী।
আরএএস/এমকেআর/এমএস