বহুমুখী কাজে নিজেকে যুক্ত করেছে বাংলা একাডেমি
প্রতিষ্ঠার শুরুতে মূলত গবেষণায় মূল ঝোঁক থাকলেও ক্রমেই জনপ্রত্যাশার আহ্বানে বাংলা একাডেমি বহুমুখী কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছে। ফলে একাডেমির প্রকৃত গবেষণা কার্যক্রম মাঝেমধ্যে ব্যাহত হলেও একাডেমির কাছ থেকে বিচিত্রমাত্রিক সৃষ্টিকর্ম উপহার পেয়েছি।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : গবেষণা কার্যক্রম, অতীত থেকে বর্তমান শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ড. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মনসুর মুসা, ড. ভূঁইয়া ইকবাল, ড. আমিনুর রহমান সুলতান। আলোচনা সভায় ড. আবুল আহসান চৌধুরী লিখিত প্রবন্ধ তাঁর অনুপস্থিতিতে পাঠ করা হয়।
বক্তারা আরো বলেন, দেশের তরুণ গবেষকদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য-গবেষণায় আকৃষ্ট করার জন্য বাংলা একাডেমির একটি নতুন গবেষণা-পরিকাঠামো তৈরি করা প্রয়োজন। বঙ্গবিদ্যা চর্চার প্রতি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যুক্ত করার বিষয়টি এখন হীরকজয়ন্তী পেরিয়ে বাংলা একাডেমির জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।
প্রাবন্ধিক বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ষাট বছর যাবৎ বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়ে বাংলা একাডেমি অসাধারণ সব গবেষণাকর্ম সম্পাদন করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে একাডেমির গবেষণাকার্যে নতুন গতি সঞ্চার হয়েছে। দুই খন্ডে প্রকাশিত প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ (২০১২)-এর কল্যাণে বাংলা ভাষার বিজ্ঞানসম্মত প্রামাণ্য ব্যাকরণের অভাব মোচন হয়েছে। চার খন্ডে প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস গ্রন্থমালার। এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক খন্ডের চারটি পর্ব প্রকাশ পেয়েছে।
আরেকটি প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা প্রকাশিত হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতির একটি পূর্ণচিত্র লাভ সম্ভব হবে। চার খন্ডে পরিকল্পিত রবীন্দ্রজীবনীর দুটি খন্ড প্রকাশিত হয়েছে রবীন্দ্রজীবন (২০১২) নামে, লেখক- প্রয়াত আবদুশ শাকুর। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের রবীন্দ্রজীবনী ও প্রশান্তকুমার পালের রবিজীবনী-এর দৃষ্টান্ত থাকা সত্ত্বেও আবদুশ শাকুরের এই প্রয়াসের স্বাতন্ত্র্য ও গুরুত্ব স্বীকার করতে হয়।
সভাপতরি বক্তব্যে ড. মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গবেষণা কার্যক্রমে মনোযোগ দিয়ে আসছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের খ্যাতনামা পন্ডিত ও গবেষকবৃন্দ অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কোন স্বীকৃতির আশা না করে বাংলা একাডেমিতে যুক্ত থেকে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। যার মধ্য দিয়ে ভাষা ও সাহিত্যের অনেক নতুন তথ্য-তত্ত্ব উদঘাটিত হয়েছে। তবে এখন প্রয়োজন গবেষণা পদ্ধতির সনাতনি ধরণ পরিবর্তন করে বিশ্ব-গবেষণাধারায় একাডেমিকে যুক্ত করা।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সাদী মহম্মদ, খায়রুল আনাম শাকিল, ফেরদৌস আরা, রাহাত আরা গীতি, মহিউজ্জামান চৌধুরী এবং নার্গিস চৌধুরী।
এএসএস/এমএইচ/আরএস/পিআর