তৃতীয় দিনেই জমজমাট বইমেলা
তৃতীয় দিনেই জমজমাট অমর একুশে বইমেলা। বিভিন্ন বয়সের নানা পেশার মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। অন্যান্য বছর যেখানে বইমেলা শুরুর সপ্তাহখানেক পর পাঠক-দর্শনার্থীদের আসা শুরু হতো, সেখানে এবারের মেলায় প্রথম থেকেই মানুষের বেশ উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, সাড়ে সাত লাখ বর্গফুট জুড়ে আয়োজিত এবারের বইমেলার প্রায় পুরোটা জুড়ে মানুষের জটলা, আড্ডা, ঘোরাঘুরি। পরিবার, সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব কিংবা দলবদ্ধভাবে সবাই ঢুকছে বইমেলা প্রাঙ্গণে। মেলায় আগতদের বেশিরভাগই বাংলা একাডেমির অংশ থেকে ঘুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে প্রবেশ করছেন।
দর্শনার্থীরা জানান, বইমেলার বাংলা একাডেমির অংশ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তারা। বাংলা একাডেমির অংশে সরকারি বা বিভিন্ন সংগঠনের স্টল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের স্টলগুলোতে সব শ্রেণি, মত, লেখকের বই পাওয়া যায়। আলোচিত বইগুলোর বেশিরভাগই পাওয়া যাচ্ছে উদ্যান অংশে। লেকের ভিউ, মুক্তমঞ্চসহ একদম খোলা জায়গায় ঘুরে ঘুরে বই কিনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোদ করছেন তারা।
‘বেহুলা বাংলা’ স্টলের বিক্রয়কর্মী আবির হাসান শাকিল জাগো নিউজকে বলেন, এবারের বইমেলায় শুরু থেকেই অনেক দর্শনার্থী আসছেন। মেলায় যত বেশি দর্শনার্থী আসবেন বিক্রিও তত বেশি হবে। প্রথম থেকে যেভাবে দর্শনার্থী আসছেন তাতে আশা করা যায় এবারের বইমেলা সবচেয়ে বেশি জমজমাট হবে। শেষ পর্যন্ত যদি মানুষের এমন সমাগম থাকে তাহলে প্রকাশকরা গতবারের দুঃখ ভুলে এবার সুখের হাসি হাসতে পারবেন।
ফারহানা রুমা নামে এক দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। তিনি ১৭ বছর ধরে মেলায় আসছেন। এবার তার স্বামীর বই প্রকাশ উপলক্ষে প্রতিদিনই মেলায় আসছেন।
তিনি বলেন, এবারের বইমেলায় মানুষ যেভাবে আসছেন তা দেখে বোঝা যাচ্ছে যে পরবর্তী দিনগুলোতে মেলা আরও জমজমাট হবে। করোনার কারণে এতদিন হাঁসফাঁস করা মানুষও একটু ঘোরার জন্য মেলায় চলে আসছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে মেলায় শিক্ষার্থীদের আনাগোনাও বাড়বে। সব মিলিয়ে এবারের বইমেলা মনে হচ্ছে জাতির কাছে নতুন ইতিহাস হয়ে থাকবে।
হাওলাদার প্রকাশনীর প্রকাশক মোহাম্মদ মাকসুদ জাগো নিউজকে বলেন, অনেকদিন ধরে মানুষ এ রকম একটা আয়োজনের অপেক্ষায় ছিল। ‘ঘরবন্দি’ মানুষ এই সুন্দর সুযোগ পেয়ে চলে আসছেন বইমেলায়। বইমেলার পরিবেশ অন্য যে কোনো মেলা থেকে খুবই মনোরম। ব্যবসায়িক দিক থেকে মনে হয় এবার অনেক বেশি বই বিক্রি হবে।
আল সাদী ভূঁইয়া/ইএ/এএসএম