না পাওয়ার বেদনা থেকেই আজো খুঁজি তারে : ফরিদুল ইসলাম নির্জন


প্রকাশিত: ০৬:৫৬ এএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

চলছে অমর একুশে বইমেলা। এবারের বইমেলায় এসেছে তরুণ কথাসাহিত্যিক ফরিদুল ইসলাম নির্জনের উপন্যাস ‘আজো খুঁজি তারে’। সম্প্রতি তিনি মুখোমুখি হয়েছেন জাগো নিউজের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবীবাহ্ নাসরীন।

জাগো নিউজ : নতুন বই সম্পর্কে কিছু বলুন-
ফরিদুল ইসলাম নির্জন : এবার আমার একটা উপন্যাস আসছে। বইটি প্রকাশ করেছে জাগৃতি প্রকাশনী। ‘আজো খুুঁজি তারে’ বইটির নাম। প্রিয়জনকে পাওয়ার যেমন আনন্দ আছে; ঠিক তেমনই আছে না পাওয়ার বেদনা। না পাওয়ার বেদনা থেকেই হয়ত একটা সময় কাউকে খুঁজে বেড়ায়। প্রিয়জনের শূন্যতা উপলব্ধি হয়। সেই উপলব্ধি থেকেই এক ভিন্ন ধারার রোমান্টিক উপন্যাস ‘আজো খুঁজি তারে’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ারমেটের প্রেমকাহিনি নিয়ে উপন্যাসটি রচিত হয়েছে। উপন্যাসটি কখনো হাসাবে, কখনো রোমান্টিকতায় ডুবিয়ে দেবে। আবার কখনো হয়ত চোখের জল চলে আসাতে বাধ্য করবে। উপন্যাসে ঢাবির শিক্ষার্থীদের হল জীবন, ক্যাম্পাসে আড্ডাবাজি, প্রথম ঢাকা আসার স্মৃতি, ক্লাসের ধরন, গ্রামের পটভূমিসহ আরো অনেক কিছু উঠে এসেছে। মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের ঢাবিতে চলাচলের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই উপন্যাসে। উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন ফাহিম ও তমা।

জাগো নিউজ : বইমলোয় আপনার প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা কী?
ফরিদুল ইসলাম নির্জন : একজন লেখকের জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি পাঠকের কাছে তার লেখা পৌঁছানো। যেটা বইমেলার মাধ্যমে সম্ভব। আমার প্রাপ্তি আমি লিখতেছি। হয়ত পাঠকের কাছে কতটুকু পৌঁছাতে পেরেছি আর কতটা পারবো তা এখন সময়ের দাবি। তবে বড় প্রাপ্তি প্রকাশকরা নিজ ইচ্ছায় আমাদের বই প্রকাশ করছে। হয়ত আমরা পাঠককে কিছু দিতে পারবো বলেই তো তাদের এত আগ্রহ।

nirzon

একজন লেখক হিসেবে বড় প্রত্যাশা হলো বই যেন পাঠকের হাতে পৌঁছাতে পারি। প্রকাশকরা আগ্রহ নিয়ে আমাদের বই প্রকাশ করছে। তারা যেন কোন ক্ষতির সম্মুখীন না হন। আর সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা বইটি যেন পাঠক বেছে নেয়। তাদের মনের মত যেন হয়।

জাগো নিউজ : সমকালীন সাহিত্য নিয়ে আপনার ভাবনা-
ফরিদুল ইসলাম নির্জন : সমকালীন সাহিত্য নিয়ে আমার তেমন ভাবনা নেই। তবে আমার কাছে বর্তমান তরুণদের লেখা অনেক ভালো লাগে। একে অপরের সমালোচক এবং সহযোগী। যেটা ভালো সাহিত্য প্রসারের একটা নব সূচনা। বর্তমান তরুণরা অনেক ভালো লিখছেন। তারা একে অপরের লেখার সঙ্গে নিজের লেখা তুলনা করছেন। এতে ভালো সাহিত্য বেরিয়ে আসবে। আমার কাছে কেন জানি মনে হচ্ছে বর্তমান তরুণদের লেখা বাংলা সাহিত্যে এক ঝলক দেখাবে। আমি নিজেও তরুণ। আমি দেখছি আমার সাহিত্যিক বন্ধুরা আমাকে অনেক সহযোগিতা করছে। ভবিষ্যতে আমরা একে অপরের সহযোগী হিসেবেই বাংলা সাহিত্যের নতুন ধারা সৃষ্টি করতে চাই।

জাগো নিউজ : সমকালীন লেখকদের মধ্যে কাদের লেখা ভালো লাগে?
ফরিদুল ইসলাম নির্জন : অনেকের লেখাই আমার ভালো লাগে। যেটা নাম লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। সমকালীন অনেক লেখকের কাছে আমি চুল থেকে নখ পর্যন্ত ঋণী।

জাগো নিউজ : বাংলা সাহিত্য নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা-
ফরিদুল ইসলাম নির্জন : আমি অতি ক্ষুদ্র মানুষ হলেও বাংলা সাহিত্য নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা আছে। আমি চাই দেশে পাঠাভ্যাস বৃদ্ধি পাক। এ জন্য লাইব্রেরি বাড়ানো দরকার। যেটা আমাদের দেশে নেই বললেই চলে। খুব দুঃখজনক একটা ব্যাপার। এটা নিজ উদ্যোগে নিজ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন- এমনকী গ্রাম পর্যায়ে লাইব্রেরি থাকা উচিত। যেটা আমাদের দেশে খুব বিরল। আমাদের দেশে অনুবাদকের খুব অভাব। ভালো অনুবাদক দ্বারা বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে আরো বিস্তৃত করা যেতে পারে।

nirzon

জাগো নিউজ : সাহিত্যের কোন শাখা আপনার বেশি ভালো লাগে?
ফরিদুল ইসলাম নির্জন : আমি একসময় কবিতা লিখতাম। অনেক কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। শ্লেটে চক দিয়ে প্রথম কবিতার বর্ণমালা আঁকতে শিখেছি। পরে অবশ্য কথাসাহিত্য নিয়ে কাজ করছি। যদিও কবিতা থেকে আমি দূরে সরে গেছি। মাঝেমধ্যে কবিতা আমায় এখনো ডাকে। লিখতে বাধ্য করে। তবে কবিতা থেকে কথাসাহিত্যই বর্তমানে বেশি ভালো লাগে। আমি কথাসাহিত্য নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই।

জাগো নিউজ : লেখালেখির ক্ষেত্রে আপনার অনুপ্রেরণা কে?
ফরিদুল ইসলাম নির্জন : আমার মমতাময়ী মা। যিনি আজ না ফেরার দেশে। যার অবদানের কথা লিখে শেষ করতে পারবো না। আমার বই পড়া দেখে পাড়ার অনেক মানুষ বলতো, ‘তোমার ছেলে পাগল হয়ে গেছে।’ মা বলতেন, ‘পাগল হলে তো আমার ছেলেই হবে। আমার পাগল সন্তানই ভালো।’ তার এমন কথা আমাকে লেখার প্রেরণা জোগাতো। বলতে পারেন মায়ের প্রেরণায় আমি লিখতে শিখেছি।

জাগো নিউজ : আপনার এবং আপনার প্রকাশিত উপন্যাসের জন্য শুভকামনা।
ফরিদুল ইসলাম নির্জন : জাগো নিউজকে এবং আপনাকে ধন্যবাদ কিছু বলার সুযোগ দেয়ার জন্য।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।