মানুষের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন জিল্লুর রহমান
অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী ছিলেন সদা নিম্নকণ্ঠ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানুষের অধিকারের পক্ষে সবসময় সোচ্চার। অপরদিকে, আমাদের কবিতা, গদ্য ও অনুবাদ সাহিত্যে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর ভূমিকা অসাধারণ।
বই মেলার ১৬তম দিনে সোমবার বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান তাকে এভাবে স্মরণ করা হয়। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আহমেদ রেজা।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক শাহীনুর রহমান, রাশিদ আশকারী এবং মোহাম্মদ জয়নুদ্দীন। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী।
প্রাবন্ধিক বলেন, আমাদের কবিতা, গদ্য ও অনুবাদ সাহিত্যে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর ভূমিকা অসাধারণ। সৃষ্টিশীল সাহিত্যে যেমন তাঁর প্রতিভার প্রকাশ ঘটেছে তেমনি বাংলা একাডেমির ইংরেজি-বাংলা অভিধান সম্পাদনায় তাঁর কৃতিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ১৯৯০-৯১ মেয়াদকালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর মেধা, দক্ষতা ও দায়বদ্ধতার স্বাক্ষর রেখেছেন।
এছাড়া পাকিস্তান আমলে রাজশাহী থেকে মুস্তাফা নূরউল ইসলামের সঙ্গে যুগ্মভাবে পূর্বমেঘ পত্রিকা সম্পাদনা এবং এই পত্রিকার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি শাসকচক্রের সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী মনোবৃত্তির বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই পরিচালনা করেছেন। তাঁর সাহিত্যবিষয়ক প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং সমাজ-রাজনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক কলাম আমাদের মননচর্চায় নতুনতর মাত্রা যোগ করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আলোচক বলেন, সদা নিম্নকণ্ঠ জিলুর রহমান সিদ্দিকী মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানুষের অধিকারের পক্ষে সবসময় সোচ্চার ছিলেন। অজাতশত্রু মানুষটি যেমন ছিলেন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও প্রশাসক তেমনি সামাজিক দায়িত্ববোধের দিক থেকেও তিনি ছিলেন তুলনারহিত। সুরুচি ও স্নিগ্ধতার আবহে সারাটি জীবন তিনি শুভ ও কল্যাণের বার্তা বহন করে গেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, সত্য ও সুন্দরের সাধনা ছিল জিলুর রহমান সিদ্দিকীর জীবন চলার পাথেয়। তাঁর লেখকসত্তার সঙ্গে প্রশাসকসত্তার কোন বিরোধ ছিল না। দেশ ও জাতির বৃহত্তর ভুবনে তাঁর আদর্শিক পদচারণা ভবিষৎ-প্রজন্মের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল- আতিকুর রহমান উজ্জ্বলের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘ভোরের পাখি’র শিল্পীদের পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন ফাহিমা হোসেন চৌধুরী, খায়রুল আনাম শাকিল, চঞ্চল খান, ইয়াসমিন মুশতারী, মকবুল হোসেন, চৌধুরী মোস্তাক হোসেন, অচিন্ত কুমার হাজং, বিবেকানন্দ দাস এবং মোহাম্মদ হানিফ।
যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন- গৌতম মজুমদার (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), আবু কামাল (বেহালা), নাজমুল আলম খান (মন্দিরা) এবং রবিনস চৌধুরী (কী-বোর্ড)।
এসএ/আরএস