এবারের বইমেলা একটি স্মার্টমেলা
লুৎফর রহমান রিটন। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান ছড়াকার। ছোট-বড় সকলের কাছে সমান জনপ্রিয় তিনি। ছোটদের তিনি খুব ভালোবাসেন, এই ভালোবাসার জায়গা থেকে তিনি ছোটদের জন্য নিরলসভাবে লিখে যাচ্ছেন। লেখার মাধ্যমে মানুষকে হাসিয়ে তিনি সুখ খুঁজে পান, তার ছড়া পড়লেই বারবার সেটা প্রমাণিত হয়। বই যেমন তিনি ভালোবাসেন, তার চেয়ে বেশি ভালোবাসেন নিজের দেশকে। আর সে জন্যই প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস এলেই কানাডা থেকে ছুটে আসেন প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের কাছে, বইয়ের কাছে, বইমেলার কাছে। তার সাথে কথা হয় মেলা ও শিশুসাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে -
এবারের মেলা কেমন লাগছে?
-এবার বলে আমার কাছে কিছু নেই, বইমেলা সবসময় আমার কাছে ভালো লাগে। তবে এবারেরর মেলা অনেক আধুনিক, বিস্তৃত। মেলার পরিসর এতো বেশি বড় যে আমি মেলায় ঘুরতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি। সহজ কথায় বলতে পারি এবারের মেলা হচ্ছে একটি স্মার্ট মেলা, আন্তর্জাতিক মেলা।
মেলার পরিবেশ নিয়ে কিছু বলুন-
-মেলার পরিবেশ অনেক ভালো, একদম ছিমছাম, মানুষের গিজগিজ নেই। অনেক বেশি জায়গা থাকাতে সবাই খুব সহজে ঘুরতে পারছে, একটু বেশি সময় নিয়ে বেছে বেছে সবাই পছন্দের লেখকের বই কিনতে পারছে। তাছাড়া মেলার মধ্যে বসার জন্য জায়গা বানানো হয়েছে যা আমার কাছে খুব চমৎকার একটি আয়োজন মনে হয়েছে। এবারের পরিবেশ নিয়ে আমি খুব খুশি।
শিশুদের নিয়ে কি বলতে চান?
-শিশুরাই তো আমাদের স্বপ্ন, আমাদের আশা ভরসার প্রতীক। শিশুদের বেশি বেশি বই পড়তে দিতে হবে। এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। শিশুরা এগিয়ে গেলেই তো আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। আমি মনে করি দেশের জন্য হলেও আমাদের শিশুদের হাতে বই তুলে দিতে হবে।
এখনকার শিশুরা বইবিমুখ, আমরা কীভাবে তাদেরকে বইমুখী করতে পারি?
-তোমার কথা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে সেটা তো আমাদের জন্য ভয়ানক খবর। আমাদের অবশ্যই এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমি মনে করি আমাদের কিছু ঘাটতি থাকতে পারে আর তাই শিশুরা বইবিমুখ। আমাদের বুঝতে হবে শিশুরা কী চায়। তারা যা চায় তাদেরকে সেটা দিতে হবে। তাহলে তারা বই পড়বে। আমার মনে হয় শিশুদের বইগুলো শিশুদের মনের মতো হলে অবশ্যই তারা বই পড়বে। আর অভিভাবকদের উচিৎ হবে শিশুদের হাতে ভালোমানের বই তুলে দেওয়া।
আমাদের শিশুসাহিত্য নিয়ে কিছু বলুন
-আমাদের শিশুসাহিত্য অনেক সমৃদ্ধ, তবে শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্য যে শিশুসাহিত্যিকরা সবসময় অবহেলিত। তাদেরকে সঠিকভাবে মূল্যায়ণ করা হয় না। এমনকি তারা নিজের পরিবারের কাছেও অবহেলিত। তাই অনেকে শিশুসাহিত্য নিয়ে কাজ শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে পারেন না বা রাখেন না।
ভক্তদের অটোগ্রাফ দিতে আপনার কেমন লাগে?
-অবশ্যই ভালো লাগে। আমি তো লিখি পাঠকদের জন্য। তাই যখন কেউ এসে অটোগ্রাফ চায় তখন অনেক ভালো লাগে। এই অনুভূতি বলে প্রকাশ করা সম্ভব না। এটাতো একজন লেখকের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
-তোমাকে ও তোমাদের টিমকেও ধন্যবাদ। তোমাদের জন্য শুভকামনা থাকলো।
আরকে/বিএ/আরআইপি