বইমেলায় মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ অনূদিত আলবেয়ার ক্যামুর ‘প্লেগ’
অমর একুশে বইমেলায় এসেছে মোহাম্মদ আসাদুল্লাহর অনুবাদগ্রন্থ আলবেয়ার ক্যামুর উপন্যাস ‘প্লেগ’। উপন্যাসটি পাওয়া যাচ্ছে মেলার ১৪৭-৪৮ নাম্বার ‘ঘাসফুল’ প্রকাশনীর স্টলে। উপন্যাসটির প্রচ্ছদ করেছেন নির্ঝর নৈঃশব্দ।
‘প্লেগ’ অনুবাদ করতে গিয়ে অনুবাদক মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ যেসব অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গেছেন, সেসব প্রসঙ্গে বলেন, ‘বইটা অনুবাদ করতে গিয়ে আমি প্রতিমূহূর্তেই আলোড়িত হয়েছি সাম্প্রতিক অতিক্রান্ত করোনা অতিমারীর সাথে বিভিন্ন পরিসরে এর মিল দেখে! তবে দুঃখজনক হলো করোনা নিয়ে এখনো এমন মহাকাব্যিক কোনো লেখা হয়নি।’
‘প্লেগ’ উপন্যাস লেখা হয়েছে গল্পের প্রধান প্রোটাগনিস্ট ডাক্তার রিও’র দিনপঞ্জির আঙ্গিকে। প্লেগ শেষ হয়ে গেছে অথবা সাময়িকভাবে শেষ হয়েছে—এমন একটা পরিস্থিতিতে ওরান শহরের অধিবাসীরা আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। তাদের আনন্দময়তার ভিড়ে হারিয়ে যেতে থাকে সব মৃত্যু ও আত্ম-উৎসর্গ। ঠিক তখনই রিও সিদ্ধান্ত নেয় এই কাহিনিকে লিপিবদ্ধ করার। কারণ উপন্যাসের বর্ণনা থেকে নিচে দিলাম- অন্ধকারের মধ্যে সোপানের দেয়ালের দিকে এগিয়ে আসা বিরাট আয়তনের ঢেউ ও দীর্ঘস্থায়ী কোলাহলের মধ্যে রঙিন আগুনের ঘন ছানি পড়ছিল। সেই সময়ে রিও সিদ্ধান্ত নিলো এই কাহিনি সংকলন করার; যাতে সে যেন কেবল যারা শান্তিতে আছে তাদের অন্তর্ভুক্ত না হয়ে প্লেগে আক্রান্ত জনগণের পক্ষেও সাক্ষ্য দিতে পারে; যাতে তাদের প্রতি করা অবিচার ও অত্যাচারের স্মৃতি কিছুটা হলেও সহনীয় হয়; যাতে আমরা বলতে পারি মহামারির সময়েও মানুষের মধ্যে ঘৃণা করার চেয়ে প্রশংসা করার বেশি জিনিস থাকে।
তবে সে জানত যে, তার বলা কাহিনির মধ্য দিয়ে কোনো চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করা সম্ভব নয়। কারণ, সে শুধু লিপিবদ্ধ করেছে তাকে, যা করতেই হতো এবং নিশ্চিতভাবে বারবার যা করতেই হবে অন্তহীন ভয়ের নির্দয় আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য। কেবল সে নয়, এটা করতে হবে অন্যদেরও, যারা ব্যক্তিগত দুর্বিপাক ও যন্ত্রণা সত্ত্বেও সন্ন্যাসী হওয়ার যোগ্যতা রাখে না, কিন্তু আবার মহামারির কাছে নত হতেও চায় না। বরং তাদের সর্বোতভাবে চেষ্টা থাকে আরোগ্যাকারী হওয়ার।
এসইউ/জেআইএম