সুশৃঙ্খল একটি মেলা দেখতে চাই: চাণক্য বাড়ৈ

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ , লেখক ও সাংবাদিক
প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

চাণক্য বাড়ৈ একাধারে কবি, কথাশিল্পী ও ছড়াকার। তিনি ১৯৮৪ সালের ১ অক্টোবর বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার রায়গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মা পিপাসা বাড়ৈ, বাবা চিত্তরঞ্জন বাড়ৈ। এসএস নিকেতন খালিশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, চিতলমারী শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাপচিত্র বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। তিনি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিতকতা শেষে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউ পিটিআইতে ইন্সট্রাক্টর পদে কর্মরত।

তার প্রকাশিত বই কবিতাগ্রন্থ—পাপ ও পুনর্জন্ম (২০১২), চাঁদের মাটির টেরাকোটা (২০১৫), সুন্দরবন সিরিজ (২০২১), উপন্যাস—কাচের মেয়ে (২০১৯), জলমানুষ (২০২০), ছড়াগ্রন্থ—এলিয়েন (২০১৯)। তিনি কবিতা বিভাগে ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কর ২০২১’ লাভ করেছেন।

সম্প্রতি বইমেলা ও বই প্রকাশ সম্পর্কে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কবি ও কথাশিল্পী সালাহ উদ্দিন মাহমুদ—

জাগো নিউজ: আগামী বইমেলায় আপনার কয়টি বই প্রকাশিত হচ্ছে?
চাণক্য বাড়ৈ: আগামী বইমেলায় শিশুদের জন্য একটি সচিত্র গল্পের বই প্রকাশিত হবে। বইয়ের নাম ‘আলোর পরি’। প্রকাশ করছে প্রসিদ্ধ পাবলিশার্স। এছাড়া এ বছর প্রকাশিত মৌলিক থ্রিলার ‘খুনলিপি’ আসছে ভাষাচিত্র প্রকাশনী থেকে।

আরও পড়ুন: স্টল বিন্যাসে বৈষম্য দূর হওয়া দরকার: প্রিন্স আশরাফ

জাগো নিউজ: বাংলা একাডেমি আয়োজিত আগামী বইমেলা কেমন দেখতে চান?
চাণক্য বাড়ৈ: সুশৃঙ্খল একটি মেলা দেখতে চাই, যেখানে ভালো বইগুলো খুঁজে পেতে পাঠককে হয়রান হতে হবে না। পূর্বের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, মেলাটিতে ভূঁইফোঁড় প্রকাশনী এবং সাহিত্য সংশ্লিষ্ট নয় এমন অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে প্রয়োজনীয় বইটি বা স্টলটি খুঁজে পাওয়া পাঠকের পক্ষে খুবই ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে। তা ছাড়া সৃজনশীল বইয়ের নামে তথাকথিত সেলিব্রেটিদের এমন কিছু মলাটবদ্ধ প্রকাশনা বের হয়। এর ফলে সৃষ্ট ক্রেতার ভিড় ঠেলে একজন পাঠক তার উদ্দিষ্ট স্টলে যেতে পারেন না। আমি আশা করব, আগামী বইমেলা এসব উৎপাত থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকবে।

জাগো নিউজ: আপনার দেখা বিগত বইমেলায় কোনো অসংগতি চোখে পড়েছে?
চাণক্য বাড়ৈ: প্রধান অসংগতি স্টলের নম্বর বিন্যাসে। ঢাকা শহরের বাড়ির নম্বরের মতো একটি নির্দিষ্ট স্টল খুঁজে বের করা যেন যুদ্ধ জয় করার মতো ব্যাপার। এটি মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। আধুনিক মেলায় স্টল বিন্যাস হতে হবে সুপরিকল্পিত। কিছু দূর পরপর দিকনির্দেশনা সম্বলিত স্টল বিন্যাসের মানচিত্র (স্টলের নম্বরসহ) থাকলে খুবই ভালো হয়। আর মেলার পরিসর এত বড় হওয়াও খুব প্রত্যাশিত নয় বলে মনে করি। একজন স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের পক্ষে স্বচ্ছন্দে হেঁটে পুরো মেলা কাভার করার ক্ষমতার সাথে এই পরিসর খুবই অসংগতিপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। এটি প্রকাশকদের জন্যও সমান সুযোগের অন্তরায়। যে স্টলটি দূরে, কোনাকাঞ্চির মধ্যে পড়ে গেল ওই প্রকাশক কিন্তু সারাবছরের জন্য ক্ষতির সম্মুখীন হলেন।

জাগো নিউজ: বইমেলায় বইয়ের বিক্রি বাড়ছে নাকি কমছে?
চাণক্য বাড়ৈ: প্রতি বছরের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে তো বলতে হয়, বই বক্রি বেড়েছে। কিন্তু সৃজনশীল বা মননশীল বইয়ের বিক্রি বোধহয় বাড়ছে না। এটি খুব একটা সুখকর বিষয় নয়। মোটিভেশনাল বই, ভাষা শিক্ষা, সেলিব্রেটিদের বই বিক্রির কারণেই বেচাবিক্রির হিসেবের অঙ্ক বাড়ছে। এটি একটা জাতির চিন্তাপ্রবৃত্তির ইতিবাচক প্রবণতার প্রমাণক নয়।

আরও পড়ুন: টাকা দিয়ে বই প্রকাশে আগ্রহী নই: জোবায়ের মিলন

জাগো নিউজ: বইয়ের প্রচারণাকে কোন দৃষ্টিতে দেখেন?
চাণক্য বাড়ৈ: কেউ যদি ছুটির দুপুরে খিচুড়ি রান্না করে ফেসবুকে তার ছবি পোস্ট করেন, সেটিও তো আমাকে বা আপনাকে দেখতে হচ্ছে। না চাইলেও দেখতে হচ্ছে। তাহলে বইয়ের প্রচারণাকেও আমাদের স্বাভাবিক ধরে নেওয়া উচিত। অন্তত আমি মনে করি, বইয়ের প্রচারণা বরং বেশি বেশি হওয়া দরকার।

জাগো নিউজ: বইমেলার পাঠকের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?
চাণক্য বাড়ৈ: একজন পাঠক হিসেবে আমি সব সময় ভালো বইটির খোঁজ করি। সবাই একটি বই লাইন ধরে কিনছে অথবা ফেসবুকে একটি বইয়ের নাম ভাইরাল হয়ে গেল বলে আমিও সেটি কিনে ফেলি না। বইয়ের বিষয় এবং লেখক সম্পর্কে ধারণা নিয়ে তবেই আমি একটি বই সংগ্রহের চেষ্টা করি।

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।