প্রথম বই সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের মতো: সুুমনা গুপ্তা
সুমনা গুপ্তা কবি, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, পাক্ষিক ও ম্যাগাজিনের সাহিত্যপাতায় কবিতা ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কলাম লেখেন। শিক্ষাজীবনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বোর্ড স্ট্যান্ড করেন। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক দম্পতি শংকর প্রসাদ গুপ্ত ও অঞ্জলি রায় গুপ্তার একমাত্র সন্তান সুমনা গুপ্তা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করেন। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ভাষাবিজ্ঞান লেখকের পছন্দের বিষয়। এবারের বইমেলায় তার প্রথম কবিতার বই প্রকাশ হয়েছে।
তার লেখালেখি, বই প্রকাশ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কথাশিল্পী ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ—
জাগো নিউজ: এবারের বইমেলায় আপনার কয়টি বই প্রকাশ হয়েছে?
সুমনা গুপ্তা: এবার বইমেলায় আমার একটি কবিতার বই প্রকাশ হয়েছে। এটাই আমার প্রথম বই। বইটির নাম ‘মায়াভরা আঙিনার পথ’। বইটি প্রকাশ হয়েছে শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে।
আরও পড়ুন: আমাকে প্রতিনিয়তই লিখতে হয়: রাকিব হাসান
জাগো নিউজ: প্রথম বই প্রকাশের অনুভূতি সম্পর্কে যদি বলতেন—
সুমনা গুপ্তা: প্রথম যে কোনো কিছুই এক অন্যরকম অনুভূতি দেয়। আর কোনো কিছু সৃষ্টি তো আরও অপার্থিব এক আনন্দ দেয়। আসলে, যে কোনো সৃষ্টিশীল মানুষের কাছেই প্রতিটি সৃষ্টিই এক অনন্য অনুভূতির। প্রথম বই তো সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের মতো।
জাগো নিউজ: এবারের বইমেলার আবহ নিয়ে কী বলবেন?
সুমনা গুপ্তা: বইমেলায় যত মানুষ আসে; তার অর্ধেক মানুষও যদি বই কিনে পড়তেন, তাহলে জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন বা অগ্রযাত্রা আরও ত্বরান্বিত হতো। কিন্তু আমরা আসলে ইদানীং ফেসবুক নির্ভরশীল জাতিতে পরিণত হচ্ছি। যার কারণে আগের মতো মেলা নিয়ে মানুষের সেই চাঞ্চল্য নেই। তবে বইমেলার পরিবেশ এবং নিরাপত্তা দুটোই ভালো।
জাগো নিউজ: সমকালীন সাহিত্যচর্চা সম্পর্কে আপনার অভিমত জানতে চাই—
সুমনা গুপ্তা: সাহিত্যের নানাবিধ দিক রয়েছে। তবে আমি মনে করি, গবেষণানির্ভর নতুন তথ্যনির্ভর বই আরও প্রকাশিত হওয়া উচিত। একটি জাতির শিক্ষার প্রাথমিক স্তম্ভ হলো জ্ঞান আহরণ করা। মেধার বিকাশের জন্য বইপড়ার বিকল্প কিছু নেই। সাহিত্যে অনুরাগ মানুষের জীবনধারণকে শৈল্পিক করে তোলে। সাহিত্যচর্চা বেশি বেশি হলে আমাদের তরুণ সমাজ মননশীলতা বা সৃষ্টিশীলতার দিকে ধাবিত হবে। তাহলেই আগামীতে একটি সুন্দর দেশ ও জাতি গড়া সম্ভব।
জাগো নিউজ: লেখালেখি করতে এসে কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন?
সুমনা গুপ্তা: যে কোনো কাজ শুরু করলে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা এমনিতেই তৈরি হতে পারে। তবে আমি যেহেতু শিক্ষকতা পেশায় আছি; সেহেতু লেখালেখি বা গবেষণা করা আমার কাজেরই অংশ। তাই তেমন বাধা আসেনি। তবে অনেকেই হাসির ছলে কিছু কটু কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: যে কোনো পুরস্কার আনন্দ-প্রাণসঞ্চারি: সেলিনা শেলী
জাগো নিউজ: লেখক জীবনে কার দ্বারা বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছেন?
সুমনা গুপ্তা: পারিপার্শ্বিক পরিবেশের দ্বারা। এ ছাড়াও আমার পারিবারিক আবহে অনেকেই লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। ছোটবেলায় বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণা ছিল। কিছু ভালো বন্ধুও সেই অনুপ্রেরণার সাথী। আসলে অনুপ্রাণিত হয়ে মানুষ সামনের দিকে নিজেকে এগিয়ে নেয়। প্রতিটি মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে কেউ না কেউ থাকে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জাগো নিউজ: লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
সুমনা গুপ্তা: লেখা চালিয়ে যেতে চাই আজীবন, কোনো মোহ ছাড়াই। ভবিষ্যৎ বলা কঠিন। তবে যতদিন সৃষ্টিশীলতা ভেতরে থাকবে; ততদিন কলমও সঙ্গীর মতো সঙ্গেই থাকবে।
জাগো নিউজ: ব্যস্ততার মাঝেও মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সুমনা গুপ্তা: আপনাকেও ধন্যবাদ। আমাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়ায় জাগো নিউজের জন্য অশেষ শুভ কামনা রইল।
এসইউ/এএসএম