মেলার কূল ভাঙলো ভালোবাসার ঢেউয়ে

সায়েম সাবু
সায়েম সাবু সায়েম সাবু , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৮ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

যে বাগানের ফুলের মালা, সে বাগানের মালি না বুঝি কত রসিক! রসের রসিক না হলে কি সে ফুলে এমন রূপ মেলে! দূর দেশ থেকে ফুল এলো শহরে। সে ফুলের মালায় মালায় নগরীতে ভালোবাসার সুবাস ছড়ালো। আর সন্ধ্যায় ভালোবাসার ঢেউয়েরা এসে প্রাণের মেলার সব কূল যেন ভেঙে দিল।

এদিন অমর একুশে বইমেলা ছিল ভালোবাসার দখলে। ভালোবাসার পরশে পরশে সব জড়তা দূর হয়েছিল মেলার ত্রি-সীমানার। প্রেমের উচ্ছ্বাসে জড়তার বাঁধ ভাঙছিল ক্ষণে ক্ষণে।

রঙ লেগেছিল বসন্ত বরণের দিনে। সেই যে রঙ লাগল, আজ তাতে আরও গাঢ় হলো। ভালোবাসা দিবসে ফাগুনের উদাস হাওয়ায় মন দুলছিল সকাল থেকেই। শীতের রিক্ততা মিলে গিয়ে দখিনা হাওয়ারা এসে দোল খাচ্ছে প্রাণে প্রাণে। আর যখন তরুণীরা খোঁপায় খোঁপায় ফুল গুঁজে দিল, ততক্ষণে প্রেমের ডালাও মেলে ধরলো প্রকৃতি। ফাগুনের এ দিনটি ছিল ঠিক যেন প্রেমের জন্যই।

book

আর প্রেম দিয়েই সেজেছিল বুধবারের বইমেলা। ফাগুন আর ভালোবাসার সাজ ছিল আপাদমস্তক। দুপুরের পর থেকেই গোটা শাহবাগ রূপ নেয় বইমেলায়। মেলায় প্রবেশে দীর্ঘ লাইন। ভালোবাসার হাতে হাত রেখে নতুন বইয়ের গন্ধ নেয়া। আহ! কি আনন্দ মেলাই না দেখা দিল বইয়ের মেলায়।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই বেসামাল হয়ে যায় মেলা প্রাঙ্গণ। তিল ধরার ঠাঁই ছিল না টিএসসি, শাহবাগ, দোয়েল চত্বরেও। জনসমুদ্রে রূপ নেয় বাংলা একাডেমি আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বইও বিক্রি হয়েছে ধুম।

আগারগাঁও কলেজ থেকে বান্ধবীর সঙ্গে মেলায় এসেছেন প্রীতি। উদ্দেশ্য ভালোবাসা দিবসকেও উপভোগ করা। কলেজ ফাঁকি দিয়ে এসে দুপুরে ফুলের দোকানে মালা কিনছিল দরকষাকষি করে। বলেন, বান্ধবীরাই এসেছি। বইমেলা ঘুরব বিকেল পর্যন্ত। বইও কিনব। ঘোরাও হলো। আবার ভালোবাসা দিবসের রঙও দেখা হলো।

book

কথা হয়, অনন্যা প্রকাশনীর প্রকাশক মনিরুল হকের সঙ্গে। মেলা জমে উঠেছে তিনিও বললেন। প্রকাশক মনিরুল বলেন, বেশ ভালো কাটতি হচ্ছে বইয়ের। মূলত বসন্তবরণ এবং ভালোবাসা দিবসের পর থেকেই সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মেলার চিত্রপাট পাল্টে যেতে দেখি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মেলা যেন এখন প্রাণের মেলায় রূপ নিয়েছে।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও এবারের মেলায় সফলতা আনবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের মন ভালো থাকলেই তো কেবল বই বিক্রি হয়।’

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানও এবারের মেলা নিয়ে আশাবাদী। বলেন, শঙ্কা নেই বলেই আমরা মেলা ঘিরে আলো দেখতে পাচ্ছি। ইতোমধ্যেই মেলা জমে উঠেছে। মেলার আঙিনা প্রসারিত করা এবং সৌন্দর্য বর্ধনও পাঠক আকৃষ্টের আরেকটি কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এএসএস/এমআরএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।