প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে ৬৫৩১ পদে নিয়োগের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৬ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মানবন্ধন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় সুপারিশপ্রাপ্ত ৬ হাজার ৫৩১ জন দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। তৃতীয় ধাপের নিয়োগ পরীক্ষায় সুপারিশপ্রাপ্ত হন তারা।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম এবং অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন যেন থামছেই না।’

তারা বলেন, ‘২০২৩ সালের ১৪ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের ২৯ মার্চ। এ ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় গত বছরের ২১ এপ্রিল এবং ১২ জুন মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হননি তারা গত বছরের ৩১ জুন হাইকোর্টে রিট করেন। এরই প্রেক্ষিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। এরই মধ্যে চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে চারটি শুনানির পরও কোনো সুরাহা হয়নি।’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

মানবন্ধনে তারা বলেন, ‘গত বছরের ১১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৫ ডিসেম্বর জেলা শিক্ষা অফিস এবং ৮ ডিসেম্বর স্কুল পদায়ন সম্পর্কিত নিয়োগ আদেশ জারি করা হয়। নিজ নিজ জেলা সিভিল সার্জনে মেডিকেল টেস্ট এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদানও সম্পন্ন করা হয়েছে। অনেক জেলার কিছু কিছু উপজেলায় চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তরা যোগদান পত্রও হাতে পেয়েছেন। চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবার এ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য ভুক্তভোগী এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। সবাই এক প্রকার মানসিক বিপর্যয় ও মানবেতর জীবনযাপন করছি।’

তারা আরও বলেন, ‘আর কত ধৈর্য ধরতে হবে, এভাবে আর কতদিন মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে? এখন আমাদের থাকার কথা নিজ নিজ কর্মস্থলে অথচ আমরা আজ রাস্তায়। এ কেমন প্রহসন আমাদের সঙ্গে? আদালতে শুনানির পরও আমরা কোনো আশানুরূপ ফল পাচ্ছি না। এর দায়ভার আসলে কে নেবে? আমরা এক প্রকার মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই সরকারি চাকরি করতেন, তারা এই প্রাথমিকে যোগদান করার জন্য কর্মরত চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। অনেক পরিবারে হয়তো তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আজ তিনি বেকার হওয়ার কারণে পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। সবাইকে আজ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কিন্তু আমরা কি এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী?’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বক্তারা বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ করেছে। আর এতে করে আমরা ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। এটাই কি আমাদের অপরাধ? চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পারা কতটা কষ্টের তা কি বোঝেন আপনারা? সামাজিক ও পারিপার্শ্বিকভাবে আমাদের কতটা হেয় হতে হচ্ছে? পরিবারের সবার কাছে এখন নিজেদের মূল্যহীন মনে হচ্ছে। নিয়োগপত্র পাওয়ার পরও কর্মস্থলে যোগদান করতে না পেরে আজ রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হচ্ছে। এটা যে কতটা বেদনাদায়ক তা কেবল একজন ভুক্তভোগী বুঝতে পারবে।’

ভুক্তভোগীরা বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেকেরই বয়স শেষ, তাদের আর কোনো চাকরিতে আবেদন করার সুযোগও নেই। তাদের জীবনের দায়ভার আসলে কে নেবে? কর্তৃপক্ষ কেন এর দ্রুত সমাধান করছে না? আমরা কার কাছে এর যথাযথ বিচার চাইবো? ফলাফল প্রকাশের দীর্ঘদিন পার হওয়ার পরও যোগদান করতে পারছি না। আমাদের একটাই দাবি দ্রুত এর সমাধান করে আমাদের যোগদানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। ৬ হাজার ৫৩১ জন কেন নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে? এই মুহূর্তে আমাদের দাবি মেনে নিতে হবে। আমরা অনতিবিলম্বে যোগদান করতে চাই।’

মানববন্ধনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তৃতীয় ধাপের সমন্বয়ক তালুকদার পিয়াস, জেরিন, নওরীন, লিজা আক্তারসহ প্রায় দুই থেকে তিন শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। 

বিজ্ঞাপন

এএএম/ইএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।