বায়োটেক পোশাকশিল্পকেও ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৫ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি। পড়ালেখার জন্য এখনকার দুনিয়ার অপার সম্ভাবনাময় একটি বিষয়। বাংলাদেশে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগে পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার গড়ার বিষয়ে জাগো নিউজ-এর সঙ্গে কথা বলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু রেজা

এই বিষয়টি নিয়ে লেখাপড়া করে শিক্ষার্থীরা কোন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেন?

এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করা ও দেশে বায়োটেকনোলজি শিল্পের প্রসারের প্রচুর ক্ষেত্র আছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা বিচিত্র সব প্রজেক্টে কাজও করছে। যেমন মেডিকেল সেক্টরে অবদান রাখার সুযোগ আছে অনেক। আমরা কার্ডিওলজির ওপর প্রজেক্ট করছি, বিভিন্ন সংক্রামক রোগ নিয়েও আমরা কাজ করছি। খাদ্য প্রসঙ্গে গেলে, কেউ লবণ সহিষ্ণু ধানের জাত তৈরির চেষ্টা করছে, আবার কেউ খাদ্যের স্বাস্থ্যসম্মত প্যাকেজিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছে।

দেশের বড় বড় সমস্যাগুলো সমাধানে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির ছাত্ররা কী করছেন বা করতে পারেন?

শুধু দেশে নয়, বর্তমান বিশ্বে বড় সমস্যাগুলো অন্যতম এনার্জি বা শক্তি। এনার্জি উৎপাদন নিয়েও কাজ হচ্ছে এই সেক্টরে। ইকো-ফ্রেন্ডলি বা পরিবেশবান্ধব ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে পচন বা ডিকম্পোজিশনের মাধ্যমে গ্যাস ও শক্তি উৎপাদন পদ্ধতিটাকে উন্নততর করার চেষ্টা চলছে। এ সমস্ত জিনিসগুলোই আমাদের শিক্ষার্থীরা শেখে। এই বিভাগে আমরা শিক্ষার্থীদের এসব বিষয়ে সম্মক ধারণা দিই যে, কীভাবে তারা এই দেশের জন্য, এই জাতির জন্য কাজ করতে পারে।

এটি তো একটি গবেষণাধর্মী ডিসিপ্লিন। স্নাতক শেষ করেই একজন শিক্ষার্থী কীভাবে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করবেন?

যদিও বাংলাদেশের জব সেক্টরে এখন পর্যন্ত বায়োটেকনোলজির চাহিদা বা এই ইন্ডাস্ট্রিটি শক্তিশালী হয়ে ওঠেনি। তবে গবেষণা ও উচ্চতর শিক্ষায় আগ্রহী ছেলে-মেয়েদের জন্য সারা বিশ্বে অবারিত সুযোগ আছে।

আর দেশে?

দেশে যে সুযোগ একেবারেই নেই, তা নয়। রিসেন্টলি কিছু ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানি তাদের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে বায়োটেকনোলজি ইউনিট খুলছে। যেমন ইনসুলিন। এতদিন এই অতি প্রয়োজনীয় ওষুধটি বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। এখন বায়োটেকনোলজির মাধ্যমে আর্টিফিসিয়াল বা রিকমবিনেন্ট প্রোটিন হিসেবে তৈরি হচ্ছে ইনসুলিন। বাংলাদেশেরই একটা কোম্পানি তৈরি করছে।

দেশে এই বিষয়ের স্নাতকদের জন্য চাকরির সুযোগ তৈরি নিয়ে আপনার কী মত?

কোনো দেশে একজন শিক্ষার্থীর চাকরির সুযোগ তখনই তৈরি হবে, যখন দেশে সেই সংশ্লিষ্ট শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং যোগ্য ওয়ার্কফোর্স তৈরি হবে। সেই ওয়ার্কফোর্স তৈরিতেই অবদান রাখছে আমাদের বিভাগ। এই সেক্টরে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, বায়োটেক সেক্টরে আমরা যদি শিল্পের উন্নয়ন ঘটাতে পারি, তাহলে বাংলাদেশে এই শিল্পের অবস্থান পোশাকশিল্পকেও ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম।

আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কী আশা করে?

কোনো শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট কোনো টেকনিক্যাল বিষয়ে যখন শিক্ষা গ্রহণ করে, তখন তার শিক্ষা কিন্তু শুধু টেকনিকটার ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা বিস্তৃত পরিবেশে পড়ালেখা করছে। তার মানসিকতার উন্নতি হয়, তারা দেশ ও সমাজ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে, এবং এই সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সে কী কী অবদান রাখতে পারে, সেটাও তারা শেখে ও জানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমাদের বিভাগ সর্বদাই চেষ্টা করে আমাদের দেশের সমস্যা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানাতে। এবং তারা কীভাবে নিজের দেশের সমস্যা সমাধানে অবদান রাখতে পারে সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিতে।

বায়োটেকের শিক্ষার্থীদের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?

যে শিক্ষার্থীরা পাশ করে বের হবেন, তারা যেন তাদের জ্ঞান ও মেধা এই দেশের উন্নয়নের কাজে লাগাতে পারেন।

এএমপি/আরএমডি/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।