কেন পড়বেন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি
শিক্ষা ও জ্ঞানে মানুষ প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ হচ্ছে। সেই সঙ্গে আশপাশের পরিবেশকে নিজের অনুকূলে আনার জন্য সেসব জ্ঞানের ব্যবহারও বাড়ছে তার। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বিশ্ব উষ্ণায়ন, খাদ্যসংকটের মতো সমস্যাগুলোর সমাধানও খুঁজতে হচ্ছে বিজ্ঞানীদের। খাদ্য, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, শিল্প সংক্রান্ত নানান প্রতিকূলতা নিয়ে জ্ঞানের যে শাখাগুলো কাজ করছে, সেগুলোর আধুনিকতম এক শাখা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি।
বর্তমানে বিশ্বের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিষয়টি পড়ানো হয়। বাংলাদেশেও পাবলিক ও প্রাইভেট মিলিয়ে এক কুড়ির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে ডিগ্রি দেওয়া হয়।
যেসব কারণে পড়বেন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে সংক্রামক রোগ থেকে শুরু করে ভ্যাকসিন বিষয়ক নানান গবেষণায় অবদান রাখছে জ্ঞানের এই শাখা।
ফার্মাসিউটিক্যালস ও কসমেটিক ইন্ডাস্ট্রিতে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ তৈরি, কৃত্রিম অ্যানজাইম ও হরমোন উৎপাদনের মতো কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এটি। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতির সাহায্যে ব্যাকটেরিয়া ও ইস্টের মতো আণুবীক্ষণিক জীবের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে প্রয়োজনীয় প্রোটিন।
তবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি মূলত কৃষি ক্ষেত্রেই বেশি কাজ করছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নতমানের ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে আর বর্ধিত ফলন ও সেসবের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি খাদ্যসংকট মেটাতে ভূমিকা রাখছে।
কী পড়ানো হয়
অ্যাপ্লায়েড বায়োলজি বা ফলিত জীববিজ্ঞানের পাশাপাশি বিজ্ঞানের এই শাখায় বিশেষ কিছু বিষয় পড়ানো হয়। যেমন, প্লান্ট বায়োটেকনোলজি, অ্যানিমেল বায়োটেকনোলজি, মাইক্রোবায়াল বায়োটেকনোলজি, এনভায়রনমেন্টাল বায়োটেকনোলজি, ফুড বায়োটেকনোলজি, এগ্রিকালচারাল বায়োটেকনোলজি, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োটেকনোলজি, মেডিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিটিক্যালস বায়োটেকনোলজি, প্লান্ট টিস্যু কালচার, অ্যানিমেল সেল টেকনোলজি, বায়োপ্রসেস টেকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যানিমেল সায়েন্স, এগ্রিকালচারাল বোটানি, মাইক্রোবায়োলজি, কেমিস্ট্রি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োস্ট্যাটিসটিকস, মলিকুলার বায়োলজি ও জেনেটিকস প্রভৃতি।
যেহেতু এটি একটি গবেষণার বিষয়, তাই এই বিষয়ে পড়তে এসএসসি ও এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থাকা আবশ্যক। সেইসঙ্গে সাবজেক্টের তালিকায় অবশ্যই বায়োলজি থাকতে হবে।
যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানে এই বিষয়ে পড়ালেখার সুযোগ আছে
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
এছাড়াও বিভিন্ন প্রইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে এ বিষয়ে পড়ালেখা করার সুযোগ আছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের। - আরও পড়ুন:
- বায়োটেক পোশাকশিল্পকেও ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম
ক্যারিয়ার কোথায়?
জেনেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্র সরকারি ও বেসরকারি উভয় দিকেই প্রসারিত। বাংলাদেশের কিছু ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বায়োটেক ড্রাগ উৎপাদন শুরু করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ আছে। তবে যারা বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা ও চাকরির জন্য যেতে আগ্রহী, তাদের জন্য এই বিভাগে পড়াশোনা করা খুবই সময়োপযোগী একটি সিদ্ধান্ত হতে পারে।
- আরও পড়ুন:
- বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয় নির্ধারণ করবেন কীভাবে
- কৃষিবিজ্ঞানে অনার্স, চাকরি কোথায়
- কী আশায় পড়বো আইন?
- ছাত্ররাজনীতি মুক্ত খুবিতে শুরু হচ্ছে ভর্তির আবেদন
- রুয়েটে আবেদন বছরের শুরুতে, পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে
- বুটেক্সে আবেদন শুরু বছরের প্রথম দিন থেকে
- জাবিতে আবেদন ১ জানুয়ারি, পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে
এএমপি/আরএমডি/এএসএম