কৃষিবিজ্ঞানে অনার্স, চাকরি কোথায়
কৃষিবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করলে আপনার সামনে বেশ কিছু দরজা খুলে যাবে। বাংলাদেশের ৯টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা রয়েছে মোট ৩ হাজার ৭শ ১৮টি। প্রতি বছর চাকরির বাজারে যত সংখ্যক গ্র্যাজুয়েট ঢুকছেন, সেই তুলনায় কাজের সুযোগ পর্যাপ্ত। এ জন্য বিষয়টি নিয়ে পড়ার এটিই আদর্শ সময়। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে :
• বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
• শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
• সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট
• বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর
• হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর
• পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালি
• ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম
• বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ
• নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালি
• রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোসহ দেশে ১৫টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পড়ানো হয় কৃষিবিজ্ঞান। ২০২৩-২৪ সালের সার্কুলারে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষায় আবেদন করতে পেরেছিলেন এসএসসি এবং এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জীববিজ্ঞান, পদার্থ, রসায়ন ও গণিত বিষয়সহ উত্তীর্ণরা।
চাকরির সুযোগ
ব্যাচেলর অব এগ্রিকালচার (BAgr) ডিগ্রি অর্জনকারী তরুণরা পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারবেন –
• স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের একাডেমিক রেজাল্ট ভালো করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা।
• বিসিএস জেনারেল ক্যাডারে চাকরির সুযোগ রয়েছে।
• টেকনিকাল ক্যাডার বিসিএস-এ (কৃষি) শুধু কৃষিবিজ্ঞানে গ্র্যাজুয়েটরাই আবেদন করতে পারেন। প্রতি বিসিএসেই কৃষি ক্যাডারে পদ থাকে; সফল প্রার্থীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে ‘কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার’ পদে দায়িত্ব পান।
• বিসিএস থেকে বিভিন্ন সরকারি কলেজে কৃষি বিষয়ে প্রভাষক পদে যোগ দেওয়ার সুযোগ আছে।
• কৃষিতে পড়াশোনা করে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেমন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি
গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের মতো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ আছে।
• এ ছাড়া বাংলাদেশের সব সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংকে কৃষিবিদরা চাকরি করতে পারেন।
• কৃষি নিয়ে পড়াশোনা করলে দেশের অনেক কীটনাশক ও বীজ কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ আছে।
• সুযোগ আছে সুশিক্ষিতি কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার।
• কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন এনজিওতে চাকরির ক্ষেত্রে কৃষিবিদদের অগ্রাধিকার থাকে।
• এনএসটি ফেলোশিপ এবং এগ্রিকালচারাল ইমপর্টেন্ট পারসন হওয়ারও সুযোগ আছে কৃষিবিদদের।
• কৃষি বিষয়ে পড়াশোনা করে স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ পাওয়া যায়। স্কলারশিপ নিয়ে বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী প্রতিবছর অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মানি, কানাডা, মালয়েশিয়া, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন।
দেশে প্রতিনিয়ত আবাদি জমি কমে যাওয়া এবং জনসংখ্যা বাড়তে থাকায় বিভিন্ন ফসলের নতুন জাত এবং আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তির প্রয়োজন দিন দিন বাড়ছে। এসব প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণে কৃষিবিদদের প্রয়োজনীয়তা অনেক। মানবজাতির টিকে থাকার লড়াইয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলা করে প্রতি ইঞ্চি জমির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে যারা অবদান রাখতে পারেন, তারা হলেন কৃষক ও কৃষিবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা।
এএমপি/আরএমডি/এএসএম