স্কুলে ভর্তিতে এবার বাতিল হচ্ছে গণভবন ও কলোনি কোটা
সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। এবারও লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই করা হবে। তবে বহাল থাকছে নানা ধরনের কোটা। হিসাব অনুযায়ী ৬৮ শতাংশই কোটা। এসব কোটার সুযোগ নিয়ে ভর্তিতে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
এবার প্রকাশিত ভর্তি নীতিমালায় মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। নাতি-নাতনি কোটা বাদ দিয়ে শুধু মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটায় ভর্তির সুযোগ রাখা হয়েছে।
নীতিমালায় আর কোনো পরিবর্তন না এলেও এবার নতুন করে আরও কিছু কোটা প্রথা বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেগুলো হলো গণভবন কোটা এবং কলোনি কোটা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) একজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত গণভবন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন গণভবনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানরা শতভাগ কোটা সুবিধায় ভর্তির সুযোগ পেতো। এবার সেই কোটা বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
রাজধানীর নামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে মতিঝিল এজিবি কলোনি কোটা রয়েছে। কলোনিতে বসবাস করা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ছেলেমেয়েরা অলিখিতভাবে কোটা সুবিধা পেয়ে আসছে। সেই কোটাও এবার বাতিল করা হবে।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ সূত্র জানায়, কলোনি কোটাতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। স্কুলের মতিঝিল শাখায় প্রভাতি ও দিবা শিফটে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণিতে আসন বরাদ্দ রাখা হয় এ কোটায়। মতিঝিলে সরকারি কলোনিতে বসবাসরতরা তাদের সন্তানদের জন্য এ কোটায় আবেদন করতে পারেন।
অভিভাবকরা বলছেন, ইচ্ছামতো শিক্ষার্থী ভর্তি করতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা এ কোটা চালু রেখেছেন। প্রতিবছর কলোনি কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তিকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের বাণিজ্য হয়। এবারও ভর্তির মৌসুম ঘনিয়ে আসায় যথারীতি জমে উঠছে বাণিজ্য।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘এসব কোটায় ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ পুরোনো। এগুলো চলতে দেওয়া যাবে না। অন্যান্য স্কুলের মতোই এগুলোতেও শুধু লটারির মাধ্যমেই ভর্তিচ্ছু নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের কথা শিক্ষা অধিদপ্তর ও টেলিটককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে। এ প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। আবেদন শেষে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই ও ভর্তি করানো হবে।
মাউশির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এবার ভর্তির আবেদন ফি ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টেলিটকের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করতে হবে।
এএএইচ/এসআর