দক্ষ শিক্ষকের বড় সংকট : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষা ব্যবস্থায় দক্ষ শিক্ষক সবচেয়ে বড় সংকট বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক। সরকার বর্তমানে দক্ষ শিক্ষক গড়ে তুলতে উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকসহ অন্যন্যা দাতা সংস্থার সহায়তায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে।
রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘অ্যাডিশনাল ফাইন্যান্সিং লাউঞ্জিং ওয়ার্কসপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, সরকারি ৪৯টি পলিটেনিক্যাল ইনস্টিটিউটে বর্তমানে প্রতি বছরে ৩১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে। পরবর্তী বছরে আরো ২৫ হাজার যোগ হবে। বছরে মোট ৫৬ হাজার শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
এসময় বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশ মানবসম্পদ উন্নয়নে বেশ উন্নতি সাধন করেছে। বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষায়।
বাংলাদেশ ইতিমধ্যে নিম্নমধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। উন্নত দেশে পরিণত হতে চাচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে এটা বড় বিষয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, এই অর্থায়নে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রশিক্ষণে সহায়তা করবে। বিশ্বে বাংলাদেশের শ্রমশক্তিকে আরো প্রতিযোগী করে ভালো মজুরিতে কাজের সুযোগ করে দেবে। এই অর্থায়ন বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের কারিগরি ও দক্ষতা জ্ঞানে সমৃদ্ধ করবে।
ইতিমধ্যে এ প্রকল্পের অধীনে ১ লাখ ১০ হাজার দরিদ্র শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়। এর বাইরে প্রায় ৭৭ হাজার যুবক ইলেক্ট্রিক্যাল, অটোমোবাইল, তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৬ মাসের কারিগরি প্রশিক্ষণ পেয়েছে। প্রশিক্ষণ নেয়ার ৬ মাসের মধ্যে ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ পেয়েছে।
‘স্কিল অ্যান্ড ট্রেনিং ইনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান। তিনি জানান, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশের বয়সই ২৪ বছরের নিচে। প্রতিবছর ১৩ লাখ জনসংখ্যা শ্রমবাজারে প্রবেশ উপযোগী হচ্ছে। এই যুব সমাজকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতির গতি সচল রাখতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। এ জন্য স্টেপ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ স্টেপ প্রকল্পের আওতায় অধিক সংখ্যক সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে এগুলোর শ্রেণিকক্ষ-গবেষণাগার উন্নয়ন করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া বা পাস করা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ ও চাকরির সুযোগ করে দেবে বলে জানান এই প্রকল্প পরিচালক।
শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেনর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ডা. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম সামসুন্নাহার প্রমুখ।
এমএ/বিএ/এমএস