বাদ পড়া প্রধান শিক্ষকদের গেজেটে অন্তর্ভুক্তির দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৪১ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রধান শিক্ষক পদে নিজেদের অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন গেজেট থেকে বাদ পড়া প্রধান শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

জাতীয়করণ করা প্রাথমিক বিদ্যালয় গেজেট থেকে বাদ পড়া প্রধান শিক্ষক ঐক্য জোটের আহ্বায়ক খ ম হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন ঐক্য জোটের সদস্য সচিব খায়রুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জোটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি গোলাম মোস্তফা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৩ সালে দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ লাখ ৮ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করা হয়। এরপর প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ের জন্য একজন প্রধান শিক্ষক ও চারজন সহকারী শিক্ষকের পদ সৃষ্টির ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই ঘোষণা অনুসারে ২৬ হাজার ১৯৩টি বিদ্যালয়ের জন্য ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হওয়ার কথা থাকলেও প্রথম ধাপের ২২ হাজার ৯৮১ জন শিক্ষকদের মধ্যে কিছু সংখ্যক প্রধান শিক্ষককে গেজেটে অর্ন্তভুক্ত করা হয়। কিন্তু প্রথম ধাপের বাকি শিক্ষকসহ দ্বিতীয় ধাপের ২ হাজার ২৫২টি এবং তৃতীয় ধাপের ৯৬০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের প্রধান শিক্ষক পদ স্থগিত রেখে ‘সহকারী শিক্ষক’ হিসেবে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

বাদ পড়া প্রধান শিক্ষকদের গেজেটে অন্তর্ভুক্তির দাবি

জাতীয়করণের আগে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক যিনি যে পদে কর্মরত ছিলেন, সেই শিক্ষককে সেই পদেই আত্তীকরণের পর অবশিষ্ট সৃষ্ট শূন্যপদ নতুন নিয়োগের মাধ্যমে পূরণের কথা বলা হয়। প্রথম ধাপে অবশিষ্ট কমিউনিটি বিদ্যালয় ও রেজিস্টার্ড বিদ্যালয়, দ্বিতীয় ধাপে ১ হাজার ৭১৯টি বিদ্যালয়, তৃতীয় ধাপে ৯৬০টি বিদ্যালয়ের শিক্ষক গেজেটের সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ চেয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উপজেলা শিক্ষা অফিস, জেলা শিক্ষা অফিসে প্রধান শিক্ষক চেয়ে তথ্য পাঠায় ২০১৪ সালে। এর মাধ্যমে জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের কর্মরত প্রধান শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিদ্যালয়-১ শাখায় তথ্য পাঠায়। কিন্তু সেই প্রধান শিক্ষকের পদ বাতিল করে তাদের সহকারী শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে এই শিক্ষকদের সহকারী হিসেবে গেজেট প্রকাশ হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের পর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা গেজেট, প্রজ্ঞাপন, নীতিমালা ও পরিপত্র থাকা সত্ত্বেও বিদ্যালয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মরত ‘প্রধান শিক্ষক’ যারা ছিলেন তাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ‘সহকারী শিক্ষক’ হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে। এতে কর্মরত প্রধান শিক্ষকরা বৈষম্যর শিকার হয়েছেন।

শিক্ষকরা বলেন, আমরা জাতীয়করণের আগে জারিকৃত গেজেট ও পরিপত্রের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এসএমসি কর্তৃক প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়ে মেধা, শ্রম ও দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার সঙ্গে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। তবে অদৃশ্য ইশারার কারণে প্রধান শিক্ষক পদে গেজেট প্রকাশ হয়নি। প্রধান শিক্ষক পদে গেজেটভুক্ত না হওয়ায় সংক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষকরা আদালতের দ্বারস্থ হন এবং আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেন। তাই ‘প্রধান শিক্ষক’ পদে গেজেট পাওয়া আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গেজেট থেকে বাদপড়া প্রধান শিক্ষক নেতা হুমায়ুন কনির, মো. গোলাম মোস্তফা, আতিকুর রহমান খোকন, মনির হোসেন, শহিদুল ইসলাম, এমদাদ হোসেন, জিয়াউদ্দিন বাদল, মিনারুজ্জামান মিন্টু, মো. আবু হানিফা, মো. হেমায়েত, মো. দেলোয়ার হোসেন, আশরাফুল হোসেন, মালিক মামুন ও ২০২৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক মো. এরফান আলী প্রমুখ।

এসআরএস/এমআইএইচএস/জিকেএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।